বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে আলোচনা চলছেই। তার মাঝে আবার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসাবে দেখানো যাবে এমন নথির তালিকা থেকে বাদ পড়েছে আধার কার্ড! এই আবহে আরও বিতর্ক উস্কে দিয়ে সরকারি কর্তা জানালেন, আধার প্রধান পরিচয়পত্র নয়।
ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (ইউআইডিএআই) সিইও ভুবনেশ কুমার জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে আধারকে কখনওই প্রধান পরিচয়পত্র হিসাবে ধরা হবে না। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ ওই সংস্থা ভারতের নাগরিকদের জন্য আধার কার্ড তৈরি করে, যা এত দিন ভারতীয়দের অন্যতম প্রধান পরিচয়পত্র বলেই মনে করা হত। সাম্প্রতিক অতীতে অন্যান্য পরিচয়পত্রের সঙ্গে আধার সংযুক্ত (‘লিঙ্ক’) করা নিয়েও কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি। কিন্তু ভুবনেশের যুক্তি, ইদানীং ভুয়ো আধার কার্ডের রমরমা দেখা দিয়েছে। অনেকে ‘ফোটোশপ’ ব্যবহার করে আধার জালিয়াতি করছেন। সে কারণেই আধারকে জন্মতারিখ বা জন্মস্থানের প্রমাণ হিসাবে ধরা যাবে না।
আরও পড়ুন:
-
তিন বছর পর গুজরাতে আবার সেতু বিপর্যয়! বডোদরায় পর পর গাড়ি পড়ল নদীতে! মৃত অন্তত ন’জন, আহত অনেকে
-
‘হাত দিয়ে কাদামাটি সরিয়েছি, শুধু জানতাম, বেঁচে ফিরতে হবে’! হিমাচলে ধসের নীচে পাঁচ ঘণ্টা আটকে থাকার পর উদ্ধার তরুণী
-
লোকসভা না রাজ্যসভা, নগদকাণ্ডে অভিযুক্ত বিচারপতিকে অপসারণ কোন পথে? বাদল অধিবেশনের আগে জল্পনা
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সংস্থার প্রধান আরও দাবি করেছেন, জাল আধার রুখতে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপও করছেন তাঁরা। প্রতিটি আধার কার্ডকে কিউআর কোডের মাধ্যমে সুরক্ষিত করার চেষ্টা চলছে। ভুবনেশ বলেন, ‘‘আর কিছু দিনের মধ্যেই আধার অ্যাপ তৈরি হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে অ্যাপ তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।” এই অ্যাপ এলে এখন থেকে আর সর্বত্র আধার কার্ডের ‘হার্ড কপি’ দেখানোর দরকার পড়বে না।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে সেখানে ভোটার তালিকার বিশেষ ও নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বলা হয়েছে, যাঁদের নাম ভোটার তালিকায় আছে, তাঁদেরও নির্দিষ্ট নথি দেখাতে হবে। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০০৩-এর ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বাকিদের মধ্যে যাঁদের জন্ম ১৯৮৭ সালের আগে, তাঁদের সকলকেই জন্মের প্রমাণপত্র দিতে হবে। ১৯৮৭ থেকে ২০০৪-এর মধ্যে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের নিজেদের পাশাপাশি বাবা-মায়ের মধ্যে যে কোনও এক জনের জন্মের প্রমাণপত্রও দিতে হবে। ২০০৪-এর পরে জন্ম হলে দেখাতে হবে নিজের ও বাবা-মায়ের দু’জনেরই জন্মের প্রমাণপত্র। তবে আধার কার্ড বা রেশন কার্ডের মতো সহজলভ্য নথি এ ক্ষেত্রে গণ্য হবে না। দেখাতে হবে জন্মের শংসাপত্র! এর পরেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। কারণ, এই নিয়ম কার্যকর হলে বহু নাগরিকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।