Advertisement
E-Paper

শহিদকন্যার পাল্টা পোস্টে এ কী বললেন সহবাগ!

দু’দিনের মাথাতেই প্রশংসা বদলে গেল হিংসায়। এবিভিপি-র বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে ফেসবুকে সরব হয়ে অনেকেরই প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। অথচ সোমবার সেই সোশ্যাল মিডিয়াতেই একটা অংশের লোকজন তুলোধোনা করলেন তাঁকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৬:৩০
গুরমেহেরের ব্যঙ্গ করে সহবাগের সেই পোস্ট।

গুরমেহেরের ব্যঙ্গ করে সহবাগের সেই পোস্ট।

দু’দিনের মাথাতেই প্রশংসা বদলে গেল হিংসায়।

এবিভিপি-র বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে ফেসবুকে সরব হয়ে অনেকেরই প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। অথচ সোমবার সেই সোশ্যাল মিডিয়াতেই একটা অংশের লোকজন তুলোধোনা করলেন তাঁকে। দেশবিরোধী তকমা দেওয়া হল। যার নেপথ্যে রয়েছে কার্গিল শহিদ কন্যার আরও একটি পোস্ট। এই পোস্টটা অবশ্য নতুন নয়, এক বছর আগের। এবিভিপি-র বিরুদ্ধে করা ওই পোস্টের পরেই যা নতুন করে সামনে উঠে এসেছে।

দেশে শান্তি বজায় রাখার এক প্রচারে কার্গিল শহিদ ক্যাপ্টেন মনদীপ সিংহের মেয়ে গুরমেহের কউর একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। সেখানে কাগজে লিখে নিজের বক্তব্য পেশ করেছিলেন তিনি। যার একটিতে লেখা ছিল, ‘‘পাকিস্তান আমার বাবাকে মারেনি। ‘যুদ্ধ’ তাঁকে মেরেছে।’’ বিতর্কের শুরু এই পোস্টকে ঘিরেই। ফেসবুকে রীতিমতো ট্রোলড হতে হচ্ছে তাঁকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দেশপ্রেমীরা’ তো বটেই, ক্রিকেটার সহবাগ এবং অভিনেতা রণদীপ হুডাও তাঁকে ব্যঙ্গ করতে ছাড়েননি। প্ল্যাকার্ড হাতে একই স্টাইলে সহবাগ টুইট করেন, ‘‘দুটো ডবল সেঞ্চুরি আমি করিনি। আমার ব্যাট করেছে।’’ যার নীচে লেখা, ‘‘ব্যাট মে দম হ্যায়।’’ রণদীপ প্ল্যাকার্ড হাতে কোনও পোস্ট না করলেও সহবাগের এই পোস্টের প্রত্যুত্তরে হাততালির ইমোজি পোস্ট করেন তিনি।

প্রতাপ সিমহা নামে বিজেপি-র এক বিধায়ক তাঁকে দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গেও তুলনা করে বসেন। গুরমেহের এবং দাউদের পাশাপাশি দু’টি ছবি টুইটারে পোস্ট করেন তিনি। গুরমেহেরের মতো দাউদের হাতেও একটি প্ল্যাকার্ড ধরা রয়েছে। যাতে দাউদ বলছেন, ‘‘১৯৯৩ হামলায় অসংখ্য মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী নয়, বোমা তাঁদের মেরেছে।’’

দেশবিরোধী কিছু লিখলে এমনিতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দেশভক্তেরা’ কাউকেই রেওয়াত করেন না। গুরমেহেরের এই পোস্টটি ঘিরে নানা বিতর্ক চলছিলই। সহবাগ আর রণদীপের ওই পোস্ট তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ তাঁকে সরাসরি দেশবিরোধী বলে মন্তব্য করেন। তো কেউ আবার জানান, তাঁর বাবা বেঁচে থাকলে মেয়ের এই কীর্তি দেখে লজ্জিত হতেন। পাল্টা টুইটে গুরমেহেরও তার প্রতিবাদ করেছেন, ‘‘স্থানীয় গুন্ডাদের কাছ থেকে আমার দেশাত্মবোধ শেখার প্রয়োজন নেই।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ভুল প্রচার করা হচ্ছে, এই অভিযোগে দিল্লি মহিলা কমিশনের দ্বারস্থও হন তিনি।

আরও পড়ুন: মুখ খোলার মাশুল, ধর্ষণের হুমকি পেলেন শহিদকন্যা গুরমেহের

তবে গুরমেহেরের ওই পোস্টটিকে ভুল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলে তাঁর এক শুভাকাঙ্খী সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। সঙ্গে তিনি গুরমেহেরের করা আসল পোস্টটি থেকে চারটি ছবি টুইটারে রিপোস্ট করেন। যা থেকে স্পষ্ট, একসঙ্গে অনেকগুলি প্ল্যাকার্ড হাতে ছবির মধ্যে মাত্র একটিকেই এখন ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে গুরমেহেরের ওই পোস্টের বক্তব্যই বদলে গিয়েছে। কী ছিল ওই ছবিগুলিতে?

চারটি ছবির মধ্যে প্রথমটাই ছিল এই পাকিস্তানকে নিয়ে ওই লেখাটি। দ্বিতীয়টিতে লেখা ছিল, ‘‘কারণ দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ না হলে বাবা এখন আমার সঙ্গেই থাকতেন।’’ তৃতীয়টিতে লেখা ছিল, ‘‘আমি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তির জন্য লড়ছি।’’ আর শেষ ছবিতে লেখা ছিল, ‘‘অনেক হয়েছে। আর নয়।’’

""

গুরমেহের বরাবরই বেপরোয়া এবং প্রতিবাদী। মাত্র ২ বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়েছিলেন গুরমেহের। আর তখন থেকেই নাকি তাঁর ‘চিরশত্রু’ হয়ে ওঠে পাকিস্তান। পাকিস্তানের মানুষজন সম্পর্কে ঘৃণা জন্ম নেয়। সেই ঘৃণা থেকেই ৬ বছর বয়সে তাঁর বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এক বোরখা পরা মহিলাকে ছুরি মারতে গিয়েছিলেন গুরমেহের। কারণ তিনি মনে করেতেন, পাকিস্তানই তাঁর বাবাকে মেরেছে। তখন মা তাঁকে বুঝিয়েছিলেন, ‘‘পাকিস্তানকে শত্রু ভেব না, তোমার বাবা যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন।’’ ভুল ভাঙে গুরমেহেরের। তামাম দেশবাসীর কাছে মায়ের কাছ থেকে শেখা সেই বার্তাটাই পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।

গুরমেহেরের পোস্ট করা সেই ভিডিও:

Virender Sehwag Gurmehar Kaur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy