মাও অধ্যুষিত রাজ্যগুলিকে নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে গত সপ্তাহে এক যৌথ অভিযানে ৩১ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। ছত্তীসগঢ়ে এ যাবৎ কালে একটি নির্দিষ্ট অভিযানে এত জন মাওবাদীর একসঙ্গে মৃত্যু এই প্রথম। বস্তারের জঙ্গলে এই অভিযান ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী দমনের দিক থেকে অন্যতম বড় সাফল্য বলেই ব্যাখ্যা করছেন কেউ কেউ। তবে সেই অভিযানের পরেও কি নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক? সোমবারই মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী এবং শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে মাও-হিংসা সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে ছত্তীসগঢ় ছাড়াও ছিল ওড়িশা, তেলঙ্গানা, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ।
এনডিএ সরকার তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম মাও-হিংসা পর্যালোচনা বৈঠকে বসলেন শাহ। এর আগে শেষ বার এই ধরনের বৈঠক হয়েছিল গত বছরের ৬ অক্টোবর। ঠিক এক বছর পর পুনরায় পর্যালোচনা বৈঠক হল। শনিবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতি জানানো হয়েছে, ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে মাও-হিংসা নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, দেশের ৩৮টি জেলায় এখনও সক্রিয় মাওবাদীরা। বস্তারে এক সঙ্গে ৩১ জন মাওবাদীর মৃত্যু আবারও বুঝিয়ে দিল, সেই এলাকায় মাওবাদীদের গতিবিধির কথা।
সোমবার পর্যালোচনা বৈঠকে শাহ নিজেই জানিয়েছেন, গত লোকসভা ভোটে মাও অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়েছে। তার পরেও মাওবাদী কার্যকলাপের ঘটনাগুলি কি চিন্তায় রাখছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে? কারণ, চলতি বছরের এপ্রিলেও ছত্তীসগঢ়ের কাঙ্কের জেলায় এক অভিযানে ২৯ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছিল। এই মৃত্যুগুলি এক দিকে যেমন পুলিশের সাফল্য, তেমনই সমান ভাবে ইঙ্গিত করে এলাকায় মাওবাদী গতিনিধির কথা।
যদিও আধিকারিকেরা জানাচ্ছে, ২০১০ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে হিংসা ৭২ শতাংশ কমেছে। মৃত্যুও কমেছে প্রায় ৮৬ শতাংশ। পিটিআইয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ, চলতি বছরে ২৩০ জনেরও বেশি মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৮১২ জন। আত্মসমর্পণ করেছেন ৭২৩ জন মাওবাদী। বৈঠকে আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, মাওবাদীরা বর্তমানে তাদের শেষ লড়াই লড়ছে। কিন্তু তার পরেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছে না শাহ। মাওবাদী দমন অভিযান এবং মাও অধ্যুষিত এলাকাগুলির উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে সোমবারের বৈঠকে। মাওবাদ সম্পর্কিত সমস্যাকেই উন্নয়নের পথে সব চেয়ে বড় বাধা বলে বৈঠকে জানিয়েছেন শাহ। তাঁর মতে, মাওবাদীরা হলেন সবথেকে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী। মাওবাদীদের কারণেই প্রায় আট কোটি দেশবাসী উন্নয়নের থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে মত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। মাওবাদ দমনে রাজ্য সরকারগুলিকে প্রয়োজনীয় সব রকম সাহায্যেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy