E-Paper

ভুটানের নদীর জল মাপতে কেন্দ্রকে প্রস্তাব

প্রতি বছরই তিস্তা, তোর্ষা, সঙ্কোশ, রায়ডাকের মতো উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদী বর্ষায় ভুটান থেকে নামা জলে প্লাবিত হচ্ছে বলে শোনা যায়। সেচ দফতর জানাচ্ছে, ৭৬টি নদী ভুটান থেকে নেমে এ দিকের নদীর সঙ্গে মিশেছে।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫ ০৭:৫১
ভুটানের পাহাড়ি নদী মানেই বর্ষার আতঙ্ক উত্তরবঙ্গে।

ভুটানের পাহাড়ি নদী মানেই বর্ষার আতঙ্ক উত্তরবঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত।

ভুটানের পাহাড়ি নদী মানেই বর্ষার আতঙ্ক উত্তরবঙ্গে। নীচে নামার স্রোতের তোড়ে যা ভাসায় চা বাগান থেকে জনবসতি। শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসের পরিকাঠামোর অভাবেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সমস্যার সমাধানে এ বার রাজ্যের সেচ দফতর ভুটানে রেনগেজ স্টেশন বসানোর ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছে। তা না হলে বন্যাজনিত কারণে উত্তরবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা কঠিন হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা।

প্রতি বছরই তিস্তা, তোর্ষা, সঙ্কোশ, রায়ডাকের মতো উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদী বর্ষায় ভুটান থেকে নামা জলে প্লাবিত হচ্ছে বলে শোনা যায়। সেচ দফতর জানাচ্ছে, ৭৬টি নদী ভুটান থেকে নেমে এ দিকের নদীর সঙ্গে মিশেছে। ভুটান থেকে ডলোমাইট ভাঙতে ভাঙতে নামার কারণে উত্তরবঙ্গের বহু নদীর নাব্যতা কমে গিয়েছে বলেও দাবি সেচ দফতরের।

সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ একটা কড়াইয়ের মতো। বিহারের থেকেও জল আসছে। ভুটানের থেকেও নদী নামছে। কিন্তু ইন্দো-ভুটান কমিশন তৈরি না হওয়ায় সে দেশে আমরা আমাদের সমস্যার কথা জানাতে পারছি না। উত্তরবঙ্গের সমস্যা ঠেকাতে কেন্দ্রীয় জল কমিশনের কাছে এ বার আমরা ভুটানে রেনগেজ স্টেশন বসানোর প্রস্তাব রেখেছি।’’

সেচ দফতর জানাচ্ছে, ভুটানে ৫৫টি রেনগেজ স্টেশন বসানোর প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, রেনগেজ স্টেশনের সঙ্গে উপযুক্ত উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থার কথাও। তাতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভুটানের বৃষ্টিপাত ও নদীগুলির সঙ্গে আসা জলের উপরে নজর রাখা সম্ভব হবে। সেচ-কর্তারা ভুটান ঘুরে দেখে এসেছেন, সেখানে পাঁচটি মাত্র রেনগেজ স্টেশন আছে।

আধিকারিকেরা জানান, দু’দেশের মধ্যে থাকা একটি টেকনিক্যাল কমিটি ভুটানের বৃষ্টি নিয়ে যতটুকু তথ্য দেয়, তার উপরে ভিত্তি করেই উত্তরবঙ্গের নদীগুলি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হয়। রেনগেজ স্টেশনের সংখ্যা বাড়ানো হলে বৃষ্টির পূর্বাভাস, পরিমাণ সবটাই জানা যাবে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বৃষ্টির পূর্বাভাস আর জলের হিসেব আন্দাজ করতে পারলেই সময় মতো নদীর আশপাশের বসতিকে সরানো যাবে।’’

সেচ দফতর জানাচ্ছে, চার থেকে আট ঘণ্টার ব্যবধানে ভুটান থেকে জল এ রাজ্যের বিভিন্ন নদীতে প্রবল গতিতে ঢুকতে শুরু করে। জলের রং দেখে কত জল বাড়তে পারে তা আন্দাজ করতে হয়। সম্প্রতি রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় ডিভিসি, ডিভিআরসিসি, ভারতীয় আবহাওয়া দফতর, কেন্দ্রীয় জল কমিশন-সহ একাধিক সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল সেচ দফতর। সেখানে ভুটানের নদীগুলি প্রতি বর্ষায় কী ভাবে উত্তরবঙ্গকে ভাসিয়ে দেয় সে কথাও জানানো হয়। সেচ দফতর সূত্রের খবর, রেন গেজ স্টেশন বসাতে প্রয়োজনে রাজ্য সরকারও আর্থিক সহায়তা করতে রাজি বলে জানানো হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bhutan Water Level Irrigation department North Bengal Flood Control

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy