পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক তলানিতে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসাবে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে ভারত। এই সিদ্ধান্তে খুশি নয় পাকিস্তান। তাদের দাবি, ভারত একতরফা ভাবে এই চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করতে পারে না। এমনকি, পাকিস্তানের অনেকেই এই ব্যাপারে বিশ্ব ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপও দাবি করে! তবে শুক্রবার বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা জানান, সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই!
সংবাদসংস্থা এএনআইএ-কে শুক্রবার সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে বাঙ্গা বলেন, ‘‘এখানে তারা (বিশ্ব ব্যাঙ্ক) সাহায্যকারী। এ ছাড়া আর কোনও ভূমিকা নেই।’’ পাশাপাশি, তিনি এ-ও বলেন, ‘‘চুক্তি নিয়ে সমস্যায় বিশ্ব ব্যাঙ্ক কী ভাবে হস্তক্ষেপ করবে, তা নিয়ে সংবাধমাধ্যমে অনেক জল্পনা চলছে। কিন্তু সে সবই ভুয়ো। বিশ্ব ব্যাঙ্কের ভূমিকা শুধুমাত্র সহায়কের।’’
আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় টানা ন’বছরের আলোচনার পরে ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সই হয়েছিল ভারত-পাক সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও তৎকালীন পাক প্রেসিডেন্ট জেনারেল আয়ুব খান চুক্তিতে সই করেছিলেন। বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় সই হওয়া ওই দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু এবং তার দুই উপনদী, বিতস্তা (ঝিলম) ও চন্দ্রভাগার (চেনাব) জলের উপরে পাকিস্তানের অধিকার ও কর্তৃত্ব থাকবে। ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকবে তিন উপনদী— বিপাশা (বিয়াস), শতদ্রু (সাটলেজ়) এবং ইরাবতী (রাভি)-র জল। সামগ্রিক ভাবে সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির মোট জলের উপর পাকিস্তানের অধিকার প্রায় ৮০ শতাংশ। ভারতের মাত্র ২০ শতাংশের সামান্য বেশি।
আরও পড়ুন:
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকেই পরিস্থিতি বদলে যায়। জঙ্গিহানায় ২৬ জনের মৃত্যুতে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় তোলে ভারত। তবে পহেলগাঁও কাণ্ডে তাদের কোনও যোগ নেই বলেই প্রথম থেকে জানিয়ে আসছে পাকিস্তান। যদিও তাতে ভারতের সুর নরম হয়নি। তাদের একাধিক পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম ছিল সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা। ভারতের এই সিদ্ধান্তের পরই বিশ্ব ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন পাকিস্তানের অনেকেই। তবে সেই দাবি এ বার উড়িয়ে দিলেন বাঙ্গা। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।