কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর নতুন মন্তব্য ঘিরে ফের জলঘোলা হল রাজনীতির ময়দানে। নাগপুরে শিক্ষক, অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীদের এক অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসে প্রকৃত নেতার আচরণ কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে নিজের মতামত জানান মন্ত্রী। বিরোধীদের একাংশের মতে, ওই সভায় প্রকারান্তরে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকেই নিশানা করেছেন গডকড়ী।
মন্ত্রী বলেন, অর্থ, ক্ষমতা, জ্ঞান বা সৌন্দর্য— এগুলোর অধিকারী হলে অনেকেই অহংকারী হয়ে ওঠেন। নিজেকে সেরা ভাবতে শুরু করেন। তাঁদের ইতিবাচক মনোভাব পরিণত হয় শাসনে। গডকড়ী বলেছেন, ‘‘নেতারাও এই অহং-এর ফাঁদে পড়েন। কেউ ভাবেন, আমিই সেরা। সাহেব হয়ে গিয়েছি। অন্যদের পাত্তাও দেন না।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, এমন অহংকার নেতৃত্বকে ছোট করে। পাশাপাশি, সমবেত কাজের উপরে জোর দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজনীতি হোক বা সমাজসেবা কিংবা কর্পোরেট জীবন— সমবেত কাজে সাফল্যের মন্ত্র লুকিয়ে আছে মানুষে-মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের উপরে। কেউ তাঁর অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। সম্মান দাবি করে পাওয়া যায় না। তা অর্জন করতে হয়। আপনি যদি সম্মানের যোগ্য হন, তা হলেই তা পাবেন।’’ মন্ত্রীর মতে, ‘‘ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে, যাঁরা মানুষের মন জয় করেছেন, ভালবাসা পেয়েছেন, তাঁদের কারও উপরে জোর করে কিছু চাপিয়ে দিতে হয়নি।’’
গডকড়ীর এই মন্তব্যে বিরোধীরা অন্য গন্ধ পাচ্ছেন। তাঁদের অনেকের মতে, রাখঢাকের আড়ালে আদতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন মন্ত্রী। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী নিতিন রাউত বলেছেন, ‘‘ওঁর মন্তব্য নিশ্চিত ভাবে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দিকেই ইঙ্গিত করছে। সেই নেতা যিনি পরবর্তীতে খুব আত্মকেন্দ্রিক এবং অহংকারী হয়ে উঠেছেন।’’
ওই সভায় সরকারি আধিকারিকদের দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন গডকড়ী। তিনি বলেন, ‘‘রুটিনমাফিক নিয়োগের জন্যেও অনেকে ঘুষ নেন। শিক্ষা দফতরের অন্দরে কী হয় আমি খুব ভাল করেই তা জানি। এই দুর্নীতিগ্রস্ত পরিস্থিতিতে কী ভাবে রাস্তাঘাট তৈরি হয় তা-ও জানি।’’ শেষে স্কুলের অধ্যক্ষদের প্রতি গডকড়ীর বার্তা, শিক্ষক ও পড়ুয়াদের গড়ে নেওয়ার গুরু দায়িত্ব তাঁদের উপরেই রয়েছে। শিক্ষাই দেশের ভবিষ্যৎ। আজকে দেওয়া শিক্ষার উপরেই আগামী দিন নির্ভর করবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)