সকালে উঠে বর্জ্য মু্ক্ত হওয়ার জন্য যে কমোড ব্যবহার করেন, এটি সে কাজে ব্যবহার করা যাবে পুরোদস্তুর। শুধু জলের সংযোগ নিলেই হবে। এতে সিস্টার্ন, জেট শাওয়ার সবই আছে। রয়েছে মলকে নল পথে যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও। তবে পুরোটাই সোনার। ১০১ কেজি সোনার।
খাঁটি সোনা অর্থাৎ ২৪ ক্যারাট না হলেও এটি তৈরি হয়েছে ১৮ ক্যারেট সোনা দিয়ে। এই মানের সোনা গয়না বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য তা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কমোড। যার ওজন ১০১ কেজি। শুক্রবার তা বিক্রি হল নিউ ইয়র্কের সদবির নিলাম ঘরে। দাম কত উঠল, তার জবাব জানার আগে জেনে নেওয়া যাক এই কমোডটি আসলে কী?
আসলে এটি একটি শিল্পকলা। শিল্পী ইতালির মওরিজ়িও ক্যাটেলান। ছবি: সংগৃহীত
সোনার কমোডের নাম ‘আমেরিকা’। এটি কাজ কমোডের মতো করতে পারলেও আসলে এটি একটি শিল্পকলা। যে শিল্পের শিল্পী ইতালির মওরিজ়িও ক্যাটেলান। মওরিজ়িওর শিল্প বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রে থেকেছে। তাঁকে বলা হয় প্রোভোকেটিভ আর্টিস্ট। অর্থাৎ এমন শিল্পী যিনি ভাবনায় উসকানি দেন। ভাবতে বাধ্য করেন বা না-ভাবিয়েদের চমকে দেন।
এর আগে মওরিজ়িও তেমন চমকে দিয়েছিলেন দেওয়ালে সেলোটেপে কলা এঁটে দিয়ে। সেটিই ছিল তাঁর শিল্প। সেই শিল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছিল গোটা বিশ্বে। মওরিজ়িও জানিয়েছেন, তাঁর এই সোনার কমোড আমেরিকাও তেমনই এক গোপন বার্তাবাহী শিল্প। শিল্পীর কথায়, ‘‘ওই সোনার কমোড আমেরিকা আসলে সম্পদের বাহুল্যকে ব্যঙ্গ করে তৈরি।’’
মওরিজ়িও চমকে দিয়েছিলেন দেওয়ালে সেলোটেপে কলা এঁটে দিয়ে। সেটিই ছিল তাঁর শিল্প। ছবি: সংগৃহীত
বিষয়টিকে আরও ব্যাখ্যা করে শিল্পী জানিয়েছেন, ‘‘তুমি যা-ই খাও না কেন ২০০ ডলারের লাঞ্চ হোক বা ২ ডলার দিয়ে রাস্তা থেকে কেনা হট ডগ। যাবে তো সেই কমোডেই।’’
এহেন সোনার কমোড দু’খানি তৈরি করেছিলেন তৈরি করেছিলেন মরিজ়িও। ২০১৬ সালে। একটি কিনেছিলেন বিরল জিনিসের এক সংগ্রাহক। অন্যটি রাখা ছিল নিউ ইয়র্কের গাগেনহেইম মিউজ়িয়ামে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক বার ওই কমোড নেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু ট্রাম্প তা নেননি। এই ঘটনার কিছু দিন পরে ওই সোনার কমোডটি মিউজ়িয়াম থেকে চুরি যায়। যা আর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার সেটি নিলামে উঠেছিল নিউ ইয়র্কের সদবির নিলাম ঘরে। সোনার কমোডটি বিক্রি হয়েছে ১ কোটি ২১ লক্ষ টাকায়।