সমৃদ্ধ বিহার গড়তে দুর্নীতিগ্রস্ত, অপরাধী প্রার্থীদের বয়কট করার জন্য রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন জানালেন ওই রাজ্যের বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে সিংহ। তবে তিনি বিভিন্ন দলের বাহুবলী প্রার্থীদের পাশাপাশি বিজেপি নেতা তথা বর্তমানে উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরীকেও বয়কট করার দাবি তোলায় চর্চাশুরু হয়েছে।
আজ দীপাবলির দিন এক বার্তায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব তথা আরার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ রাজ্যবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভোটারেরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তার ভিত্তিতেই বিহারের ভবিষ্যতের রাস্তা ঠিক হবে। তাই রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন, নিজেদের ভোটের গুরুত্ব অনুধাবন করে ভোট দিন। কারণ, জনতাই গণতন্ত্রের আসল শক্তি। অপরাধীরা ক্ষমতায় এলে রাজ্যের উন্নয়ন স্তব্ধ হওয়ার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে।’’ তাঁর পরামর্শ, যাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক বা দুর্নীতির মামলা রয়েছে, তাঁকে ভোট দিয়ে বেছে নেওয়া উচিত নয়। প্রার্থী যতই ভোটারের নিজের লোক হোক না কেন, কোনও ভাবেই অপরাধীরা যাতে ক্ষমতায় না আসে। এমনকি, কোনও কেন্দ্রে উপযুক্ত প্রার্থী না থাকলে নোটা-য় ভোট দিতে বলেন তিনি। ওই প্রসঙ্গে মোকামা কেন্দ্রের দুই প্রধান প্রার্থীকেই ভোট না দেওয়ার জন্য আবেদন করেন প্রাক্তন মন্ত্রী।
এ যাত্রায় মোকামা থেকে জেডিইউ প্রার্থী বাহুবলী নেতা অনন্ত সিংহ। ছোটে সরকার নামে কুখ্যাত অনন্তের নামে নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী ২৮টি ফৌজদারি অপরাধ রয়েছে। ওই কেন্দ্রের আরজেডি প্রার্থী স্থানীয় ডন সুরজভানের স্ত্রী বীণা। সুরজভানের বিরুদ্ধেও একাধিক হত্যা, অপহরণ, লুঠ, গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। মূলত নব্বইয়ের দশকে মোকামা এলাকায় যাবতীয় অপরাধের পিছনে ছিলেন অনন্ত সিংহ ও সুরজভান। তাই ওই দু’জনকেই বয়কটের ডাক দিয়েছেন আর কে সিংহ। একই ভাবে সিওয়ান থেকে বাহুবলী শাহাবুদ্দিনের ছেলে ওসামা সাহেব আরজেডির টিকিটে নির্বাচনে দাঁড়ানোয় তীব্র বিরোধিতা করেছেন তিনি। আবেদন জানিয়েছেন নিজের দলের নেতা, তারাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সম্রাট চৌধুরীকেও ভোট না দেওয়ার।
সম্প্রতি বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাটের বিরুদ্ধে দুর্নীতি করে জমি দখল, হত্যার অভিযোগ, ও নিজের বয়স সম্পর্কিত ভুয়ো শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন জনসুরজ দলের নেতা প্রশান্ত ভূষণ। সে সময়েই সম্রাটের উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার প্রশ্নে সওয়াল করেছিলেন আর কে সিংহ। কিন্তু সম্রাট তারাপুর থেকে লড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এ বার প্রকাশ্যে বিরোধিতায় নেমেছেন প্রাক্তন সাংসদ। বিজেপির একটি অংশের মতে, সম্রাটের মতো প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে সকাল-সন্ধ্যায় যে ভাবে আর কে সিংহ সরব হচ্ছেন, তা দেখে অনেকেই দ্বিধায়। দলেই চর্চা, ভবিষ্যতে সম্রাটের মতো নেতাকে ক্ষমতার অলিন্দ থেকে সরাতে আর কে সিংহকে দিয়ে পরিকল্পনামাফিক আক্রমণ শানানো হচ্ছে। যদিও দলের অন্য অংশের মতে, আর কে সিংহ যা বলছেন তা নীতিগত ভাবে ঠিক। যা করতে গিয়ে দলীয় নেতাকেও রেওয়াত করছেন না তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)