চোখ খোলার পর থেকেই অফিসের তাড়াহুড়ো শুরু। বাড়ি ফিরে ক্লান্ত শরীরে ঘুম। ঘুম ভাঙতে না ভাঙতেই আবার অফিস। কর্মজীবনের চাপে ব্যক্তিজীবনের পরিসর ক্রমশই ছোট হচ্ছে। অফিসই হয়ে উঠছে ঘরবাড়ি। বেসরকারি চাকরিজীবীদের দিনের বেশির ভাগটাই কাটে কর্মক্ষেত্রে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লোকজন যত ক্ষণ না বাড়িতে থাকেন, তার চেয়ে বেশি সময় কাটান সহকর্মীদের সঙ্গে, অফিসে। ফলে, কখনও না কখনও সংসারের অশান্তি, মনের কথা, অভাব-অভিমান সবটাই বলে ফেলছেন সেখানে? মনের অভিব্যক্তি চেপে রাখতে না পারার মাশুল কিন্তু গুণতে হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে কোন ধরনের বিষয়গুলি নিয়ে বেশি আলোচনা না করাই ভাল?
ব্যক্তিগত পরসির: সাংসারিক সমস্যা, সম্পর্কের রসায়ন, পারিবারিক কথা কর্মক্ষেত্রে সকলের কাছে না বলাই ভাল। কারণ, মন খুলে কথা বলতে গিয়ে আপনি অফিসে চর্চার বিষয় হয়ে যেতে পারেন। সহকর্মীদের কেউ যদি তেমন আস্থাভাজন হতে পারেন, তাঁকে সুখ-দুঃখের কথা বলা যেতে পারে। তবে ব্যক্তিজীবনের সব তথ্য সকলের কাছে না বলাই ভাল।
আরও পড়ুন:
অপছন্দ: অফিসের সকলকেই ভাল লাগবে বা পছন্দ হবে, এমনটা না-ও হতে পারে। কাউকে পছন্দ নয়, সেই কথাটিও আর পাঁচজনের কাছে বলে বেড়ানো অর্থহীন। ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ দিয়ে কাজের স্বার্থে সকলের সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ক বজায় রাখাই বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। নিজের অপছন্দের কথাটি বিশেষ ব্যক্তির কানে গেলে পেশাগত সম্পর্কও ছিন্ন হতে পারে বা তাতে প্রভাব পড়তে পারে।
নতুন সুযোগ: অফিসের পরিবেশ পছন্দ হচ্ছে না বা অন্য কোনও সংস্থা থেকে আরও ভাল সুযোগ এসেছে— দুই বিষয়ই সঠিক সময়ের আগে বলে ফেলা অনুচিত। কাজের পরিবেশ ভাল না লাগলে, নিজের মতো করে অন্য কোথাও কাজের চেষ্টা করতে পারেন। নতুন কোনও সংস্থা থেকে কাজের প্রস্তাব পেলেও যত ক্ষণ না সেটি নিশ্চিত হচ্ছে, তত ক্ষণ চুপ করে থাকাই শ্রেয়। না হলে পরিস্থিতি ক্ষেত্রবিশেষে জটিল হতে পারে।
কাজ নিয়ে কথা: ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ দিয়েছেন, আর সেটা পছন্দ হয়নি? এ নিয়েও আর পাঁচজনের সঙ্গে আলোচনা করাটা পেশাদার মানসিকতার পরিচয় নয়। বরং নির্দিষ্ট কাজ নিয়ে সমস্যা থাকলে সেটি ব্যক্তিগত স্তরে রেখে যাঁর সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন, তাঁর সঙ্গেই করা উচিত। সরাসরি সমস্যার কথা জানানো যেতে পারে, তবে সেটি যে সকলের সামনেই করতে হবে, তা কিন্তু নয়।
সমাজমাধ্যম: ব্যক্তিজীবনে কী করছেন না করছেন, সমাজমাধ্যমে সেই সব ‘স্টেটাস’ দেখলে কর্মক্ষেত্রেও তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবেই। সমাজমাধ্যমে কোন পোস্টটি কার সঙ্গে শেয়ার করবেন, সেই বিষয়েও বিবেচনা ক্ষেত্রবিশেষে কাজে আসতে পারে।