চলতি বছরের মধ্যে আমেরিকার সঙ্গে সুবিধাজনক শর্তে বাণিজ্যচুক্তি গোটানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে ঘোর সংশয়ে রয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তারা আলোচনা এবং দর কষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজ়া শান্তি প্রস্তাবকে বারবার সমর্থন জানাচ্ছেন প্যালেস্টাইন সংক্রান্ত ভারতীয় অবস্থান থেকে কিছুটা সরে গিয়েও। কারণ সহজবোধ্য। বাণিজ্যচুক্তি বড়ই বালাই। কিন্তু এত করেও শেষ পর্যন্ত নৌকো ঘাটে নিয়ে আসা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এক কূটনৈতিক কর্তার মতে, ট্রাম্প সরকারের কোনও নির্দিষ্ট ভারত নীতি যে নেই তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তাঁর স্বার্থ চরিতার্থ করতে ভারতকে কাজে লাগাচ্ছেন মাত্র। একই ভাবে তিনি কাজে লাগাচ্ছেন পাকিস্তানকে, অন্য প্রসঙ্গে। কোনও বহুপাক্ষিকতার কূটনীতিতেও আস্থা নেই তাঁর। তাই ভারত নিঃশব্দে নিজেদের কৌশলগত স্বাধীনতার দিকটিকে বেশি করে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। সূত্রে প্রকাশ, বছরের শেষে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতে এলে জ্বালানি ক্ষেত্রের পাশাপাশি পরিবেশ, প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, পরিকাঠামো, মহাকাশ, প্রতিরক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বড় মাপের সমন্বয় ও সমঝোতা চুক্তির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে সাউথ ব্লক।
গত রাতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্যে একইসঙ্গে আমেরিকার নীতি নিয়ে হতাশা ও ভারতের কিছু ক্ষেত্রে (কৃষি ও ডেয়ারি ক্ষেত্রের দরজা ওয়াশিংটনের জন্য হাট করে খুলে না দেওয়ার প্রশ্নে) অনমনীয়তা একই সঙ্গে প্রকাশ পেয়েছে। বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, “আমাদের সঙ্গে আমেরিকার কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা এখনও বাণিজ্য আলোচনায় সমঝোতায় পৌঁছোতে পারিনি। ফলে আমাদের উপর শুল্ক চাপানো হয়েছে। আমরা প্রকাশ্যেবলেছি এটি অন্যায্য।” এর পরে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আমেরিকার অস্বস্তির কথাও তুলে ধরেন তিনি। রাশিয়া থেকেভারত তেল কেনার কারণে দিল্লির উপর যে শুল্ক চাপানো হয়েছে, তা-ও ‘অন্যায্য’ বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।
সূত্রের খবর, মস্কো থেকে নয়াদিল্লির অশোধিত তেল ও গ্যাস কেনার বিষয়টিকে ট্রাম্প এবং তাঁর দল, ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। অর্থাৎ রাশিয়া থেকে তেল আমদানির বিষয়টিকে বাণিজ্য চুক্তিতে দরকষাকষির অন্যতম অস্ত্র হিসাবে কাজে লাগাচ্ছে আমেরিকা। যদিও এই নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রক প্রকাশ্যে কিছু বলতে চায়নি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)