Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Jammu and Kashmir

জম্মু-কাশ্মীরে ভোট কবে, প্রশ্ন বিরোধীদের

২০১৮ সালে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার ভেঙে দেওয়ার পর থেকে সেখানে কেন্দ্রের শাসনই চালু রয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্র এক দিকে বলছে উপত্যকায় শান্তি ফিরে এসেছে, অন্য দিকে নির্বাচন করাতে ভয় পাচ্ছে।

An image of Election

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৫৬
Share: Save:

পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের শাসনে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। আজ লোকসভায় জম্মু-কাশ্মীর সংশোধিত পুনর্গঠন বিল নিয়ে আলোচনায় কবে সেখানে বিধানসভা নির্বাচন হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হলেন বিরোধী নেতৃত্ব।

নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করেন। ফলে বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু-কাশ্মীর। সে সময়ে জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল এনে প্রথমে জম্মু-কাশ্মীর থেকে লাদাখকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা পায় লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীর। সেই সময়েই সংসদে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ আশ্বাস দিয়েছিলেন, উপত্যকায় শান্তি ফিরলেই সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করিয়ে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

কিন্তু ২০১৮ সালে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার ভেঙে দেওয়ার পর থেকে সেখানে কেন্দ্রের শাসনই চালু রয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্র এক দিকে বলছে উপত্যকায় শান্তি ফিরে এসেছে, অন্য দিকে নির্বাচন করাতে ভয় পাচ্ছে। দু’টি বিষয় পরস্পরবিরোধী। আজ তৃণমূলের সৌগত রায় ওই বিল সংক্রান্ত আলোচনায় বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ। কবে ভোট হবে তা স্পষ্ট করে বলা উচিত কেন্দ্রের। জম্মু কাশ্মীরের লোকেদেরই তাঁদের রাজ্য শাসন করা উচিত। দিল্লি থেকে কখনওই শাসন হওয়া উচিত নয়।’’ পাশাপাশি, পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করার যে প্রতিশ্রুতি অমিত শাহ দিয়েছিলেন, তা কবে পূরণ হবে তা-ও সরকারের কাছে জানতে চান তৃণমূলের ওই সাংসদ। নিজের বক্তব্যে সৌগত অতীতের ৩৭০ অনুচ্ছেদ সমর্থন করলে তাঁকে পাল্টা আক্রমণ শানায় শাসক শিবির। অমিত শাহ পাল্টা প্রশ্নে জানতে চান, ‘‘এক দেশে দু’টি প্রধান (মন্ত্রী), দু’টি নিশান (পতাকা) ও দু’টি সংবিধান কী ভাবে সমর্থনযোগ্য হতে পারে? অতীতের সরকার যে ভুল করেছে, তা এখন ঠিক করেছেন নরেন্দ্র মোদী।’’ আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সৌগতের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কাশ্মীর এখন শান্ত। বাংলার এমন অশান্ত অবস্থা কেন বলতে পারেন?’’

সংশোধিত বিলে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিলে সাতটি আসন তফসিলি জাতি ও ন’টি আসন জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই বিল অনুযায়ী কাশ্মীরের পরিযায়ী সমাজ থেকে দু’জন বিধানসভায় স্থান পাবেন। যাঁদের মনোনীত করবেন উপরাজ্যপাল। যাঁদের মধ্যে এক জনকে মহিলা হতে হবে। এ ছাড়া ওই বিলে বলা হয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন এমন এক জন ব্যক্তিকেও মনোনীত করবেন উপরাজ্যপাল।

কিন্তু জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিলটি এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আজ কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘যে বিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে সেটিকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়, সেটি এখনও সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার আগে সংশোধিত পুনর্গঠন বিল নিয়ে আসা সাংবিধানিক ভাবে অনৈতিক কাজ। আর এই সরকার তা-ই করেছে।’’

ওই বিলটি ছাড়াও আজ জম্মু-কাশ্মীর সংরক্ষণ বিল নিয়ে এসেছে কেন্দ্র। যে বিলে সামাজিক ভাবে ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মহিলা, বিশেষ করে তফসিলি জাতি ও জনজাতি সমাজের নারীরা শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণ পাবেন। পাশাপাশি, বিধানসভাতেও মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। আগামিকাল ওই বিল সংক্রান্ত আলোচনায় সরকার পক্ষের বক্তব্য রাখবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE