ছবি: পিটিআই।
রাফাল-চুক্তিতে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দেওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদীর দিকে আঙুল তুলেছিলেন রাহুল গাঁধী। আজ মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অভিযোগ তুললেন, অনিল অম্বানী গোষ্ঠীর মতো আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত সংস্থাকে ইয়েস ব্যাঙ্ক ২০১৪-র আগেই ঋণ দিয়েছিল।
মজার কথা হল, রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস রাফাল-চুক্তিতে ঠিক এই প্রশ্নই তুলেছিল যে বিপুল দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে চলা অনিল অম্বানী গোষ্ঠী এত বড় প্রতিরক্ষা চুক্তির বরাত পায় কী করে? আজ ইয়েস ব্যাঙ্কের ভেঙে পড়ার দায় কার্যত ইউপিএ-সরকারের ঘাড়েই চাপাতে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমের জানা জরুরি, আর্থিক সমস্যায় খুবই জর্জরিত কিছু কর্পোরেট সংস্থাকে ইয়েস ব্যাঙ্ক ২০১৪-র আগেই ঋণ দিয়েছে। এদের নাম হল, অনিল অম্বানী গোষ্ঠী, এসেল গোষ্ঠী, ডিএইচএফএল, আইএল অ্যান্ড এফএস ও ভোডাফোন।’’
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম আজ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘ইয়েস ব্যাঙ্কের দেওয়া ঋণের পরিমাণ ২০১৪-র মার্চে ৫৫,৬৩৩ কোটি টাকা ছিল। তা ২০১৯-এর মার্চে বেড়ে ২,৪১,৯৯৯ কোটি টাকায় পৌঁছে যায়। কেন, তার ব্যাখ্যা অর্থমন্ত্রী দিচ্ছেন না।’’ এর পরেই নির্মলা তাঁকে জবাব দিতে অনিল অম্বানী গোষ্ঠী, ভোডাফোনের নাম তোলেন। বলেন, ‘‘আমি কেন এই সব সংস্থার নাম বলছি? বিরোধীরা আমার দিকে আঙুল তুলতে চাইছে। আমি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সমস্যার কথাও বলছি না। কিন্তু দোষারোপ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ‘এর পর কোন ব্যাঙ্ক?’ সরকারকে তোপ চিদম্বরমের, দিলেন সমাধানসূত্রও
প্রথমে দু’টি বড় মাপের আর্থিক প্রতিষ্ঠান, তার পরে পিএমসি ব্যাঙ্ক, এ বার ইয়েস ব্যাঙ্কের লাটে ওঠার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আর্থিক নীতির দিকেই আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। ‘নো ইয়েস ব্যাঙ্ক’ বলে কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘মোদী ও তাঁর পরিকল্পনা ভারতের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে।’’ আজ পাল্টা জবাবে অর্থমন্ত্রী ইউপিএ-আমলেও কতগুলি ব্যাঙ্ক আর্থিক সমস্যায় পড়েছে, তার ফিরিস্তি দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, ইউপিএ-আমলে ইউনাইটেড ওয়েস্টার্ন ব্যাঙ্ক, গ্লোবাল ট্রাস্ট ব্যাঙ্ক, গণেশ ব্যাঙ্ক সমস্যায় পড়ায় অন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হয়। ইয়েস ব্যাঙ্ককে উদ্ধার করতে আজ স্টেট ব্যাঙ্ককে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা তৈরি করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। চিদম্বরমের প্রশ্ন, ‘‘কেন স্টেট ব্যাঙ্ক ইয়েস ব্যাঙ্কে লগ্নি করবে?’’ নির্মলা তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘অর্থনীতির স্বনিযুক্ত যোগ্য ডাক্তাররা এখন অনেক কথা বলছেন। তাঁদের সময়ে যে সব ব্যাঙ্ক ভেঙে পড়েছিল, সেখানে কত জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? আমরা আমানতকারীদের স্বার্থ দেখছি। প্রধানমন্ত্রী জোর দেওয়াতেই ব্যাঙ্কের আমানতে বিমার পরিমাণ এক লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy