Advertisement
E-Paper

মুঘল আমলের কলকাত্তাইয়া বাঙালি খানার স্বাদ সিক্স বালিগঞ্জ প্লেসে

এই রেস্তোরাঁয় সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের স্পেশাল ১৩ পদ দিয়ে সাজানো হয়েছিল বিশেষ মেনু । ঠাকুমা কিরণ দেবীর নামে বাঁধাকপির কিরণ কোপ্তা, ছানার মহারানী, আম নারকেলের চাটনি, খেজুর রসের পায়েস, সাবর্ণ প্রাণ মোহিনী, সাবর্ণ দামোদর ভোগ, পালং দিয়ে মুগ ডাল সহ আরও অনেক কিছু।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৯:১৪
সাবর্ণ দামোদর ভোগ।

সাবর্ণ দামোদর ভোগ।

এই রেস্তোরাঁয় সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের স্পেশাল ১৩ পদ দিয়ে সাজানো হয়েছিল বিশেষ মেনু । ঠাকুমা কিরণ দেবীর নামে বাঁধাকপির কিরণ কোপ্তা, ছানার মহারানী, আম নারকেলের চাটনি, খেজুর রসের পায়েস, সাবর্ণ প্রাণ মোহিনী, সাবর্ণ দামোদর ভোগ, পালং দিয়ে মুগ ডাল সহ আরও অনেক কিছু। কলকাতার পত্তনকারীদের হেঁসেল থেকে কিছু রেসিপি দিলেন রাজর্ষি রায়চৌধুরী।

নিরামিষ পাঁঠার মাংস

কেমন যেন সোনার পাথরবাটি অথবা কাঁঠালের আমসত্ত্বর মত শুনতে লাগছে ,তাই না? কিন্তু স্বাদে যে অমৃত। আসলে বলির মাংসে পেঁয়াজ রসুন দেওয়া মানা। তবে সে রামও নেই,… কিন্তু রাজত্ব আছে। মানে বলি বন্ধ তো কী হয়েছে! পেঁয়াজ রসুন বিনে মাংস রান্না হয় এখনও। খাঁটি গাওয়া ঘি আর গরম মশলার সুঘ্রাণে গরমাগরম ভাতের সঙ্গে দুর্দান্ত। আর যদি হয় ঘিয়ে ভাজা লুচি তা হলে তো জবাব নেই।

উপকরণ

কচি পাঁঠার মাংস: ৬০০ গ্রাম

হলুদ গুঁড়ো: ২চামচ

চারমগজ বাটা: ২ চামচ

আদা বাটা: ২ চামচ

গোটা জিরে: অল্প

তেজপাতা: ৪ টি

টক দই: আধ কাপ

গরম মশলা গুঁড়ো: ১/২ চামচ

ধনে গুঁড়ো: ১ চামচ

জিরে গুঁড়ো: ১ চামচ

লঙ্কা গুঁড়ো: ১ চামচ

গাওয়া ঘি: ২ চামচ

কাজু বাটা: ১ চামচ

টম্যাটো কুচি: ১ টি মাঝারি

সর্ষের তেল: ৪ চামচ

কাঁচা লঙ্কা: ৪ টি ( ২টি বাটা)

নুন: স্বাদ অনুযায়ী

প্রণালী

মাংস ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে দই, নুন, সর্ষের তেল, ও গুঁড়ো মশলা মাখিয়ে রাখতে হবে। এর সঙ্গে অর্দ্ধেক চার মগজ ও কাজু বাটা মাখিয়ে ঘণ্টা খানেক ম্যরিনেড করে রাখতে হবে। কড়ায় তেল গরম করে জিরে, তেজপাতা ও কাঁচা লঙ্কা ফোড়ন দিয়ে সুগন্ধ বেরোলে টম্যাটো কুচি, আদা বাটা ও সামান্য ধনে গুঁড়ো দিয়ে সামান্য নুন মিশিয়ে অল্প আঁচে কষে নিন। এ বার হলুদ ও লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে ম্যারিনেড করা মাংস দিন। ঢিমে আঁচে ভাল করে নেড়ে চেড়ে অল্প গরম জল দিয়ে চাপা দিয়ে রাখুন। আঁচ কমিয়ে রাখতে হবে। মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে যেন তলা লেগে না যায়। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চারমগজ আর কাজু বাদাম বাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিয়ে ঘি গরম মশলা ছড়িয়ে চেরা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে চাপা দিন। গরমাগরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

ক্ষীর পিঠা

সাবর্ণ প্রাণমোহিনী

ঘিয়ে ভাজা রসে ভরা পটলে এক কামড় দিতেই মুখ ভরা অমৃত। সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের বধু কমলিনী দেবী এই প্রাণমোহিনী মিষ্টি উদ্ভাবন করেন উনবিংশ শতাব্দীতে। খেরোর খাতায় লেখা সেই রেসিপি উদ্ধার করে এ কালের বধূরাও তৈরি করছেন সেই অসাধারণ মেঠাই।

উপকরণ

বড় পটল: ৬টি

গাওয়া ঘি: ২ বড় চামচ

দুধ:১.৫ লিটার

কিসমিস ও কাজুবাদাম: ২৫ গ্রাম করে

খোয়া ক্ষীর: ১৫০ গ্রাম

জাফরান: ১/২ গ্রাম

গোলাপ জল: সামান্য

চিনির রসের জন্যে: ৫০০ গ্রাম চিনি

প্রণালী

দু’ কাপ জলে চিনি মিশিয়ে ফুটিয়ে ঘন করে চিনির রস বানিয়ে রাখুন। পটল ভাল করে ধুয়ে খোসা চেঁছে নিয়ে ভিতর থেকে দানা বের করে নিতে হবে। পটল যেন ভেঙে না যায় খেয়াল রাখুন। এরপর দুধে জাফরান দিয়ে ফুটিয়ে ঘন করে ক্ষীর তৈরি করে নিন। প্যানে ঘি দিয়ে কাজু, কিসমিস, সামান্য চিনি দিয়ে নেড়েচেড়ে খোয়া ক্ষীর ও ক্ষীর মিশিয়ে পুর তৈরি করে নিন। পটল ঘিয়ে অল্প করে ভেজে তুলে রাখুন। ঘিয়ে ভাজা পুর পটলের মধ্যে পুরে দিন। এ বার পটলের গায়ে কাঁটা দিয়ে ছোট ছিদ্র করে চিনির রসে ডুবিয়ে ফুটিয়ে রাখুন। পটল সেদ্ধ হয়ে গেলে রস থেকে তুলে নিয়ে পটলের ওপর ক্ষীর গুঁড়ো ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

সাবর্ণ প্রভাসিনী হালুয়া

হালুয়া। এ দিকে না আছে সুজি, না আছে গাজর! এলাচের সুগন্ধে ভরা রাঙা আলু আর ছানার মিলমিশে আছে খাঁটি গাওয়া ঘিয়ের গন্ধ। অন্য রকম স্বাদের এই হালুয়া বাড়িতে বানানো মোটেই কঠিন নয়।

উপকরণ

রাঙা আলু: সেদ্ধ করে চটকে নেওয়া ২ কাপ

ছানা: ১ কাপ মিহি করে চটকে নেওয়া

চিনি: ১/২ কাপের একটু বেশি

ঘন দুধ: ১ কাপ

এলাচ গুঁড়ো: ১/২ চামচ

তেজ পাতা: ১ টি

গাওয়া ঘি: বড় ২ চামচ

প্রণালী

কড়াইতে ঘি গরম করে তেজপাতা ফোড়ন দিন। এর মধ্যে ছানা ও সেদ্ধ রাঙা আলু দিয়ে কাঠের হাতা দিয়ে ভাল করে নাড়ুন। কিছুক্ষণ পরে দুধ দিয়ে নেড়ে নিয়ে চিনি মেশান। মাখা মাখা হলে নামিয়ে বরফির আকারে গড়ে পরিবেশন করুন।

পুরনো দিনের খাস বাঙালি রান্নার স্বাদ পাবেন প্রতি পদে। রেসিপির সঙ্গে সামান্য দু-একটা জিনিসের মিলমিশ এই সব পদকে এক অন্য মাত্রা দিতে পারে। আপন মনের মাধুরী আর যত্ন।

ছবি: অনির্বাণ সাহা।

Recipes 6 Ballygunge Place Restaurant
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy