আবার সেই বহরাইচ। উত্তরপ্রদেশের এই জেলায় আবার নতুন করে নেকড়ের হামলায় আতঙ্ক বাড়ছে। ত্রস্ত বহু গ্রাম। গত বছরের পর আবার নেকড়ের হামলা শুরু হয়েছে কয়েকটি গ্রামে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দু’টি গ্রামে পর পর নেকড়ের হামলা হয়। শুক্রবার দুপুর ৩টে নাগাদ বাউন্দি থানা এলাকার ভাউরি বাহরওয়া গ্রামে একটি তিন মাসের শিশুকে নেকড়ে তুলে নিয়ে যায়। নেকড়েটিকে তাড়া করেও ধরা যায়নি। পরে শিশুটির দেহাংশ উদ্ধার হয় খেত থেকে।
শিশুটির মা রানির দাবি, শিশুকন্যাকে পাশে নিয়ে বারান্দায় ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় হঠাৎ একটি নেকড়ে এসে তাঁর কন্যাকে মুখে তুলে নিয়ে ছুটে পালায়। তিনিও লাঠি নিয়ে নেকড়ের পিছনে ধাওয়া করেন। তাঁর চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজনও ছুটে আসেন। তার পর নেকড়ের খোঁজ চালানো হয়। বাড়ি থেকে ৬০০ মিটার দূরে আখখেতে শিশুটির দেহাংশ উদ্ধার হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, নেকড়েটি শিশুর শরীরের বেশির ভাগটাই খেয়ে নিয়েছিল। দেহের উপরভাগ পাওয়া গিয়েছে। তা দেখেই শিশুটিকে শনাক্ত করে তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার কাইজ়ারগঞ্জে সাত বছরের এক শিশুকে নেকড়ে টেনে নিয়ে যায়। আট কিলোমিটার দূরে ওই শিশুটির দেহ উদ্ধার হয়। বিভাগীয় বনাধিকারিক রাম সিংহ যাদব নিশ্চিত করেছেন, নেকড়ের পায়ের ছাপ মিলেছে। খাঁচা পাতা হয়েছে। নজরদারি চালানো হচ্ছে ড্রোন উড়িয়ে। গ্রামগুলিতে পাহারা বাড়ানো হয়েছে।
গত বছরে বহরাইচে ছ’টি নেকড়ের একটি দল হামলা চালাচ্ছিল বেশ কয়েকটি গ্রামে। মানুষখেকো সেই নেকড়ের দলের হামলায় ৯’জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে এক মহিলা ছাড়া বাকি আট জনই শিশু। আহতের সংখ্যাও ছিল ৫০-এর বেশি। গত বছরের সেপ্টেম্বরের সেই নেকড়ে-আতঙ্ক আবার ফিরল বহরাইচে। বন দফতর, পুলিশ, স্থানীয় লোকজন সকলে মিলে নেকড়ের দলটিকে ধরার জন্য চেষ্টা করে। পাঁচটি নেকড়েকে ধরা গেলেও ষষ্ঠ নেকড়েটি কিছুতেই বাগে আসছিল না। সেটির হামলায় আরও কয়েক জনের মৃত্যু হয়। টানা ২৪ দিন ধরে নেকড়েটিকে ধরার চেষ্টা করা হয়। অবশেষে সেটিকে ধরতে সক্ষম হয় বন দফতর।