এ কি যে সে রোগ! এক্কেবারে রাজ অসুখ। ও পাড়া মাড়িয়েছেন কী রোগের জালে ধরা দিয়েছেন। তাও আবার একটা, দু’টো নয়, গুচ্ছ গুচ্ছ! ইন্টারনেটের কল্যাণে, মুঠো ফোনের দৌলতে এই সব রোগে কম বেশি ভুগছি আমরা সবাই।পাড়ার নাম হোয়াটস্অ্যাপ। সনাতনী মোবাইল মেসেজের রাস্তা ভুলে যার অলিগলিতে উঁকি দিচ্ছে আট থেকে আশি। মাথায় বেলটা পড়বে জেনেও বেলতলায় নেড়ার, থুড়ি নেড়াদের এখন নিত্য আনাগোনা। হোয়াটস্অ্যাপের যে আট অসুখ ছড়াচ্ছে মহামারীর মতন তার ছোট্ট অনুসন্ধান।
১) ভেবে ছিলেন, বেশ গুছিয়ে প্রেমের কবিতা লিখে প্রেমিকাকে পাঠাবেন। গ্রুপের ঘনঘটায়, হাজার খানেক নামের চাপে সেই মেসেজ পোস্ট করলেন অফিস গ্রুপে। কেলেঙ্কারির এক শেষ! এই ধরনের ভুল কি আপনি প্রায়ই করেন? জানেন কি ভুল গ্রুপে ভুল পোস্ট সিনড্রোমে ভোগেন প্রায় সবাই।
২) আগের পোস্ট ভাল করে না পড়েই ভুলভাল মন্তব্য করার ডিসট্রোফিতে আক্রান্ত হচ্ছেন একের পর এক হোয়াটস্অ্যাপ ইউজার।
৩)একই মেসেজ, জোকস, ছবি বার বার বন্ধুদের শেয়ার করে আপনি যদি ভাবেন আপনার সেন্স অব হিউমারে অন্যরা হেব্বি মুগ্ধ হচ্ছেন, তা হলে কিন্তু একেবারে উল্টোটা ভাবছেন। বার বার এক মেসেজে অন্যদের বিরক্ত করার নিউরোসিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান।
৪)বহু ক্ষণ আগেই বন্ধুকে হোয়াটস্অ্যাপে মেসেজ করে রেখেছেন। দু’টো নীল টিক বুঝিয়ে দিচ্ছে বন্ধুটি মেসেজটি পড়েও ফেলেছেন সেই কখন। কিন্তু জবাব দেওয়ার বালাই নেই। ভোর সাতটায় করা প্রশ্নের উত্তর এসে পৌঁছয় সন্ধে ৭ টা ৫৩-য়। দোস্তের উপর রাগে গড়গড় করার আগে জেনে রাখুন উত্তর দেওয়ার লেটলতিফ সাইকোসিসে ভোগেন অন্তত লাখ খানেক ইউজার।
৫)রাজনৈতিক হোক বা ধর্মমত, বিরুদ্ধ পথগামী হলেই, রে রে করে ওঠা, সাত দিনের ফাঁসি আর তিন দিনের জেলের ভার্চুয়াল নিদানের ছড়াছড়ি। এই অসহিষ্ণু ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি হোয়াটস্অ্যাপ রোগের তালিকায় নবতম সংযোজন। যদিও যে রেটে এই অসুখ ছড়িয়ে পড়ছে অচিরেই তা লিস্টে এক নম্বরে পৌঁছে যাবে।
৬)এই ধরুন আপনি আপনার বন্ধুর সঙ্গে রোজ রোজ হেব্বি আড্ডায় মশগুল, হঠাত্ দেখলেন বন্ধুটি হোয়াটস্অ্যাপ থেকে একেবারে হাওয়া। প্রোফাইলটি টিকে থাকলেও বিনা নোটিসে সপ্তাহখানেক বা তারও বেশি সময় ‘শীতঘুমের’ যাওয়ার সংখ্যাটিও কিন্তু কম নয়। এই আছি, এই ভোঁ-ভাঁন্টিয়েসিসের ভোগার সংখ্যাও কিন্তু নেহাত কম নয়।
আরও পড়ুন
চটজলদি ইমেলের জবাব পেতে মাথায় রাখুন এই ৬ টিপ্স
৭) বোকা বোকা অর্থহীন গুচ্ছ গুচ্ছ মিম, ছবি ফরওয়ার্ড করার কমপালসিভ সিনড্রোম, অন্যতম ভয়ঙ্কর হোয়াটস্অ্যাপ অসুখ।
৮) m wtng fr u. বুঝলেন নাতো! কথাটি আসলে I am wating for you কিন্তু হোয়াটস্অ্যাপের দয়ায় অতি সাধারণ শব্দ বা বাক্যকে সক্ষিপ্তকরণোসিসে ভুগি আমরা সবাই। হ্যাঁ, আপনিও।
এই তো গেল হোয়াটস্অ্যাপ রোগের আটকাহন। তাই বলে কি নেড়া বেল তলায় যাবেই না? আলবাত যাবে। খালি মাথা বাঁচানোর নিজ দায়িত্বটা নিজের কাছে রেখেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy