ফের সেতু ভেঙে পড়ল গুজরাতে। বুধবার সকালে বডোদরায় মহিসাগর নদীর উপর ভেঙে পড়ে গম্ভীরা সেতু। সেই সময়ে সেতুর উপরে থাকা অন্তত চারটি গাড়ি নদীতে পড়ে যায় বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সরকারি সূত্রে খবর, বুধবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মধ্য গুজরাত এবং সৌরাষ্ট্রের মাঝামাঝি পাডরা-মুজপুর এলাকায় মহিসাগর নদীর উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে গম্ভীরা সেতু। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ‘‘ওই সময় দু’টি ট্রাক, একটি ভ্যান এবং একটি গাড়ি সেতু দিয়ে যাচ্ছিল। সেতুর একটি অংশ আচমকাই ভেঙে পড়ে। ওই অংশে থাকা গাড়িগুলিও উপর থেকে সোজা নদীতে গিয়ে পড়ে।’’ খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় উদ্ধারকারী দল। এখনও পর্যন্ত চার জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। দেহ মিলেছে ন’জনের। নয় জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বডোদরার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রোহন আনন্দ। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
সকালেই আনন্দ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মিতেশ পটেল বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে চার জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। বডোদরা এবং আনন্দ, দুই জেলার প্রশাসনিক কর্তারা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন।’’ গুজরাতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। আহতেরা পাবেন ৫০ হাজার টাকা। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল। কী ভাবে সেতুটি ভেঙে পড়ল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে ২০২২ সালে এই রাজ্যেরই মোরবীতে সেতু ভেঙে পড়ে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এর আগে সংস্কারের জন্য প্রায় দু’দশক ধরে বন্ধ ছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া ওই সেতু। পুনর্নির্মাণের পর ২০২২ সালের অক্টোবরে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় ঝুলন্ত সেতুটি। খুলে দেওয়ার চার দিনের মাথায় সেতুটি ভেঙে পড়ে। ওই দিন মচ্ছু নদীর উপরের ঝুলন্ত সেতুটি দেখতে প্রচুর মানুষ হাজির হয়েছিলেন। শুধুমাত্র ভেঙে পড়ার দিনেই নাকি টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৩ হাজারেরও বেশি! দুর্ঘটনার সময়েও সেতুর উপর ছিলেন ৩০০ জন। তার মধ্যে ১৩৫ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হন আরও অনেকে। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সেতুর সংস্কারে খামতি ছিল। অভিযোগের আঙুল ওঠে নির্মাণকারী সংস্থা এবং রাজ্য সরকারের দিকেও। বুধবারের সেতু বিপর্যয় ফেরাচ্ছে তিন বছর আগের সেই ঘটনার স্মৃতি।