Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩

গৌরী-হত্যায় প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন? বিদ্ধ বিজেপি

গৌরীর খুনের পরে অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অবশ্য ঘটনার নিন্দা করেছেন। চাপের মুখে আজ সকালে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। প্রধানমন্ত্রী কিন্তু চুপ।

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

বিজেপি সাংসদ প্রহ্লাদ জোশীর দায়ের করা মানহানির মামলায় যে দিন দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন গৌরী লঙ্কেশ, বিজেপির তথ্য-প্রযুক্তি মোর্চার প্রধান অমিত মালব্য টুইট করেছিলেন, ‘‘আশা করি, অন্য সাংবাদিকেরাও মনে রাখবেন।’’

Advertisement

গত রাতে গৌরীর খুনের পরে অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অবশ্য ঘটনার নিন্দা করেছেন। চাপের মুখে আজ সকালে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। প্রধানমন্ত্রী কিন্তু চুপ। এ দিকে নরেন্দ্র মোদী যে মুষ্টিমেয় কয়েক জনকে টুইটারে ‘ফলো’ করেন তাঁদেরই অন্যতম, ব্যবসায়ী নিখিল দাধিচ রীতিমতো অশালীন ভাষায় গৌরী-হত্যাকে সমর্থন করে টুইট করেছেন। নিজেকে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ বলেই দাবি করেন নিখিল। তাঁর এই টুইটের পরে দাবি উঠেছে, পত্রপাঠ এই ব্যবসায়ীকে ‘আনফলো’ করুন মোদী। রাতের দিকে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ টুইট করেছেন, ‘কারও হত্যায় উল্লাস প্রকাশ করাটা লজ্জাজনক।’

অনেকেরই মনে হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নাম উঠে আসায় এ ভাবেই দূরত্ব বাড়ানোর কাজটি করতে হয়েছে রবিশঙ্করকে। রাহুল গাঁধী বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এক জন দক্ষ হিন্দু নেতা। তাঁর শব্দের দু’টি অর্থ থাকে। একটি নিজেদের ভিত্তির জন্য, অন্যটি বাকি দুনিয়ার জন্য। তিনি এমনিতে কিছু বলেন না। অনেক ঘটনা ঘটে গেলে তার পর ভাবেন, কিছু বলে দিই।’’ কংগ্রেস সহ-সভাপতির অভিযোগ, এখন বিজেপি-আরএসএসের আদর্শের বিরুদ্ধে যিনি কথা বলবেন, তাঁর উপরেই চাপ বাড়বে, আক্রমণ হবে, এমনকী হত্যাও করা হবে।

রাহুলের কথার জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলেন, ‘‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য। এ তো রাজ্য সরকারের বিষয়। আর প্রধানমন্ত্রী এখন বিদেশে।’’ যদিও বিদেশে থেকেও ক’দিন আগে এক তৃণমূল সাংসদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে টুইট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির অনেক নেতাই দাবি এখন দাবি তুলেছেন, গৌরী-হত্যার তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়া হোক। যাতে সেটি সরাসরি কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে হয়। গৌরীর ভাই ইন্দ্রজিৎ একই দাবি তোলায় সুবিধে হয়েছে বিজেপির।

Advertisement

আরও পড়ুন: চুপ করে থাকবো না, সরব গোটা দেশ

এর আগে সিপিআই নেতা গোবিন্দ পানসারে, যুক্তিবাদী নরেন্দ্র দাভোলকর ও এম এম কলবুর্গীর হত্যার কিনারাও হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে গৌরী-হত্যার সঙ্গে বাকি তিন খুনের সামঞ্জস্য খুঁজে পাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির দাবি, আগের তিন হত্যার সঙ্গে যোগ রয়েছে ‘সনাতন সংস্থা’ নামে এক গেরুয়া শিবিরের। ঘটনাচক্রে, আজ গৌরী-হত্যার নিন্দা করেছে সনাতন সংস্থা। কিন্তু একই সঙ্গে গৌরীর বিরুদ্ধে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন তাদের মুখপাত্র চেতন রাজনস।

কংগ্রেসের দাবি, মানহানির মামলায় গৌরীর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সময়েই বিজেপির বিবৃতি থেকে বোঝা গিয়েছিল, তারা কী রকম প্রতিহিংসাপরায়ণ। বিজেপির পাল্টা প্রশ্ন— কিছু নেতার দুর্নীতি ফাঁস করতে চাইছিলেন গৌরী। সেই জন্যই তাঁকে খুন হতে হল না তো? কেন্দ্রের শাসক দলের দলের কটাক্ষ, কলবুর্গী খুন হয়েছিলেন কংগ্রেস-শাসিত কর্নাটকেই। দু’বছরেও কেন হত্যার কিনারা হল না? যার উত্তরে কংগ্রেসের আবার দাবি, সনাতন সংস্থার গড় মহারাষ্ট্রে। সেখানকার বিজেপি-শাসিত সরকার ঢিলেঢালা বলেই এগোচ্ছে না তদন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.