মুজতবা হুসেন। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে দেশ জুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই এ বার ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিলেন প্রখ্যাত উর্দু সাহিত্যিক মুজতবা হুসেন। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে এক মুহূর্তও ওই পুরস্কার বাড়িতে রাখতে চাই না আমি।’’ ২০০৭ সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের হাতে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত হন হুসেন।
সংবাদমাধ্যমে হুসেন বলেন, ‘‘পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ বাড়িতে ওটা আর রাখতেই চাই না আমি। খুব শীঘ্র এই নিয়ে চিঠি লিখব আমি।’’
এই মুহূর্তে ধর্মের নামে দেশে বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ তোলেন হুসেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নতুন নতুন আইন এনে তা প্রয়োগ করার এত তাড়া কীসের? ঐক্যের পরিবর্তে আজকাল বিভাজন নিয়েই বেশি কথা হচ্ছে। ঐক্য, সম্প্রীতি নিয়ে কেউ কথাই বলতে চান না। প্রত্যেকের মনে ঘৃণা বাসা বাঁধছে। দেশ এটা মেনে নেবে না।’’ আজকের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরেও দেশে এমন সঙ্কট দেখা দেয়নি বলে মত হুসেনের।
৮৭ বছর বয়সি মুজতবা হুসেন মূলত কৌতুক রচনার জন্যই পরিচিত। উর্দু ভাষায় মোট ২৫টি বই লিখেছেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে তিনি হাসতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন হুসেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘সারাজীবন হাস্যকৌতুক লিখেছি। কিন্তু আজকাল হাসতেই পারছি না আমি। হাসার মতো জায়গাতেই নেই। কৃষকরা আত্মহত্যা করছেন। উৎপীড়নের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। এ সব দেখে আর হাসতে পারছি না আমি।’’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং দেশভাগের সাক্ষী হুসেনের কথায়: ‘‘গাঁধী, নেহরু, মৌলানা আজাদ, অম্বেডকররা স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন আমাদের। দেশের সংবিধান তৈরি করেছিলেন। বহু বছর ধরে এই গণতন্ত্রকে লালনপালন করে এসেছি আমরা। বর্তমানে তা ধসে পড়ছে। সকাল ৭টায় শপথ নিচ্ছেন কেউ। কোথাও আবার রাতারাতি সরকার গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশ জুড়ে ভয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy