নাগোথানের কাছে লাইনচ্যুত ট্রেন। ছবি: পিটিআই।
মাত্র ছ’দিনের মাথায় ফের যাত্রিবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হল। এ বার মহারাষ্ট্রের কোঙ্কন রেলের রোহা স্টেশনের কাছে। রবিবার সকালে দিওয়া-সবন্তওয়াড়ি প্যাসেঞ্জার লাইনচ্যুত হয়। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৯ জন যাত্রীর। আহত হয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি যাত্রী।
রেল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ নাগোথানে ও রোহার মাঝে একটি সুড়ঙ্গের সামনে দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দ্রুত গতিতে চলা ট্রেনটি আচমকাই বিকট শব্দ করে মাটির উপর দিয়ে কিছুটা এগিয়ে থেমে যায়। চারদিক সঙ্গে সঙ্গে ধুলো আর ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। তত ক্ষণে ইঞ্জিন-সহ চারটি কামরা লাইনের পাশে উল্টে পড়েছে। দুর্ঘটনার শব্দ আর যাত্রীদের চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে আসেন। তাঁরাই প্রথমে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান-সহ কোঙ্কন রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ‘রেলওয়ে চিফ সেফটি কমিশনার’ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। রেলমন্ত্রী মল্লিকার্জুন খাড়্গে মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন।
গত ২৯ এপ্রিল একই সঙ্গে দু’টি যাত্রিবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছিল। একটি ছিল, হাওড়াগামী দুন এক্সপ্রেস, অন্যটি অজমেঢ়-পুরী এক্সপ্রেস। সে দিন তাতে জনা দশেক যাত্রী অল্প আহত হয়েছিলেন। এ দিনের ঘটনা অবশ্য অনেক বেশি ভয়াবহ। আগের বার ট্রেন দু’টি লাইনচ্যুত হওয়ার প্রাথমিক কারণ হিসেবে রেল কর্তারা জানিয়েছিলেন, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সম্ভবত লাইন বেঁকে (বাকলিং) গিয়েছিল। তার ফলেই ট্রেন দু’টি লাইনচ্যুত হয়। কিন্তু এ দিন কী কারণে দিওয়া-সবন্তওয়াড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে এ ক্ষেত্রেও লাইনের ত্রুটির কথা মাথায় রেখেই এগোচ্ছেন রেলের তদন্তাকারীরা। রোহা স্টেশনের কাছে যে সুড়ঙ্গটি রয়েছে, ২৩ ঘণ্টা আগে সেখানে একটি মালগাড়ির কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়। তার পরেই ওই একই জায়গায় অপর এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
রেল সূত্রে খবর, কোঙ্কন রেলের ওই পথ খুবই চড়াই উতরাই। ফলে নিয়মিত মেরামতির কাজ না হলেও দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এ ক্ষেত্রে এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছ’দিন আগে জোড়া ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পরে অভিযোগ উঠেছিল, এই সময় রেলের ‘ডিট্রেসিং’-এর (দু’টি লাইনের জোড়ার মাঝে ফাঁক ঠিক আছে কি না, তা দেখা) কাজ করার কথা। সম্ভবত ওই কাজ ঠিকমতো করা হয়নি বলেই ওই দুর্ঘটনাগুলি ঘটেছে। এর ঠিক পর পরই দিওয়া-সবন্তওয়াড়ি এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ায় রেলের মেরামতি কাজ নিয়েই ফের প্রশ্ন উঠে গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy