Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

Pegasus Snooping: ‘বড়দা’ নজর রাখছেন! আড়ি পাতা-কাণ্ডে সংসদের বাইরে প্রতিবাদ তৃণমূলের

মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদী-শাহের বিরুদ্ধে ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ তুলেছিলেন আইএএস অফিসার প্রদীপ শর্মা। তৃণমূল মঙ্গলবার সে প্রসঙ্গও তুলে ধরে।

সংসদের বাইরে প্রতিবাদে তৃমমূল সাংসদরা।

সংসদের বাইরে প্রতিবাদে তৃমমূল সাংসদরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২১ ১৬:০৭
Share: Save:

ভোটের বাজারে ‘খেলা হবে’ স্লোগানে মাতিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। জাতীয় রাজনীতিতেও নতুন স্লোগান নিয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ফোনে আড়িপাতার অভিযোগে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে কটাক্ষ করতে সুকৌশলে ‘বড়দা’ (ইংরেজিতে ‘বিগ ব্রাদার’), ‘হানাদার অধিপতি’-র মতো শব্দ বেছে নিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদেরা।

ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে দেশে ৩০০-র বেশি ফোন নম্বরে আড়িপাতার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। সেই তালিকায় ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী এবং তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও উঠে এসেছে। তা নিয়ে সংসদের বাদল অধিবেশনে ঝড় বইছে। বিক্ষোভ, স্লোগান এবং হট্টগোলে মঙ্গলবার অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেও গমগম করছিল সংসদ ভবন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন মাঝপথে মুলতবি রাখতে হয়।

অধিবেশন মুলতবি হওয়ার অবকাশে প্রতিবাদকে সংসদ ভবনের বাইরে নিয়ে আসেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে সম্ভবত তা পরিকল্পিতই ছিল। কারণ, সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশন মুলতবি হতেই বা ইরে প্ল্যাকার্ড হাতে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন সুখেন্দুশেখর রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্ররা। যোগ দেন অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, মালা রায়, দোলা সেন, শান্তনু সেন, আবির বিশ্বাস, নাদিমুল হক, খলিলুর রহমান এবং প্রতিমা মণ্ডলও। তাঁদের কারও হাতে ছিল ‘নজরদারি বন্ধ হোক’ লেখা পোস্টার। কারও হাতে ‘বড়দা নজর রাখছেন’, কারও হাতে ‘ডিজিটাল হানার অধিপতি’ লেখা পোস্টার।

মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর এবং অমিত শাহের বিরুদ্ধে ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ তুলেছিলেন আইএএস অফিসার প্রদীপ শর্মা। তৃণমূল নেতৃত্ব মঙ্গলবার সে প্রসঙ্গও তুলে ধরেছেন। ‘গুজরাতের আড়ি পাতার মডেল এখন জাতীয় স্তরে’ লেখা প্ল্যাকার্ড ধরে বিক্ষোভে অংশ নেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া। তবে এ সবের মধ্যে ‘বড়দা’ শব্দটি তুলনামূলক ভাবে বেশি নজর কেড়েছে। প্ল্যাকার্ডে অবশ্য ইংরেজি ‘বিগ ব্রাদার’ শব্দবন্ধই ছিল। তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল বিখ্যাত প্রবাদ ‘বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং’। নাগরিকের উপর রাষ্ট্রযন্ত্রের নজরদারি, নিয়ন্ত্রণ এবং দমন বোঝাতে ইংরেজিতে এই শব্দবন্ধটি প্রচলিত। সেখানে ‘স্বৈরাচারী’ সরকারকে ‘বিগ ব্রাদার’ বলে উল্লেখ করা হয়। ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক তথা সমালোচক জর্জ অরওয়েল তাঁর বই ‘১৯৮৪’-তে এই শব্দবন্ধটি ব্যবহার করেন। তাতে ‘স্বৈরাচারী’ সরকারের বিরুদ্ধে এক যুবকের বিদ্রোহ ঘোষণার গল্প বুনেছিলেন তিনি। অরওয়েল নিজেও পুলিশি নজরদারিতে ছিলেন। তাই ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে বার বার তাঁর ব্যবহৃত শব্দবন্ধ উঠে আসে।

প্রসঙ্গত, বিনোদন জগতেও জায়গা করে নিয়েছে অরওয়েলের এই ভাবনা। তারকাদের এক জায়গায় বন্দি করে রেখে, আড়াল থেকে তাঁদের উপর নজরদারি চালানো, ইচ্ছে মতো হুকুম করার যে ব্রিটিশ রিয়্যালিটি শো, তা-ও ‘বিগ ব্রাদার’ নামেই পরিচিত। যার ভারতীয় সংস্করণ হল ‘বিগ বস্’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE