ভারতে নতুন দূত হয়ে আসছেন তাইওয়ানের প্রবীণ কূটনীতিক বাউসুয়ান গের।—ছবি সংগৃহীত।
চার দিন আগে তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তবে কি চিনের সঙ্গে সীমান্তের জট নিয়ে চাপে থাকা দিল্লি শি চিনফিং সরকারকে চটাতে চাইছে না?
কূটনীতিকদের মতে, এই মুহূর্তে চিনকে গালওয়ান উপত্যকা থেকে ফেরত পাঠানো ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা সেনাদুর্গ ভেঙে দেওয়াই দিল্লির একমাত্র লক্ষ্য। অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের (স্পেশ্যাল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ) পুরনো সীমান্ত মেকানিজমটি চালু করা হয়েছে। চেষ্টা চলছে কোনও অশান্তি ছাড়াই লাদাখ সংলগ্ন সীমান্তকে এপ্রিল মাসের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। এ অবস্থায় দলাই লামার সঙ্গে প্রকাশ্যে সখ্য দেখিয়ে বেজিংয়ের সঙ্গে নতুন করে বিরোধের দরজা খুলতে চাইছে না দিল্লি।
তবে তিব্বতের তাসটি আস্তিনে লুকিয়ে রাখলেও চিনের আর এক দুর্বল স্নায়ুকেন্দ্র তাইওয়ানের সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত স্তরে সম্পর্ক একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। অবশ্য এ ক্ষেত্রেও ঢাকঢোল না-পিটিয়ে। ‘এক চিন নীতি’-কে প্রকাশ্যে পদদলিত করে কিছু করার কথা আদৌ ভাবছে না মোদী সরকার। কিন্তু সূত্রের খবর, এ বিষয়ে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে নতুন দূত হয়ে আসছেন তাইওয়ানের প্রবীণ কূটনীতিক বাউসুয়ান গের। গত সাত বছর ধরে নয়াদিল্লিতে এই পদে যিনি ছিলেন, সেই তেন চুং কুয়াং উপবিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাচ্ছেন।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, তাইওয়ানের দিক থেকে এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভারতের প্রতি বার্তা দেওয়া হল, সম্পর্ককে নতুন চেহারা দেওয়ার। বাউসুয়ান গের তাইওয়ানের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ডিজি হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। আমেরিকা এবং ব্রিটেনেও তিনি দৌত্য করেছেন। চিনের সঙ্গে তাইওয়ানের ধারাবাহিক টানাপড়েনের মধ্যে তিনি বহু ক্ষেত্রেই বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন বলে খবর। তাইওয়ানের সংবাদ সংস্থায় সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অদূর ভবিষ্যতে তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রাধিকার হয়ে দাঁড়াবে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে নয়াদিল্লি তার নীতিতে তাইওয়ানকেও শামিল করুক, এই দাবি সে দেশের বিভিন্ন স্তর থেকে ক্রমশ বাড়ছে। গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় রক্তপাতের পর খোলাখুলি চিনের সম্প্রসারণবাদের নিন্দা করেছে সে দেশের সংবাদমাধ্যম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy