ছবি রয়টার্স।
গত বছর অক্টোবরের শেষার্ধ। ৪ কোটি পেরিয়েছিল গোটা বিশ্বের করোনা সংক্রমণ। এর পরে তিন মাসও পুরো কাটেনি। সংক্রমিতের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। ৯ কোটি ছুঁতে চলেছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা (৮ কোটি ৯৭ লক্ষের বেশি)।
মাঝের ক’টা মাসে প্রতিষেধক তৈরি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র মিলেছে। টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে প্রথম সারির দেশগুলোতে। কিন্তু সংক্রমণ কমার তো লক্ষণ নেই, বরং ঝড়ের গতিতে বেড়েই চলেছে। সংক্রমণ তালিকার শীর্ষে আমেরিকা। ২ কোটি ২৪ লক্ষ সংক্রমণ। মৃত্যুতেও তারা প্রথম। ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার প্রাণ গিয়েছে করোনায়। দৈনিক সংক্রমণই ২ লক্ষের আশপাশে ঘুরছে। সেই সঙ্গে রেকর্ড সংখ্যক দৈনিক মৃত্যু (গড়ে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি)। সংক্রমণ বেড়েছে ইউরোপেও। ব্রিটেন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ইউরোপের অন্য দেশগুলো ব্রিটেনকে ‘বৃদ্ধ দেশ’ হিসেবে ব্যঙ্গ করলেও সংক্রমণ বাড়ার অন্যতম কারণ নতুন স্ট্রেন। আজ কোভিড টিকা নিয়েছেন ব্রিটেনের নবতিপর রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ ও তাঁর স্বামী ফিলিপ।
ব্রিটেনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করেও ইউরোপের দেশগুলোতে নয়া স্ট্রেন সংক্রমণ আটকানো যায়নি। ফ্রান্স, জার্মানিতে কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। কানাডাতে দীর্ঘ লকডাউনের পরে শোনা যাচ্ছে কার্ফু জারি করা হবে। সন্ধে থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত কার্ফু চলবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোলেই বড় অঙ্কের জরিমানা। ও দিকে, চিন আবার দু’টি শহরকে ‘তালাবন্ধ’ করেছে। বেজিংয়ের দক্ষিণে শহর দু’টিতে সবরকম পরিবহণ বন্ধ। বাকি বিশ্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে তাদের।
তিনটি প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দিয়েছে ব্রিটেন। সাড়ে ছ’কোটি দেশবাসীর জন্য ৩৭ কোটি ডোজ় কেনার চুক্তি সেরে ফেলেছে তারা। পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। গত কাল একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বাজারে চলে আসা প্রতিটি কার্যকরী প্রতিষেধককে শীঘ্রই ছাড়পত্র দিয়ে দেবেন ভাবী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি প্রথম ফাইজ়ার প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দেয় আমেরিকা। তার কিছু দিনের মাথায় মডার্নার তৈরি প্রতিষেধকটিকেও ছাড়পত্র দেয় তারা। কিন্তু এ পর্যন্ত টিকাকরণের গতি একেবারেই মন্থর। ফ্লরিডা-সহ বহু প্রদেশেই অভিযোগ, প্রবীণেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও প্রতিষেধক পাচ্ছেন না। কাজ করছে না হেল্পলাইন। সরকারের ঘরেই পড়ে হাজার হাজার ডোজ়। বাইডেনের মুখপাত্র টিজে ডাকলো বলেন, ‘‘নয়া নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের মতে, প্রতিষেধক দেশের সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজে আরও গতি আনতে হবে। একই সঙ্গে পৌঁছে যাওয়া টিকা মানুষকে দেওয়ার কাজেও জোর দিতে হবে। তিনি মনে করেন, বাজারে উপস্থিত নিরাপদ ও কার্যকরী প্রতিটি ভ্যাকসিনকে দ্রুত ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া উচিত।’’
এ দিকে, ‘ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সুস্থ হয়ে ফেরা করোনা-রোগীদের চার জনের মধ্যে তিন জনের শরীরে ছ’মাস পরেও করোনার উপসর্গ রয়ে গিয়েছে। উহানের কয়েকশো রোগীকে নিয়ে গবেষণা চালান বিজ্ঞানীরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ক্লান্তি ও পেশির যন্ত্রণা থেকে গিয়েছে ছ’মাস পরেও। অনেকে আবার নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy