গত মাসে আমদাবাদ বিমানবন্দরে ড্রিমলাইনার ভেঙে পড়ার পর এয়ার ইন্ডিয়া দেশজোড়া বিতর্কের মুখে। আজ সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কমিটির সদস্যদের তোপের মুখে পড়লেন সংস্থার সিইও উইলসন ক্যাম্পবেল। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিটির চেয়ারম্যান কে সি বেণুগোপাল, তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায়, বিজেপির রবিশঙ্কর প্রসাদ আমদাবাদ কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ড্রিমলাইনারের কড়া সমালোচনা করেন। সূত্রের খবর, এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ নিয়ে বৈঠকের কিছুটা ‘ব্যাটিং’ করার চেষ্টা করছিলেন প্রাক্তন বিমানমন্ত্রী তথা বিজেপির শরিকদলের সদস্য প্রফুল্ল পটেল। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, পটেলের কৈফিয়ৎ গ্রাহ্য করেনি কমিটি।
বিষয়টি আজ সুখেন্দুশেখর প্রথম উত্থাপন করেন বলে সূত্রের খবর। তিনি ক্যাম্পবেলকে বলেন, আমদাবাদ আমাদের শিক্ষা দিয়ে গিয়েছে যে ড্রিমলাইনার এ বার বন্ধ করে দেওয়া উচিত। রবিশঙ্কর প্রসাদও বলেন, তিনি ভিয়েনা থেকে দিল্লি ফেরার সময় দেখেছেন যে ড্রিমলাইনারের আসন খুলছে না। তখনই প্রফুল্ল বলেন, তাঁর মন্ত্রী হিসেবে অভিজ্ঞতা, একটি সিট খারাপ হলে প্রায় একবছর অপেক্ষা করতে হয়। কারণ, এই সিটের নির্দিষ্ট প্রস্তুতকারক সংস্থা একটি মাত্র আসনের জন্য আসে না। সংখ্যায় বেশি আসনে সমস্যা হলে তখন আসে।
সূত্রের খবর, এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ক্যাম্পবেল বলেন, ড্রিমলাইনারের এটা প্রথম দুর্ঘটনা। কিন্তু গোটা বিশ্বে ১ হাজারেরও বেশি এই বিমান চলছে। ফলে এর কারিগরি নিরাপত্তা কাঠামো নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। সুখেন্দুশেখর তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, সিইও কি জানেন কত বার মাঝারি এবং বড় দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে ড্রিমলাইনার? এর পর তিনি দু’টি উদাহরণ দেন ক্যাম্পবেলকে। যে বছর ড্রিমলাইনার বাজারে আসে অর্থাৎ ২০১২ সালের ১৮ জুন ডেনভার থেকে টোকিয়ো যাওয়ার পথে সিয়াটলের আকাশে এবং তার দু’দিন পর লন্ডন থেকে হিউস্টন যাওয়ার পথে কারিগরি ত্রুটির জন্য মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন অন্তত ৫০০ জন। প্রথম বার হঠাৎই মাঝ আকাশে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে প্রায় দু’ঘণ্টা ওড়ার পর বিমানচালকের কাছে খবর আসে যে জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছে। গত ১১ বছর এমন অত্যন্ত বড় ও মাঝারি মাপের বিপদ ড্রিমলাইনারের ক্ষেত্রে ৩০৪ বার ঘটেছে এবং প্রয়োজনে যাবতীয় নথি তিনি কমিটিকে দিতে পারেন বলে জানান। সিইও দাবি করেন, এই তথ্য তাঁর কাছে ছিল না। তিনি এ বিষয়ে অবহিত হয়ে কমিটিকে জানাবেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)