কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। —ফাইল চিত্র।
নিট পরীক্ষার্থীদের নিজের বাসভবনে ডেকে আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার জন্য যাতে পাঠপ্রক্রিয়ায় সময় নষ্ট না হয়, সরকার তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর আশ্বাস, কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় দেরি হলেও প্রাতিষ্ঠানিক ক্যালেন্ডারে তার প্রভাব পড়বে না।
নিট সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। কাউন্সেলিংও তাই আটকে রয়েছে। চলতি বছরের নিট বাতিলের দাবি উঠেছে। আবার পরীক্ষার আয়োজনের আবেদন নিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। তার মাঝেই বৃহস্পতিবার কয়েক জন নিট পরীক্ষার্থীকে নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। তাঁদের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলেন তিনি। পরীক্ষা সংক্রান্ত উদ্বেগ, সমস্যার কথা শোনেন ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকেই। সেখানেই পড়ুয়াদের তিনি আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর।
সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পরীক্ষা সংক্রান্ত নানা উদ্বেগের কথা জানান পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের প্রধান উদ্বেগ ছিল পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে। এ ছাড়া, আদালতের মামলার কারণে কাউন্সেলিং আটকে থাকায় বছরের পাঠপ্রক্রিয়া শুরু হতেও দেরি হবে। সে ক্ষেত্রে ডাক্তারির প্রথম বর্ষের পাঠ্যক্রম শেষ করার ক্ষেত্রেও সময় কম মিলতে পারে বলে আশঙ্কা পড়ুয়াদের। সে সব উদ্বেগই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানান তাঁরা।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, ধর্মেন্দ্র তাঁদের উদ্বেগের কথা মন দিয়ে শুনেছেন। সমস্যার কথা জানানোর সুযোগ দিয়েছেন। মন খুলে কথা বলতে পেরেছেন তাঁরা। এ ছাড়া, পরীক্ষা প্রক্রিয়া কী ভাবে উন্নত করা যায়, সেই সংক্রান্ত পরামর্শও শুনেছেন ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকেই। শুধু তা-ই নয়, পড়ুয়াদের কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে, এর পর থেকে পরীক্ষা পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে। সরকার তা নিশ্চিত করবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে এক পড়ুয়া জানিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই দ্বিতীয় বার পরীক্ষা দিতে চান না। অবিলম্বে কাউন্সেলিং হোক, এটাই তাঁদের দাবি। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। এ প্রসঙ্গে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্টই।
এ বছর ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের ফল প্রকাশিত হয়েছিল গত ৪ জুন, লোকসভা ভোটের ফলঘোষণার দিনেই। দেখা যায় ৬৭ জন একসঙ্গে সম্পূর্ণ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান পেয়েছেন। এ ছাড়া, ওই ৬৭ জনের মধ্যে অনেকে একই কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন বলেও জানা যায়। পরীক্ষায় কয়েক জন এমন নম্বর পান, যা সাধারণ হিসাবের বাইরে। এর পরেই নিটের ফল নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। শুরু হয় বিতর্ক। অভিযোগ, দেশের কিছু কিছু অংশে পরীক্ষার আগেই নিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। এ প্রসঙ্গে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তাঁরা টাকার বিনিময়ে নিটের প্রশ্ন বিক্রির কথা স্বীকার করে নেন। এর পর বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার প্রবেশিকা পরীক্ষা নেট আয়োজিত হয়েছিল। পরীক্ষার পরের দিনই তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার স্বীকার করে নেয়, নিট, নেটের আয়োজন সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ-তে পদ্ধতিগত গলদ রয়েছে। নেটের প্রশ্নও পরীক্ষার আগের দিন ডার্কওয়েবে ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলে প্রমাণ পায় সরকার। তার পরেই পরীক্ষা বাতিল করা হয়। এর পর নিটও বাতিলের দাবি ওঠে। মামলা যায় সুপ্রিম কোর্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy