আমার নামে অভিযোগ করবি তুই? চিৎকার করে তাঁর পুত্রের দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন পড়শি যুবক মন্টি। তার পরই ধাক্কা মারেন। রাস্তায় পড়ে যান। পুত্রের সঙ্গে পার্কিং নিয়ে কী ঘটেছিল, এক সংবাদমাধ্যমে সে কথাই জানালেন বিজ্ঞানী অভিষেক স্বর্ণকারের মা মালতী দেবী।
পুত্রকে হারিয়ে মুহ্যমান মালতী দেবীর অভিযোগ, বাইক পার্কিং নিয়ে প্রতি দিন অভিষেক এবং তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা করতেন মন্টি এবং তাঁর পরিবার। মঙ্গলবার রাতে কর্মস্থল থেকে ফিরে বাড়ির সামনে বাইক রাখেন অভিষেক। একটু পরেই সেখানে মন্টি আসেন। চিৎকার করে অভিষেককে ডাকতে থাকেন। মালতী দেবী বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে মন্টি বলে, এখনই বাইক সরা এখান থেকে, না হলে আগুন জ্বালিয়ে দেব। এ কথা শুনে আমিও পাল্টা বলেছিলাম, তোমাদের সামনেই রয়েছে বাইক, দাও জ্বালিয়ে।’’
মালতী দেবীর দাবি, মন্টি যখন হুমকি দিচ্ছিলেন, সেটা শুনে অভিষেকের বাবা নীচে নেমে মন্টিদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। অভিষেকও রেগে গিয়ে তাঁর বাবার পিছনে পিছনে যান। তার পর অভিষেক বাইকটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান এবং মন্টিদের বোঝানোর চেষ্টা করেন যেখানে বাইকটি পার্ক করতে বলছেন তাঁরা, সেখানে পার্ক করার কত সমস্যা। এর পরই অভিষেক মন্টিকে হুঁশিয়ারি দেন যে, তাঁদের বিরুদ্ধে অনবরত হেনস্থা করার অভিযোগ জানাবেন। এ কথা শুনেই মন্টি চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘‘আমাদের নামে অভিযোগ জানাবি?’’ মালতী দেবীর অভিযোগ, এ কথা বলতে বলতে অভিষেককে ধাক্কা মারতে থাকেন মন্টি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলে রাস্তায় পড়ে যায়। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু ডাক্তাররা বলেন মৃত্যু হয়েছে অভিষেকের।’’
তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে, এই অভিযোগ কেন পুলিশের কাছে করেননি? এ প্রসঙ্গে ওই সংবাদমাধ্যমকে মালতী দেবী বলেন, ‘‘আমরা ভাড়া থাকি। অশান্তি হোক, এটা চাইনি কখনও। তাই ওরা হেনস্থা করলেও কোনও সাড়াশব্দ দিইনি। প্রতি দিন বাইক সরাতে বাধ্য করানো হত অভিষেককে। যেখানে বাইক রাখত আমার ছেলে, সেটা মন্টিদেরও জায়গা নয়। তার পরেও ওরা আপত্তি জানাত।’’
মঙ্গলবার বাইক পার্ক করা নিয়ে বিজ্ঞানী অভিষেকের সঙ্গে বচসা হয় মন্টির। অভিযোগ, অভিষেককে ধাক্কা মারেন মন্টি। রাস্তায় পড়ে যান তিনি। তার পরই হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর)-এর প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট ছিলেন। আদতে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের বাসিন্দা অভিষেক। মোহালিতে আসার আগে সুইৎজ়ারল্যান্ডে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি আইআইএসইআর-এ যোগ দিয়েছিলেন। বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে মোহালির সেক্টর ২৯-এ বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন।