E-Paper

বাজেটে বিপুল খরচের বোঝা বিজ্ঞান গবেষণায়

গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় বিদেশ থেকে আমদানি করা রাসায়নিকের উপর বেসিক কাস্টমস ডিউটি বাড়িয়ে ১৫০ শতাংশ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। বাজেটে এ হেন ঘোষণার পর থেকে মাথায় হাত পড়েছে বিজ্ঞানীদের।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৫

—প্রতীকী চিত্র।

এক লাফে ১০ শতাংশ থেকে ১৫০ শতাংশ! গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় বিদেশ থেকে আমদানি করা রাসায়নিকের উপর বেসিক কাস্টমস ডিউটি বাড়িয়ে ১৫০ শতাংশ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। বাজেটে এ হেন ঘোষণার পর থেকে মাথায় হাত পড়েছে বিজ্ঞানীদের। তাঁদের আশঙ্কা, রাসায়নিকের উপর শুল্ক এত পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়বে ভারতীয় গবেষণা ক্ষেত্র।

সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকে এমনও প্রশ্ন করেছেন, ‘‘বাজেটে কোনও লেখার ভুল হয়নি তো!’’ কারণ ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫০ শতাংশ শুল্ক কল্পনা করতে পারছেন না কেউই। জৈব (অর্গানিক) বা অজৈব (ইনঅর্গানিক), যে কোনও ধরনের রাসায়নিক আমদানির ক্ষেত্রেই এই শুল্ক বৃদ্ধি হচ্ছে। এক গবেষক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, ‘আগে যদি বিদেশ থাকা আসা কোনও রাসায়নিকের প্যাকেটের মূল্য শুল্ক-সমেত ১.১ লক্ষ টাকা পড়ত, এখন সেটার দাম পড়বে ২.৫ লক্ষ টাকা। ১ লক্ষ টাকা রাসায়নিক, ১.৫ লক্ষ টাকা কর।’ এই অবস্থায় বিজ্ঞানীদের অনেকেই সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন, বিজ্ঞান গবেষণা যদি এই পরিমাণ খরচসাপেক্ষ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে গবেষণায় ফান্ডিং বা অর্থসাহায্য আসাও বন্ধ হয়ে যাবে। সবচেয়ে বিপদে পড়বে ছোট গবেষণাগারগুলি। বিভিন্ন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ল্যাবেও গবেষণা চালানো কঠিন হবে।

গত পাঁচ বছরের রেকর্ড দেখলে, ভারতে বিজ্ঞান গবেষণার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গেই গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিকের আমদানিও বেড়েছিল। বাণিজ্য মন্ত্রকের ডেটাবেস অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে ৮ কোটি ৪৬ লক্ষ ডলার মূল্যের ল্যাব কেমিক্যাল বা রাসায়নিক আমদানি করা হয়েছিল। সেখানে ২০১৮-১৯ সালে বিদেশ থেকে কেনা রাসায়নিকের মূল্য ছিল তুলনায় অনেক কম, ৫৭ লক্ষ ২০ হাজার ডলার। মাঝের পাঁচ বছরে নিয়মিত ভাবে রাসায়নিক আমদানি বেড়েছে। ২০১৯-২০ সালে ছিল ৭৮ লক্ষ ৬০ হাজার ডলার, ২০২০-২১ সালে ১ কোটি ৪০ লক্ষ ডলার, ২০২১ -২২ সালে ২ কোটি ৪২ লক্ষ ডলার, ২০২২-২৩ সালে ৫ কোটি ১২ লক্ষ ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সবচেয়ে বেশি রাসায়নিক আমদানি করা হয়েছে আমেরিকা (২ কোটি ৯৬ লক্ষ ডলার), জার্মানি (২ কোটি ৪ লক্ষ ডলার) ও চিন (১ কোটি ৪ লক্ষ ডলার) থেকে।

‘কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিয়াল রিসার্চ’ (সিএসআইআর)-এর অন্তর্ভূক্ত ‘ইনস্টিটিউট অব জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটিভ বায়োলজি’-র প্রাক্তন ডিরেক্টর অনুরাগ আগরওয়াল তাঁর এক্স হ্যান্ডলে বিষয়টি নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে লিখেছেন, ভারতের গবেষণা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্র সরকারের এই সিদ্ধান্তে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি এ-ও আশাপ্রকাশ করেছেন, সরকার নিজের অবস্থান থেকে সরবে। এ জন্য বায়োটেকনোলজি বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং সিএসআইআর-কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আবেদনও জানান তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Union Budget 2024 Scientists Chemicals Custom Duty

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy