কারও প্রতি নির্ভরতা আছে মানেই নিজের প্রতি বিশ্বাস যেন না ভেঙে যায়। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ
‘লোকে কী বলবে’-এর প্রতিটি পর্বে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। নিচ্ছেনও। এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে জীবনের এবং সমাজের এমন কিছু দিক উঠে এসেছে যেগুলি নিয়ে কথা বলা কঠিন। সেই সমস্ত ছুতমার্গ, সামাজিক চাপ যেখানে অনেক লজ্জা, ভয় জুড়ে আছে সেই সব বিষয় নিয়েই লোকে কী বলবে-এর প্রতিটি পর্বে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পর্বের আগে এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে যার সঙ্গে শুধু সামাজিক সঙ্কট জুড়ে নেই। আরও অনেক ধরনের বিপন্নতাও থেকে যাচ্ছে। আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে তেমনই কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাপড়ি বসু জানিয়েছেন, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তিনি অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। লক্ষ্য করে দেখেছেন, ক্রমশ এটা তাঁর স্বভাব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে কোনও দুর্বল মুহূর্তে যাঁর সান্নিধ্য চাইছেন, তাঁকে না পেলে আরও বেশি অসহায় বোধ করেন। সেখান থেকে জন্ম নেয় বিরক্তি। ছোট ছোট বিষয়েই মনখারাপ হয়ে যায়। মানসিক ভাবে ক্লান্ত লাগে। পাপড়ি পরামর্শ চেয়েছেন মনোবিদ অনুত্তমার কাছে।
‘লোকে কী বলবে-এর প্রতিটি পর্বের মতো লাইভ অনুষ্ঠানেও মনোবিদ অনুত্তমা সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার পথ দেখালেন। পাপড়ির উদ্দেশে অনুত্তমার পরামর্শ, ‘‘নির্ভর করতে চাওয়া, বিশেষ মানুষটিকে কাছে চাওয়ার মধ্যে তো কোনও অন্যায় নেই। সত্যি এমন এক একটি মুহূর্ত আসে যখন খুব বিপন্নতা বোধ হয়। জীবনের নানান টালমাটাল অবস্থায় সকলেই সেই বিশেষ হাতটাই ধরতে চান। সেই বিশেষ মানুষটিকেই তো পেতে চান। কিন্তু সেই বিশেষ মানুষটিও আপনার চাওয়ার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে পারবেন কি না, সেটা সব সময় নিয়ন্ত্রণে থাকে না। কিন্তু সে যদি একমাত্র নির্ভরতার অংশ হয় তা হলে দুর্বল সময়ে তাঁকে না পেলে হতাশা আসবে। মন আরও খারাপ হতে থাকবে। মনে হতে পারে যে, তা হলে বোধহয় এই পরিস্থিতি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ সেই মানুষটি সঙ্গে নেই। এ ক্ষেত্রে একটু অন্য ভাবে ভাবা যেতে পারে। কারও প্রতি নির্ভরতা আছে মানেই নিজের প্রতি বিশ্বাস যেন না ভেঙে যায়। এমন ভাবা যেতে পারে, খারাপ পরিস্থিতি পেরিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নিজের আছে কিন্তু পাশে কেউ থাকলে ভাল লাগবে। না থাকলেও খুব অসুবিধা হবে এমন নয়। এই শক্তিটা নিজের কাছে রাখা জরুরি। নির্ভর করতে হলেই এক জন মানুষের উপর নির্ভর না করে একাধিক মানুষের উপর করা ভাল। তা হলে প্রয়োজন এক জনকে না পেলেও অন্য জনের সঙ্গে কথা বলে স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে। এতে নিজের অসহায়তা কিছুটা হলেও কমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy