Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্রোহ ঠেকাতে বৈঠকে বসবে বিজেপি-সঙ্ঘ

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রথম প্রকাশ্য বিদ্রোহের আঁচ যাতে অন্যত্রও না ছড়িয়ে পড়ে, সে ব্যাপারে মেপে পা ফেলা শুরু করলেন বিজেপি এবং সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্ব। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বারে দু’পক্ষ যৌথ ভাবে আসরে নামছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৮
Share: Save:

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রথম প্রকাশ্য বিদ্রোহের আঁচ যাতে অন্যত্রও না ছড়িয়ে পড়ে, সে ব্যাপারে মেপে পা ফেলা শুরু করলেন বিজেপি এবং সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্ব। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বারে দু’পক্ষ যৌথ ভাবে আসরে নামছে।

কোঙ্কণি ও মরাঠা ভাষার পরিবর্তে ইংরেজিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে— এই অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটে লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন গোয়ার আরএসএস প্রধান সুভাষ ভেলিঙ্গর। আরএসএস তাঁকে বহিষ্কার করতেই শ’চারেক সঙ্ঘ কর্মী ইস্তফার হুমকি দিয়েছেন। তাতে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। সঙ্ঘ সূত্রের মতে, অনেক রাজ্যেই তাদের কর্মীদের মধ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে অসন্তোষ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতকে সঙ্গে নিয়ে চলার চেষ্টা করলেও অসন্তোষ চাপা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। আবার উল্টোটাও আছে।

এই পরিস্থিতিতে দু’পক্ষের সমন্বয় বাড়াতে সেপ্টেম্বরের ১০ থেকে ১২ তারিখ হরিয়ানার সুরজকুণ্ডে বিজেপি ও সঙ্ঘের সাংগঠনিক সচিবরা বৈঠকে বসবেন। সেখানে বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে সঙ্ঘের ক্ষোভ নিয়ে আলোচনা হবে। সঙ্ঘের এক নেতার কথায়, ‘‘বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে সঙ্ঘের ক্ষোভ বাড়তে বাড়তে বারুদের স্তূপের আকার নিয়েছে। একে সামলানোর রাস্তাই হল দু’পক্ষের সমন্বয় আরও বাড়ানো।’’

সঙ্ঘ সূত্রের মতে, বিহারে ভোটের সময়ও সঙ্ঘের অন্দরে ক্ষোভ ছড়িয়েছিল। সঙ্ঘের মুখপত্র ‘পাঞ্চজন্য’তে তখন লেখা হয়েছিল, এনডিএতে সব কিছু ঠিক নেই। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান ক্ষোভ বাড়িয়েছে আরএসএসের।

মোদী সম্প্রতি গো-রক্ষকদের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ক্ষুব্ধ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতারা তো উঠতে বসতে সরব হচ্ছেন মোদীর বিরুদ্ধে। সঙ্ঘের ভিতর থেকে যাতে মোদী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে আওয়াজ না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে আসরে নেমেছেন সঙ্ঘপ্রধান। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে সঙ্ঘের সব শাখাকে নিয়ে বৈঠকে তিনি বলেছেন, কোনও ভাবেই বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানানো যাবে না। এই বৈঠকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দলের নেতারাও ছিলেন। কিন্তু ক্ষোভ যে কমেনি, তার প্রমাণ, গত কালই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়া ফের তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।

এর উল্টো ছবিও আছে। যেমন কেরলে সঙ্ঘের হস্তক্ষেপ নিয়ে বিজেপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সঙ্ঘের ‘দাদাগিরি’ ক্রমশ বাড়ছে। সেখানে বিজেপি নেতারাই দল ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি ও সঙ্ঘ নেতারা মনে করছেন, উপরের স্তরে বোঝাপড়া থাকলেও নিচু তলায় তা পৌঁছে দিতে হবে।

সঙ্ঘের এক নেতার কথায়, ‘‘আজ এত বড় ধর্মঘট হল। সঙ্ঘের শ্রমিক সংগঠন এই বন্‌ধের পক্ষে থাকলেও তাদের বুঝিয়ে থামানো হয়েছে। বিদেশি লগ্নির দরজা হাট করে খুলে দেওয়ার পরেও স্বদেশি জাগরণ মঞ্চকে নিরস্ত করা হয়েছে যাতে তারা প্রকাশ্য আন্দোলন না করে। কিন্তু সবাইকে এক সঙ্গে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।’’ ওই নেতার বক্তব্য, দল ও সঙ্ঘের মতপার্থক্য আলোচনার মাধ্যমে মেটানো যেতেই পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Meetin Union
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE