বাজপেয়ীর পুরনো কেন্দ্রে মোদীর শক্তি প্রদর্শন। লখনউয়ে রবিবার। ছবি: এএফপি।
চলতি সপ্তাহেই লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। আর তার আঁচ পেয়েই প্রচারে জোর বাড়াচ্ছে সব ক’টি দল।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের শেষ কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহের গোড়া থেকে সাত দফায় ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। যদিও সাত দফাকে কমানো যায় কি না, তা নিয়ে শেষ মুহূর্তে আলোচনা চলছে। মে মাসের মাঝামাঝি ভোট পর্ব শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চাইছে কমিশন, যাতে নতুন সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। কিন্তু কবে হবে দিনক্ষণ ঘোষণা? সরকারি সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ আগামিকাল মায়ানমার যাচ্ছেন। ফিরবেন পরশু রাতে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তবেই ভোট ঘোষণা করতে। কমিশন সেই অনুরোধ মানলে বুধবারের আগে ভোট ঘোষণা হবে না। গত লোকসভা নির্বাচন পাঁচ দফায় সম্পন্ন হয়েছিল। এ বারে যদি ছ’দফাতেও ভোট হয়, তা হলেও সেটা হবে ভারতের ইতিহাসে সব থেকে বেশি দফার ভোট পর্ব।
কমিশন আগামী সপ্তাহে ভোটপর্ব ঘোষণা করতে পারে, এই আঁচ পেয়ে প্রচারের জোর বাড়িয়ে দিয়েছে দলগুলি। সারা দেশের মধ্যে সব থেকে বেশি আসন রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। আশিটি। সেখানে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী থেকে মুলায়ম সিংহ, সকলেই। এবং যেখানে সরাসরি আক্রমণে উঠে এসেছে দাঙ্গা প্রসঙ্গও। মুলায়ম যেমন জোর গলায় প্রচার চালিয়েছেন মোদীর বিরুদ্ধে, তেমনই মোদী পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তার।
লখনউতে মায়াবতীর তৈরি বিশেষ ময়দান, যেখানে পাঁচ লক্ষ পর্যন্ত লোক জড়ো হতে পারে, সেখানে নিজের শক্তি দেখালেন মোদী। অটলবিহারী বাজপেয়ীর লোকসভা কেন্দ্র লখনউয়ের এই সভায় এসে মোদীর মন্তব্য, “এখন তো সবে মানুষের ঢেউ উঠেছে, ভোট ঘোষণা হলে আরও উত্তাপ বাড়বে। তখন মানুষের সুনামি হবে।” ইলাহাবাদে আজ পাল্টা জনসভা করেন মুলায়ম সিংহ। সেখানে গুজরাত দাঙ্গার প্রসঙ্গ তুলে মেরুকরণের রাজনীতি উস্কে দেন তিনি। মোদীও তাঁর জবাব দিয়ে বলেন, “গুজরাতে গত দশ বছরে কোনও দাঙ্গা হয়নি। অথচ সমাজবাদী পার্টির আমলে গত এক বছরে দেড়শো দাঙ্গা হয়ে গিয়েছে।”
দিল্লির রাজনীতিতে একটা কথা চালু রয়েছে। তা হল, উত্তরপ্রদেশ যার, কেন্দ্রের কুর্সিও তার। এর অন্যথা যে হয়নি, তা নয়। তবু ৮০ আসনের এই রাজ্য এখনও সরকার গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। নব্বইয়ের দশকে এই রাজ্যে ৫০-এর বেশি আসন পেয়েছিল বিজেপি। মোদী সেই রেকর্ড ভাঙতে চান। সম্প্রতি বিভইন্ন জনমত সমীক্ষা বলছে, উত্তরপ্রদেশে এ বারে ভাল ফল করতে পারে বিজেপি। তাই কিছুই বাদ রাখছেন না মোদী। অরুণ জেটলিও বলেছেন, “দিল্লির পথ লখনউ হয়েই যায়।” এ দিনই মোদীর উপস্থিতিতে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহকে দল ফিরিয়ে নিল বিজেপি। এর লক্ষ্য মূলত দলিত ভোট।
উত্তরপ্রদেশে পৌঁছে গিয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবালও। কানপুরে তিনি সভা করে মোদী ও রাহুল গাঁধীকে আক্রমণ করেন। এই সপ্তাহে যাচ্ছেন গুজরাতেও। সেখানে গিয়ে মোদীর উন্নয়নের ‘ফানুস’ ফাটাতে চান কেজরীবাল। আবার কেজরীবালকে আটকানোর জন্য কিরণ বেদীকে বিজেপিতে আনার চেষ্টা চলছে।
রাহুল গাঁধী গত কালই বারাণসীতে বৈঠক করে এসেছেন। এমনকী, মোদীর পথ ধরে বেনজির ভাবে কাশীর বিশ্বনাথ মন্দির দর্শনও করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অণ্ণা হজারেও দিল্লিতে যৌথ সভার পর লখনউতে জনসভা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy