Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পাশে পাসোয়ান, নীতীশকে তোপ মোদীর

ভোট বড় দায়! আজ ফের তার প্রমাণ মিলল বিহারের মজফ্ফরপুরে। এক সময়ের কট্টর বিরোধী রামবিলাস পাসোয়ানের সঙ্গে একই মঞ্চে বসলেন নরেন্দ্র মোদী। ১২ বছর আগে গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রেক্ষিতে যাঁর জন্য এনডিএ জোট ছেড়েছিলেন, সেই মোদীকেই এ দিন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে চিহ্নিত করলেন লোকজনশক্তি দলের প্রধান।

হাতে হাত। পটনার জনসভায় মোদী-পাসোয়ান। সোমবার। ছবি:  এএফপি।

হাতে হাত। পটনার জনসভায় মোদী-পাসোয়ান। সোমবার। ছবি: এএফপি।

স্বপন সরকার
পটনা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৮:৩৪
Share: Save:

ভোট বড় দায়!

আজ ফের তার প্রমাণ মিলল বিহারের মজফ্ফরপুরে। এক সময়ের কট্টর বিরোধী রামবিলাস পাসোয়ানের সঙ্গে একই মঞ্চে বসলেন নরেন্দ্র মোদী।

১২ বছর আগে গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসার প্রেক্ষিতে যাঁর জন্য এনডিএ জোট ছেড়েছিলেন, সেই মোদীকেই এ দিন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে চিহ্নিত করলেন লোকজনশক্তি দলের প্রধান। তিনি বললেন, “২০০২ সালের পর গুজরাতে এক বারও কোনও সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয়নি। কিন্তু বিহারে প্রতি বছর তা হচ্ছে।” কয়েক দিন আগেও অবশ্য রামবিলাস জানিয়েছিলেন, আদালতের রায়ের পর মোদীর প্রতি তাঁদের কোনও অভিযোগই নেই।

ভিড়ে ঠাসা ওই জনসভায় নাম না-করেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ শীর্ষ নেতা নীতীশ কুমারের সমালোচনায় মুখর হন মোদী। নিজের ‘অস্ত্র’ করেন রামবিলাসকেও। বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলেন, “গোধরা-কাণ্ডের পর এনডিএ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন রামবিলাস। কিন্তু তারপরও ওঁর সঙ্গে যখন দেখা হয়েছে, এমনকী জনসমক্ষেও আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। সংবাদমাধ্যমের ছবি তোলার ভয়ে লুকিয়ে পড়েননি।” রামবিলাসের মধ্যে কোনও ‘ভণ্ডামি’ নেই বলেও দাবি করেন মোদী। নীতীশকে বিঁধে তিনি বলেন, “কেউ কেউ তো আমার সঙ্গে কথা বলতে, এক টেবিলে খেতেও ভয় পান।”

বিহারে এ নিয়ে দ্বিতীয় জনসভা করলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। নভেম্বরে পটনায় সভা করেছিলেন তিনি। সেখানে জঙ্গি-বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৭ জনের। এক সময়ের জোটসঙ্গী নীতীশকে আক্রমণে সেই প্রসঙ্গও তোলেন মোদী। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ বিচরণ-ক্ষেত্র হয়ে উঠছে বিহার। এখানে জঙ্গিদের প্রতি নরম মনোভাব নেওয়া হচ্ছে।”

নভেম্বরে মোদীর সেই সভায় ছিলেন না রামবিলাস। ভোট-বাজারে নতুন সমীকরণে তিনি এখন মোদীরই সঙ্গী। উত্তর বিহারের ১৬ জেলার বাসিন্দাদের, মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার গঠনে এগিয়ে আসার বার্তা দিলেন জনসভায় সপুত্র হাজির লোকজনশক্তি প্রধান। জনতার কাছে দলিত নেতার আবেদন, “শুধু মোদীই নন, আপনারা এনডিএ-রও শক্তি। মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করতেই হবে।”

আজ তাঁর বক্তৃতায় কংগ্রেসকেও নিশানা করেন মোদী। বিজেপি শীর্ষ নেতা বলেন, “এনডিএ-র একমাত্র চিন্তা হল, দেশকে কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বিরোধীরা এখন শুধু ভাবছেন, কী করে মোদীকে রোখা সম্ভব।” কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, “এ বার কোনও ভাবেই কেউ তা করতে পারবে না। কারণ, দেশের মানুষ ইতিমধ্যেই ঠিক করে নিয়েছেন তাঁরা কী চান।”

মোদীর সমালোচনার লক্ষ্যে ছিল তৃতীয় ফ্রন্ট’ও। তাঁর কথায়, “কয়েকটি দল রয়েছে, যারা ভোটের ঠিক আগে জেগে ওঠে। নির্বাচন শেষ হলেই ফের পাঁচ বছরের জন্য ঘুমিয়ে পড়ে। কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করতে কংগ্রেসকে সাহায্য করে তারা। চেষ্টা করে সিপিএম-কেও তুলে ধরতে।”

মোদীর সভায় রাজ্যের প্রথম সারির তিন বিজেপি নেতার ‘গরহাজির’ থাকা নিয়ে জল্পনা ছড়ায়। রামবিলাসকে এনডিএ-র শরিক করায় ক্ষুব্ধ হয়েই মোদী-ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গিরিরাজ সিংহ, সিপি ঠাকুর এবং অশ্বিনী চৌবে সেখানে যাননি বলে খবর রটে।

যদিও ওই তিন নেতার দাবি, ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্যই তাঁরা জনসভায় যেতে পারেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

modi rambilas pasoan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE