বিহারে প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরাজ পার্টির কর্মী দুলারচাঁদ যাদবকে খুনের ঘটনায় মোকামা বিধানসভা কেন্দ্রের জেডিইউ প্রার্থী অনন্তকুমার সিংহকে গ্রেফতার করেছে পটনা পুলিশ। তাঁর সঙ্গে মণিকান্ত ঠাকুর এবং রাজনীত রাম নামের আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা খুনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ। খুনের ঘটনায় তাঁদের যোগ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ, খুনের আগে বেধড়ক মারধর করা হয় দুলারকে। তাঁর ফুসফুস ফেটে গিয়েছিল। ভেঙে গিয়েছিল পাঁজরের হাড়।
পটনার এসএসপি কার্তিকেয় শর্মা শনিবার বেশি রাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই জেডিইউ প্রার্থী-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করার কথা জানানো হয়েছে। মোকামায় আগামী ৬ নভেম্বর ভোটগ্রহণ রয়েছে। তার মাত্র পাঁচ দিন আগে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হলেন খোদ প্রার্থী। পুলিশ জানিয়েছে, অনন্তের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সেই কারণে শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মোকামায় জন সুরাজ পার্টির হয়ে লড়ছেন প্রিয়দর্শী পিযূষ। নিহত দুলার সম্পর্কে তাঁরই আত্মীয়। জানা গিয়েছে, এর আগে তিনি আরজেডি-র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে পিকের দলে যোগ দেন। গত বৃহস্পতিবার প্রিয়দর্শীর সমর্থনে একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল মোকামায়। সেই মিছিল অনন্তের সমর্থনে আয়োজিত মিছিলের মুখোমুখি চলে আসে। দুই দলের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এই সময় গুলিও চলেছিল বলে দাবি স্থানীয়দের। সংঘর্ষে নিহত হন দুলার। দীর্ঘ ক্ষণ তাঁর দেহ আটকে রাখা হয়েছিল। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, গুলির আঘাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। তাতে মৃত্যুর বীভৎসতা প্রকাশ্যে আসে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই দেখা গিয়েছে, দুলারের ফুসফুস ছিঁড়ে গিয়েছিল। ভেঙে গিয়েছিল পাঁজরের একাধিক হাড়। এ ছাড়া, তাঁর পায়ের গোড়ালির কাছে গুলি লেগেছিল। তবে সেই আঘাত প্রাণঘাতী নয় বলে জানান চিকিৎসকেরা। অর্থাৎ, বুকে আঘাতের কারণে ‘হার্টফেল’ করেন পিকের দলের কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছে যে, এটা সাধারণ মৃত্যু নয়, খুন। ভারী এবং ভোঁতা কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে দুলারকে।
দুলারের মৃত্যুকে ঘিরে ভোটের মুখে বিহারের রাজনীতির উত্তাপ বেড়ে গিয়েছে। জেডিইউ প্রার্থী এই ঘটনার সঙ্গে যোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছিলেন। তবে আরজেডি এবং জন সুরাজ পার্টি জেডিইউ-এর দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। অনন্তের স্ত্রী নীলম দেবী বর্তমানে মোকামার বিধায়ক।