Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ASTHMA

একটু হাঁটলে বা সিঁড়ি ভাঙলেই হাঁপ ধরে? হাঁপানি নয়, কারণ হতে পারে এ সব অসুখও

হাঁপ ধরলেই তা হাঁপানি ধরে নিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন নেই, বরং কিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে হাঁপ ধরার কারণ দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।

শ্বাসের সমস্যা মানেই অ্যাজমা নয় কিন্তু!  ছবি: শাটারস্টক।

শ্বাসের সমস্যা মানেই অ্যাজমা নয় কিন্তু! ছবি: শাটারস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:১৫
Share: Save:

দু’কদম চলতে গিয়েই হাঁপানি বা কয়েকটা সিঁড়ি ওঠার পরেই একটু জিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে। না আপনার একার সমস্যা নয়। হাঁপ ধরার এমন ঘটনা অনেকের সঙ্গেই ঘটে। তবে হাঁপ ধরছে মানেই কিন্তু হাঁপানি নয়। এমনটা হতে পারে আরও নানা কারণে।

যেমন, বেশি চলাফেরা বা কাজকর্ম করার অভ্যাস না থাকলে একটুতেই হাঁপ ধরে। আবার বয়সের সঙ্গে ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যায় বলে বেশি ছুটোছুটি করলে সমস্যা হয়। বিড়ি–সিগারেট খেয়ে ফুসফুসের সমস্যা বাধালেও বিপত্তি বাড়ে। আবার শরীরে রক্ত কমে গেলেও হাঁপ ধরতে পারে সামান্য পরিশ্রমেই। এই তালিকায় কার্ডিয়াক অ্যাজমা থেকে শুরু করে আরও বড় বড় কিছু অসুখও আছে। কাজেই হাঁপ ধরছে মানেই হাঁপানি হয়েছে— এ ধারণা ঠিক নয়।

তা হলে হাঁপানির সঙ্গে এর ফারাক কী? বক্ষ বিশেষজ্ঞ সৌম্যদীপ দত্তর মতে, ‘‘হাঁপানি হলে শুয়ে–বসে থাকলেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তার পাশাপাশি অ্যালার্জি থেকেও হাঁপ আসতে পারে। কিছু খাবার, ধুলো–ধোঁয়া সইতে না পারলে অ্যালার্জি বাড়ে ও হাঁপের সমস্যা দেখা দেয়। হাঁচি ও নাক দিয়ে জল পড়তে পারে, সাঁই সাঁই আওয়াজও হতে পারে বুকে।’’

তাই হাঁপ ধরলেই তা হাঁপানি ধরে নিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন নেই, বরং কিছু পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে হাঁপ ধরার কারণ দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে কোন রকম চিকিৎসার ঝুঁকি না নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।

রোগ নির্ণয়

রোগের ইতিহাস শুনে, সঙ্গে আর কী কী কষ্ট আছে জেনে ও স্টেথোস্কোপ দিয়ে বুক পরীক্ষা করে রোগ সম্বন্ধে কিছুটা সিদ্ধান্তে আসতে পারেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া বুকের এক্স রে ও রক্তে হিমোগ্লোবিন কত আছে তা মেপে দেখা হয়। সঙ্গে কোনও সংক্রমণ হয়ে হাঁপ ধরছে কি না তা জানতে রক্তের টিসি, ডিসি ও অ্যালার্জি আছে কি না জানতে ইয়োসিনোফিলের পরিমাণ মাপা হয়।

সন্দেহ দৃঢ় হলে মাপা হয় সুগার। চিকিৎসা শুরু হলে রক্তে চিনির মাত্রা অনেকের ক্ষেত্রে বেড়ে যেতে পারে৷ পালমোনারি ফাংশন টেস্ট বা পিএফটি-ও হয়৷ এই পরীক্ষায় শ্বাসকষ্ট কমানোর ওষুধ দেওয়ার আগে ও পরে ফুসফুসের কার্যকারিতার তারতম্য হচ্ছে কি না দেখা হয়। প্রথমে একটি মেশিনে বার তিনেক জোরে ফুঁ দিতে হয়। যে ফুঁ সবচেয়ে জোরদার তা মেশিন নোট করে নেয়। এ বার ব্রঙ্কোডাইলেটর জাতীয় ওষুধের দুটো পাফ নিয়ে ১০–১৫ মিনিট অপেক্ষা করে আবার ফুঁ দিতে হয়। ওষুধ নেওয়ার পর ফুঁ–এর জোর অনেকটা বাড়লে রোগটা অবশ্যই হাঁপানি। অতটা না বাড়লে ধরা হয় অন্য কোনও সমস্যার জেরে এই হাঁপ আসছে।

চিকিৎসা

নিয়ম করে ও চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে স্টেরয়েড পাফ নিতে হয়৷ অ্যালার্জি কমানোর ওষুধ খেতে হয় অনেক সময়। উপসর্গ না কমলে সালবুটামল বা টারবুটানিল ইনহেলার নিতে হয় মাঝেমধ্যে। এর পাশাপাশি পিক–ফ্লো মিটার যন্ত্রে ফুঁ দিয়ে শরীরের কোন অবস্থায় রিডিং কী থাকে তা দেখে রাখা দরকার। হাঁপানি বাড়লে যাতে রিডিং দেখেই তা বুঝতে পারেন। কারণ অনেক সময় রোগ তলে তলে বাড়লেও সে অনুপাতে কষ্ট বাড়ে না বলে বোঝা যায় না ও আচমকা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE