নিতিন গডকড়ীর বাড়িতে আড়ি পাতা প্রসঙ্গ থেকে শুরু করে সংসদকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ। এ সব বিষয় নিয়ে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে সংসদ অচল করতে নামছে কংগ্রেস।
কেন্দ্রে মোদী সরকারের মাত্র ৬০ দিন পূর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধীরা এমন কিছু বিষয় হাতে পায়নি যা আলোড়ন ফেলতে পারে। তা ছাড়া, বিমা ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির সীমা বাড়ানো থেকে শুরু করে আর্থিক সংস্কারের জন্য মোদী সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, তাতে কংগ্রেসের বিরোধিতার মুখ নেই। কারণ, ইউপিএ সরকারও একই পথে হেঁটেছিল। সে জন্যই গঠনমূলক বিরোধিতার কথা বলে মোদী সরকারের আর্থিক প্রস্তাবে সমর্থনেরই ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন আনন্দ শর্মা-জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ারা।
কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণের জন্য তিন অস্ত্রে শাণ দিচ্ছে কংগ্রেস। এক, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর বাড়িতে আড়ি পাতা প্রসঙ্গ। ওই ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ায় গত কালই গডকড়ী বলেছিলেন বিষয়টি ‘কাল্পনিক’। কিন্তু কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র অজয় মাকেন এ দিন বলেন, “হয় মন্ত্রী বলবেন আড়ি পাতা হয়েছে, নইলে বলবেন হয়নি। কাল্পনিকের অর্থ কী?” কংগ্রেসের প্রশ্ন, আড়ি পাতা নিয়ে কেন নাগপুরে নালিশ করলেন নিতিন? মাকেনের অভিযোগ, “গুজরাতে আড়ি পাতার ঘটনা ঘটেই থাকে। সেখানকার আই জি পুলিশ হলফনামা দিয়ে আদালতে বলেছেন, গুজরাত সরকারের নির্দেশেই হারিন পান্ড্য-সহ বহু মন্ত্রী-আমলার ফোনে আড়ি পেতেছে পুলিশ। গুজরাতের সেই মানুষরাই তো এখন দিল্লিতে!” গডকড়ীর বাড়িতে আড়ি পাতা কাণ্ডে কালই তদন্ত দাবি করেছিলেন মনমোহন সিংহ। আজও কংগ্রেসের তরফে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করা হয়েছে।
দ্বিতীয় অভিযোগ, মিথ্যে তথ্য দিয়ে সংসদকে বিভ্রান্ত করেছেন মোদী। গত ১১ জুন সংসদে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি কৃষকদের জন্য ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু আজ কংগ্রেস গুজরাত সরকারের বিজ্ঞপ্তি বের করে দেখিয়েছে, কৃষকদের মাত্র ৮ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছে। মাকেন বলেন, সংসদে অসত্য কথা বলার অভিযোগে মোদীর বিরুদ্ধে অধিকার ভঙ্গের নোটিশ দেবে কংগ্রেস।
পাশাপাশি, সম্প্রতি গুজরাত সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের যে অভিযোগ এনেছে সিএজি, তা নিয়েও মোদীকে কাঠগড়ায় তুলতে চাইছে কংগ্রেস। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, টু-জি মামলায় ক্যাগ রিপোর্টকে অস্ত্র করে গোটা দেশে শোরগোল ফেলেছিল বিজেপি। এখন সেই ক্যাগ রিপোর্টই বলছে, গুজরাতে মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২৯ হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে বেআইনি ভাবে পাইয়ে দেওয়া হয়। এর তদন্ত হওয়া উচিত।
যদিও কৃষকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা বা ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে বিজেপি আজ কোনও প্রতিক্রিয়া জানায় নি। কিন্তু এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর গডকড়ী বলেছেন, তাঁর বাড়িতে আড়ি পাতা হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহও মন্তব্য করেছেন, অভিযোগ ভিত্তিহীন। হয়তো বিষয়টি সেখানেই থেমে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, মোটেই নয়। ইউপিএ জমানায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দফতরে আড়ি পাতার অভিযোগ যখন উঠেছিল, বিজেপি তখন হইচই করে। সে সময়ে কেন্দ্র তদন্ত করে সংসদে রিপোর্ট পেশ করেছিল। এ বারও তা করতে হবে মোদী সরকারকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy