কুচকুচে কালো ধোঁয়া, চোখ-নাক জ্বালানো আবর্জনা পোড়া গন্ধ, হাঁপ ধরানো ধোঁয়াশা— পরিবেশের দূষণ একটু একটু ক্ষয় ধরাচ্ছে ফুসফুসে। স্বাস্থ্যের ক্ষতিটা ঠিকঠাক টের পাওয়ার আগেই দূষণের প্রকোপ ফুটে উঠছে ত্বকে। চুল-ত্বক নিষ্প্রভ হতে শুরু করছে। ত্বকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমছে ধুলোবালি। দূষিত বাতাসকে আশ্রয় করে ত্বকে বাসা বাঁধছে নানা রকম জীবাণু। ফলে চর্মরোগের আশঙ্কাও বাড়ছে। কেবল রাসায়নিক দেওয়া প্রসাধনী থেকেই যে ত্বকের ক্ষতি হচ্ছে, তা নয়। দূষণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে ত্বকের। তবে স্বস্তির বিষয় হল সৌন্দর্যচর্চার কয়েকটি নিয়মেই দূষণকে হারিয়ে দেওয়া যায়।
সকাল-সন্ধ্যায় দূষণের পাল্লা ভারী এ শহরেও। রোজ বাইরে বেরোতে হলে শুধু জল বা সাবান ঘষে মুখ ধুলে কিন্তু হবে না। দূষণ থেকে ত্বককে বাঁচাতে মানতে হবে আরও কিছু নিয়ম। দূষণের কারণে ত্বক যে কেবল রুক্ষ বা খসখসে হচ্ছে, তা নয়। এগজ়িমা, সোরিয়াসিস থেকে শুরু করে ত্বকের অ্যালার্জি জনিত রোগ বা অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিসের কারণও কিন্তু দূষণ।
কী ভাবে রূপচর্চা করলে দূষণের প্রকোপ কাটিয়ে উঠবেন?
১) মুখ পরিষ্কার
ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই ক্লিনজ়ার দিয়ে মুখ ধুতে হবে। ত্বকের ধরন বুঝে ক্লিনজ়ার কিনবেন। এটি রাতে জমে থাকা তেল, ধুলো এবং মৃত কোষ দূর করবে। দোকান থেকে কিনতে না চাইলে, দুধ-বেসন, নারকেল তেল বা গোলাপজলও ক্লিনজ়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন:
২) টোনিং
অ্যালকোহল-মুক্ত টোনার ব্যবহার করতে হবে। এটি ত্বকের পিএইচ বা অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখবে। উন্মুক্ত রন্ধ্রের সমস্যা দূর করবে। সমপরিমাণ ডাবের জল এবং গোলাপজল মিশিয়ে টোনার বানিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে রাখুন। ডাবের জল দাগছোপ দূর করে। গোলাপজল ত্বকে তরতাজা ভাব আনবে।
৩) অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সিরাম
দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করতে ভিটামিন-সি বা ভিটামিন-ই যুক্ত সিরাম ব্যবহার করতে পারলে ভাল। টি ট্রি অয়েল ও অ্যালো ভেরা জেল দিয়েও সিরাম বানিয়ে নিতে পারেন। ভিটামিন সি-যুক্ত সিরাম তৈরি করতে হলে একটি কাচের শিশিতে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, গোলাপজল, পরিস্রুত জল সঠিক অনুপাতে মিশিয়ে নিন। তার পর গ্লিসারিন এবং ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস মিশিয়ে দিন। সব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে নিলেই সিরাম তৈরি যাবে।
৪) ময়েশ্চারাইজ়ার
ত্বকের ধরন শুষ্ক হোক বা তৈলাক্ত— সকলেরই ময়েশ্চারাইজ়ারের দরকার। তবে ত্বক ভেদে তার ফর্মুলা পৃথক হবে। যেমন, যাঁদের ত্বক তেলতেলে, তাঁরা জেল বেস্ড বা জলীয় উপাদান যুক্ত হালকা ময়েশ্চাইজ়ার ব্যবহার করবেন। কিন্তু যাঁদের ত্বক নিষ্প্রাণ, শুষ্ক, তাঁদের জন্য ভাল শিয়া বাটার, কোকো বাটার জাতীয় ময়েশ্চারাইজ়ার।
৫) সানস্ক্রিন
যে কোনও মরসুমেই বাইরে বেরোনোর আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে। সানস্ক্রিন কেবল ট্যান পড়ার হাত থেকে রেহাই দেয় এমনটা নয়, সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি ইউভিএ (আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি এ) এবং ইউভিবি (আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি বি)-র ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করাই সানস্ক্রিনের মূল কাজ। বাজারে বিভিন্ন সংস্থার সানস্ক্রিনের ছড়াছড়ি। এমন সানস্ক্রিন কিনুন, যাতে এসপিএফ (সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর)-এর মাত্রা যেন ৩০ অথবা তার থেকে বেশি থাকে।