সরকারের নয়া মুদ্রানীতির ফলে বড় সমস্যায় পড়েছেন বরাকের বাগান শ্রমিকরা। ব্রিটিশ আমল থেকে অসমে বাগান-শ্রমিকরা তাদের সাপ্তাহিক মজুরি বা তলব পেতেন নগদে, হাতে হাতে। কিন্তু কেন্দ্রের নোট বাতিল ও ক্যাশলেস অর্থনীতির ধুয়োয় বাগান-শ্রমিকদেরও প্রাপ্য মজুরি বাগান কর্তৃপক্ষকে ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই দিতে হবে। প্রয়োজনীয় পরিষেবা ব্যবস্থার খানিকটা হলেও পুরোটা গড়ে তোলা এখনও সম্ভব হয়নি। আর এখানেই বেধেছে গোল।
হাইলাকান্দি জেলার প্রায় সব ক’টি চা-বাগানের শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা শ্রম আধিকারিক আলিমুদ্দিন বড়ভুইয়া। বাগান কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে তাঁদের মজুরিও জমা করেছেন। কিন্তু নিজের টাকা নিজের হাতে পেতেই যত সমস্যা। কারণ হাইলাকান্দির চা-বাগানে এটিএম কিংবা ব্যাঙ্কের কোনও শাখা নেই। শনিবার ছিল তলবের দিন। হাইলাকান্দির সব চেয়ে বড় বাগান আয়নাখাল। কাছাকাছি এলাকার মধ্যে নেই কোনও এটিএম, নেই ব্যাঙ্ক।
অতএব ভরসা বলতে ‘কাস্টমার সার্ভিস প্রোভাইডার’-রা (সিএসপি)। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সিএসপি–র মাধ্যমে শ্রমিকদের টাকা তুলতে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যাচ্ছে লাইনে দাঁড়িয়ে। কারণ এই সব এলাকায় নেটওয়ার্ক আসে যায়, থাকে না। ফলে অনন্ত অপেক্ষা। সিএসপি ভানু রুদ্রপালের কথায়, ‘‘সকাল থেকে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। অথচ নেটওয়ার্ক না থাকায় তাঁদের মজুরির টাকা দিতে পারছি না।’’ এই একই সমস্যা অধিকাংশ চা-বাগানে।
লালার লালাছড়া চা বাগানের কর্মী রাজেন দুসাদ জানান, নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা এ জেলায়, বিশেষ করে চা-বাগান এলাকায় এতটাই খারাপ যে ডিজিটাল অর্থনীতি এখানে মুখ থুবড়ে পড়ছে। তাঁদের মতে এই সমস্যার একমাত্র সমধান, প্রতিটি চা বাগানে একটি করে এটিএম বসানো এবং মোবাইল টাওয়ার বাড়ানো। ইতিমধ্যেই এই দাবি জানিয়েছেন হাইলাকান্দির বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা। লালাছড়ার রাজেন দুসাদ এবং সিঙ্গালার চেমরু তাঁতি মনে করেন, সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ভাল। সমস্যা রূপায়ণেই। চা-বাগানে এটিএম বসানোর পক্ষপাতি বিভিন্ন বাগান কর্তৃপক্ষও। আয়নাখাল চা-বাগানের ম্যানেজার অলোক মহাবীর জানান, তিনি ইতিমধ্যেই তাঁদের বাগানে এটিএম বসানোর জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy