অহমদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর সতর্ক এয়ার ইন্ডিয়া। সংস্থার এমডি তথা সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন সোমবার কর্মীদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছেন। সেখানে তদন্ত রিপোর্টের উল্লেখ রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, অহমদাবাদের দুর্ঘটনার তদন্ত এখনও অনেকটা বাকি আছে। আগেভাগে তাই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোনো উচিত নয়। তাঁর দাবি, এই তদন্ত রিপোর্ট থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, বিমান সংস্থার তরফে রক্ষণাবেক্ষণে কোনও ত্রুটি ছিল না। ছিল না যান্ত্রিক কোনও ত্রুটিও। আগামী দিনে এ ক্ষেত্রে আরও কোনও নিয়ম মানার পরামর্শ এলে তা অনুসরণ করা হবে, জানিয়েছেন ক্যাম্পবেল।
কর্মীদের উদ্দেশে বার্তায় এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও লিখেছেন, ‘‘প্রাথমিক রিপোর্টে তো কোনও যান্ত্রিক বা রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিমানে এবং ইঞ্জিনে আগে থেকে কোনও ত্রুটি ছিল না। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাধ্যতামূলক সমস্ত কাজ করা হয়েছিল। কিছু বাদ যায়নি। জ্বালানির মান কিংবা বিমানের উড়ানেও কোনও সমস্যা ছিল না। পাইলটেরা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। উড়ানের আগে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষাও নিয়ম মেনে করা হয়।’’
আরও পড়ুন:
সিইও আরও বলেন, ‘‘আমাদের কাছে বোয়িং ৭৮৭-এর যে ক’টি বিমান রয়েছে, দুর্ঘটনার কিছু দিনের মধ্যে তা ডিজিসিএ-র তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা করা হয়েছিল। দেখা যায় প্রত্যেকটি বিমানই নিরাপদ এবং ওড়ার জন্য প্রস্তুত। আমরা সমস্ত প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে যাব। কর্তৃপক্ষ যদি নতুন কোনও নিয়ম মানার পরামর্শ দেন, তা-ও মানব।’’
এয়ার ইন্ডিয়ার অগ্রাধিকারগুলিও কর্মীদের কাছে স্পষ্ট করে দিয়েছেন সিইও। বলেছেন, ‘‘যাঁরা কাছের মানুষকে হারিয়েছেন, যাঁরা আহত, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের অগ্রাধিকার। আমরা একসঙ্গে একটি দল হিসাবে কাজ করব এবং সারা বিশ্বে যাত্রীদের নিরাপদ নির্ভরযোগ্য উড়ান পরিষেবা দেব। এটাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’’
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন অহমদাবাদ থেকে লন্ডন গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার এআই১৭১। রানওয়ে ছাড়ার ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে ওই বিমান ভেঙে পড়ে। ঘটনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবে ২৬০। ওই ঘটনার এক মাসের মাথায় প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। সেখানে প্রকাশ করা হয়েছে দুই পাইলটের কথোপকথন। তাঁদের এক জনকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘কেন তুমি বন্ধ করে দিলে (জ্বালানি)?’’ আর এক জন উত্তর দেন, ‘‘আমি কিছু বন্ধ করিনি।’’ ইঞ্জিনে জ্বালানি পৌঁছোনো বন্ধ হওয়ায় দু’টি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে বিমানটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভেঙে পড়ে। প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই উল্লেখ করা হয়েছে। কী কারণে ইঞ্জিনে সমস্যা তৈরি হল, তা জানতে তদন্ত চলছে।