কারও পছন্দ তন্দুর, কেউ আবার চিকেন ফ্রাই ভালবাসেন। বাড়িতে অতিথি আসবেন, তাই তেল-মশলা দিয়ে জমিয়ে রাঁধা হচ্ছে পাঁঠার মাংস।
মুরগির মাংস হোক বা পাঁঠার— প্রোটিনে ভরপুর মাংসের পুষ্টিগুণ যথেষ্ট। বিশেষত স্বাস্থ্যের কথা ভাবলে মুরগির মাংস খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। কিন্তু তা বলে তন্দুরি, গ্রিলড চিকেন, চিকেন ফ্রাই বা ঘি জবজবে রান্না নয়।
দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞ কেরলের চিকিৎসক সিরিয়্যাক অ্যাবি ফিলিপ্স সমাজমাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন ভাজা, গ্রিল করা মাংস না খাওয়ার। তিনি বলছেন, উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে, মাংসের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় তো বটেই, একই সঙ্গে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। বেশি আঁচে মাংস রান্না করলে হেটারোসাইলিক অ্যামিনেস (এইচসিএ) তৈরি হয়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। মাংসের ক্রিয়েটিনিন অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং শর্করার সঙ্গে মিশে এই জিনিসটি তৈরি করে।
মাংস রান্নার স্বাস্থ্যকর পন্থা
· মাংস জলে সেদ্ধ করে নিলে পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। তবে জল টগবগিয়ে ফুটলে হবে না। মাঝারি আঁচে ঢাকা দিয়ে রান্না করতে হবে। কিংবা মাংস জলে ভাপিয়েও নেওয়া যেতে পারে।
· প্রেসার কুকারে আঁচ কমিয়ে রান্না করলে মাংস সুসিদ্ধ হয় এবং ফাইবার ভেঙে যায়। এতে স্বাদও ভাল হয়। ক্ষতিকর উপাদান তৈরির ঝুঁকি কমে। বজায় থাকে পুষ্টিগুণ।
· পোলট্রির মাংস ৬২-৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রেডমিট ৫৫ ডিগ্রি-৬০ ডিগ্রিতে গরম করলে বা এই তাপমাত্রা গরম জলে ভিজিয়ে রাখলে রোগজীবাণু নষ্ট হয়।
ক্ষতি এড়াতে কী ভাবে মাংস গ্রিল করবেন?
মশলার মিশেল: মাংস রান্নার আগে ভিনিগার, বা লেবুর রস মাখিয়ে নেওয়া জরুরি। এ ছাড়া হলুদ, রসুন, রোজ়মেরি, থাইম— এই ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা দরকার। এতে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যা রান্নার সময় ক্ষতিকর এইচসিএ তৈরিতে বাধা দেয়।
গ্রিল করার আগে মাইক্রোঅয়েভ: হেটারোসাইলিক অ্যামিনেস তৈরির নেপথ্যে থাকে ক্রিয়েটিনিন। গ্রিল করার আগে মাইক্রোঅয়েভে ২ মিনিট রান্না করলে এইচসিএ তৈরির ঝুঁকি কমে যায়।
আঁচ থেকে দূরে রাখুন: রান্নার সময় আঁচ থেকে দূরে রাখতে পারেন। সরাসরি আগুনে রান্নার পাত্র না বসিয়ে নীচে আর একটি পাত্র দিয়ে রাখতে পারেন। এতে কিছুটা হলেও ক্ষতি এড়ানো সম্ভব।
এ ছাড়াও রান্নার সময় ছাঁকা তেলে উচ্চ তাপমাত্রায় মাংস ভাজতেও বারণ করছেন তিনি। বরং তাঁর পরামর্শ মশলা মাখিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে তা দমে রান্না করার। এতে ক্ষতি এড়ানো যেতে পারে।