Advertisement
E-Paper

নববর্ষে মাঝ আকাশে বিমানযাত্রীদের জন্য ভুরিভোজ

বৃহস্পতিবার, বাংলা নববর্ষের জন্য এই ভুরিভোজের ব্যবস্থা করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই প্রথম নয়। এর আগেও নববর্ষে নারকেল দেওয়া ছোলার ডাল, মাংসের চপের মতো বাঙালিদের প্রিয় খাবার দেওয়া হয়েছে আকাশে। প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর চার দিন ধরেও মাঝ আকাশে চলে পোলাও-মুরগি-মাটন।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৬ ২৩:৩৬

মাঝ আকাশে মেন্যুতে হিংয়ের কচুরি, চিকেন কবিরাজি।

বৃহস্পতিবার, বাংলা নববর্ষের জন্য এই ভুরিভোজের ব্যবস্থা করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। এই প্রথম নয়। এর আগেও নববর্ষে নারকেল দেওয়া ছোলার ডাল, মাংসের চপের মতো বাঙালিদের প্রিয় খাবার দেওয়া হয়েছে আকাশে। প্রতি বছরই দুর্গাপুজোর চার দিন ধরেও মাঝ আকাশে চলে পোলাও-মুরগি-মাটন।

এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে অন্য মেট্রো শহরে, পোর্ট ব্লেয়ারে এবং ঢাকা ও কাঠমান্ডু— এই দুই বিদেশি শহরে যে সব বিমান যাত্রীদের নিয়ে উড়বে, সে সব বিমানেই থাকবে এই বিশেষ মেনু। যাত্রীদের খুশি করতেই এই ব্যবস্থা বলে জানা গিয়েছে।

অথচ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য-সচেতন মানুষ মশলাদার খাবার এমনিতেই বর্জন করছেন। আকাশে, মাটি থেকে ৩০-৩৫ হাজার ফুট উপরে তা একেবারেই বর্জন করার পরামর্শ দিচ্ছেন ডায়েটিশিয়ানরা। অন্য ভাবে ভাবতে শুরুও করেছে বিমানসংস্থাগুলি।

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট মারভিন ট্যান জানাচ্ছেন, মশলাদার খাবার নিয়ে যাত্রীদের তরফ থেকেই আপত্তি এসেছে। আমরা এখন এমন খাবার তৈরির দিকে নজর দিচ্ছি যা সুস্বাদু, আবার স্বাস্থ্যকরও। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছে বিমানসংস্থা। ৮ জন আন্তর্জাতিক মানের শেফ-এর পরামর্শে বানানো হচ্ছে পুষ্টিকর, ভিটামিন ও খনিজে পুষ্ট খাবার। স্যালাড, কম ক্যালরির রুটি, পাউরুটি, সতেজ ফল, সব্জি, মাছ, আমন্ড, আখরোট, বীনস, বরবটি— এই সব অগ্রাধিকার পাচ্ছে খাবারের তালিকায়।

প্রথম দিকে বেছে নেওয়া হচ্ছে দূরপাল্লার উড়ান। যেখানে ৪০-৪৫ হাজার ফুট উপরে মানুষকে প্রায় ১০-১২ ঘণ্টা কাটাতে হয়। বিমানসংস্থার যুক্তি, এই ধরনের দূরপাল্লার উড়ানে শরীরে জলাভাব ও ক্লান্তি লক্ষ্য করা যায়। শেফ-দের পরামর্শে তাই এমন ধরনের খাবার তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে জলাভাব বা ক্লান্তি কম হয়।

ডায়েটিশিয়ান রেশমী রায়চৌধুরীর কথায়: ‘‘দূরপাল্লার উড়ানে একটানা অনেকক্ষণ শরীরের নড়াচড়া প্রায় হয় না বললেই চলে। উচ্চতা ও বায়ুচাপের হেরফেরে এই অবস্থায় বদহজম ও জলাভাব দেখা দেয়। হজমে সাহায্য করে শরীরের এমন এনজাইম-ও তখন কাজ করে না। এর মধ্যে মশলাদার খাবার একেবারেই বর্জন করা উচিত।’’

সে পথে হাঁটছে কলকাতা থেকে উড়ান চালানো এমিরেটস, কাতার, ইতিহাদ, জেটের মতো বিমানসংস্থাগুলিও। যে পাঁচতারা হোটেল থেকে বিমানে খাবার সরবরাহ করা হয় তার এক কর্তা জানান, সাধারণত ইন্ডিগো, স্পাইসজেটের মতো সস্তার বিমানে যাত্রীদের খাবার কিনে খেতে হয়। ওই সংস্থাগুলির তালিকায় তাই স্যান্ডউইচ, কেক-এর মতো শুকনো খাবারই থাকে। বাকি বেশির ভাগ সংস্থায় এখন আলাদা করে ডায়াবেটিক খাবার, কম-নুন দেওয়া খাবার পছন্দ করার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে, প্রধানত উচ্চ শ্রেণির যাত্রীরা সেই সুবিধা পান এবং টিকিট কাটার সময়েই ওই খাবার বেছে নিতে হয়।

এমিরেটসও জানাচ্ছে, প্রায় ৩০ ধরনের খাবারের মেনু রয়েছে তাদের। বাচ্চাদের জন্য বেবি-মিল থেকে শুরু করে কম-ক্যালরি খাবার, কম-কার্বোহাইড্রেড খাবার, তালিকাটি দীর্ঘ। এখানেও বেছে নেওয়ার সুবিধা থাকে।

প্রশ্ন উঠেছে, দূরপাল্লার উড়ানের যাত্রীদের জন্যই শুধু স্বাস্থ্যকর খাবার, না কি ভারতের অভ্যন্তরে দুই-আড়াই ঘণ্টার উড়ানেও সেই ধরনের খাবার দেওয়া উচিত?

রেশমীদেবী বলেন, ‘‘বিমানে ওঠা মানেই তো বায়ুচাপ ও উচ্চতার তারতম্য। অনেক যাত্রীরই বমি-বমি ভাব থাকে। বিমানের ভিতরে একটা বদ্ধ অবস্থার মধ্যে একটি আসনে বসে থাকতে হয়। এই সময়ে চব্য-চোষ্য না খেয়ে হাল্কা খাবার খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। মশলাদার খাবার খেয়ে আচমকা শরীর খারাপ হয়ে গেলে ৩৫ হাজার ফুট উপর থেকে হাসপাতালে পৌঁছতেও তো সময় লাগবে।’’

Air India Poila Boishakh Bengali New Year
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy