নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সার্বিক ভাবে জোট গড়ে উত্তরপ্রদেশকে ‘বিজেপি-শূন্য’ করার কৌশল নিচ্ছেন রাহুল গাঁধীরা। ঠিক যে ভাবে ১৯৭৭ সালে বিরোধীরা জোট বেঁধে গোবলয়ের সবথেকে বড় রাজ্যে কংগ্রেসকে শূন্যে নামিয়ে এনেছিল।
ভোর সাড়ে চারটেয় বিদেশ থেকে দিল্লি ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী। সকালে দফতরে কাজ করে ফের লখনউ ছুটেছেন। রাতে দিল্লি ফিরে ফের কাল যাবেন। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলছেন, ‘‘ভোটের তাড়না! নিজের আসন বারাণসীও আর নিরাপদ নয় নরেন্দ্র মোদীর কাছে। সে কারণেই ঘন ঘন ছুটছেন। কিন্তু একবার যদি উত্তরপ্রদেশে মায়াবতী, অখিলেশ, কংগ্রেসের মধ্যে ঠিক মতো জোট হয়, বিজেপিকে রাজ্য থেকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব। ’৭৭ সালে বিরোধীরা কংগ্রেসের যেমন হাল করেছিল।’’
লখনউয়ে দলের কর্মসমিতির বৈঠকে আজ বসেছিলেন অখিলেশ যাদব। জোটের বিষয়টি অখিলেশের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে সমাজবাদী পার্টি। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইভিএম-এর বদলে ব্যালট পেপারেই করতে হবে লোকসভা নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন এই দাবি না মানলে দিল্লি এসে সত্যাগ্রহও করবে দল। এসপি-র এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দিল্লি থেকে কংগ্রেসের নেতারাও জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমরাও সঙ্গে আছি। ভোট হোক ব্যালট পেপারেই।’’
ক’দিন আগেই ঘরোয়া মহলে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ আর বিহারে জোটটা প্রায় হয়েই গিয়েছে। সেখানে যদি ঠিক মতো জোট হয়, তা হলে বিজেপি আর কোনও অবস্থাতেই ক্ষমতায় ফিরতে পারছে না।’’ আজ দলের কর্মসমিতির বৈঠকে অখিলেশও সেই সুরেই বলেন, ‘‘আমরা জোটের পক্ষে আছি। যেখানে যে শক্তিশালী, সেখানে তাদেরই প্রার্থী হবে।’’ দিল্লিতে এসে রাহুলের সঙ্গে এক দফা আলোচনা করে গিয়েছেন অখিলেশ। অগস্টের গোড়ায় ফের কথা হবে তাঁদের। যোগী-রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে তখন আরও আলোচনা হতে পারে।
পরিস্থিতি বিলক্ষণ বুঝছেন বিজেপি নেতারাও। মুখে আমল না দিলেও মোদী-অমিত শাহরা বিপদ টের পাচ্ছেন। অমিত মেনে নিচ্ছেন, ‘‘বিরোধীরা জোট বাঁধলে তার প্রভাব পড়বে একমাত্র উত্তরপ্রদেশেই। সে জন্য বিজেপি সব আসনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’’ আর মোদী? ক’দিন আগেই সংসদে রাহুল তাঁকে ‘চৌকিদার নয়, ভাগীদার’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। রাহুলের নিশানা ছিল, মোদীর সঙ্গে কিছু শিল্পপতির ঘনিষ্ঠতা এবং তার সুবাদে ওই সংস্থাগুলির বাড়বাড়ন্ত। সে দিন মোদী জবাব না দিলেও আজ লখনউয়ে এক অনুষ্ঠানে জানান, তিনি দেশের মানুষের দুঃখের ভাগীদার। যা শুনে বিরোধীরা বলছেন, ভাগীদার মন্তব্যে ধরা পড়ে গেছেন বুঝে এখন নতুন নতুন কথা বলে সহানুভূতি কুড়োতে চান মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy