কোনও দিন খোঁপা, কোনও দিন বিনুনি, কখনও খোলা চুল, কখনও বা টানটান পনিটেল। রোজের কেশসজ্জার প্রকারভেদ কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়, প্রয়োজন এবং সুবিধার উপরেও নির্ভর করে। তবে অনেকেই রোজ টানটান করে চুল বাঁধেন পেশার জন্য। কারও বা আবার এমনই অভ্যাস তৈরি হয়েছে যে, এই কেশসজ্জাকেই সুবিধাজনক বলে মনে হয়। টানটান করে পনিটেল করলে চোখে-মুখে চুলের অবাধ্য যাতায়াত বন্ধ হয়। তা ছাড়া গরমের সময়ে ঘাড়ের কাছে চুলের অত্যাচার কমে। কিন্তু টানটান করে চুল বাঁধার এই অভ্যাস মাথার ত্বকে চাপ তৈরি করে। এর ফলে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়।
অজান্তেই কেশসজ্জা আপনার চুলের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে হয়তো। চুল ঝরে পড়ার সূত্র খুঁজছেন অন্যত্র, কিন্তু তা লুকিয়ে রয়েছে রোজের অভ্যাসে। ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়ার মতো রোগও হয়ে যেতে পারে চুল বাঁধার ভুলের জন্য।
কোন কোন কেশসজ্জায় ঝুঁকি বেশি?
· টানটান করে চুল বাঁধা বা পনিটেল করা।
· হেয়ারব্যান্ড দিয়ে চুল টেনে আটকে রাখা।
· ক্লিপ দিয়ে চুল আটকে রেখে পিছনে বেণী করে রাখা বা খোঁপা করা।
· টপ নট বা মাথার উপরে টানটান করে খোঁপা করে রাখা।
অজান্তেই কেশসজ্জা আপনার চুলের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে হয়তো। ছবি: সংগৃহীত।
কোন কোন উপসর্গে বুঝবেন, আপনার ট্র্যাকশন অ্যালোপেশিয়া হয়েছে?
· মাথার ত্বকে লালচে ভাব বা ব্যথা হওয়া।
· চুলের গোড়ায় ছোট ফুস্কুড়ি।
· কপালের ধার বা কানের পাশের চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।
· চুল বাঁধার পর টান ধরা বা জ্বালা হওয়া।
এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম দিকেই এই সমস্যাগুলি লক্ষ করলে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ বা লোশন ব্যবহার করলে ফল পাওয়া যায়। কিন্তু দীর্ঘ দিন অবহেলা করলে স্থায়ী ভাবে টাক পড়ে যেতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এই সমস্যার ঝুঁকি অনেকের চেয়ে বেশি। যাঁরা প্রতি দিন আঁটসাঁট খোঁপা, ঝুঁটি বা বিনুনি করেন, তাঁদের সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি, নৃত্যশিল্পী, বিমানকর্মী বা সামরিক বাহিনীর সদস্যদেরও কপালের ধারে টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যা বেশি থাকে। তাঁদের নির্দিষ্ট কেশসজ্জা মেনে চলতে হয় বলে চুল পাতলা হয়ে যেতে পারে।
নৃত্যশিল্পী, বিমানকর্মী বা সামরিক বাহিনীর সদস্যদেরও কপালের ধারে টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যা বেশি থাকে। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
কিন্তু সব সময় আঁটসাঁট করে চুল না বেঁধে মাঝেমধ্যে আলগা করে নেওয়া উচিত। কাজের ফাঁকে ফাঁকে চুলের টান শিথিল করে নিলে ঝুঁকি কমবে। আর যাঁরা কেবল শখে এমন কেশসজ্জার উপর নির্ভশীল, তাঁরা চুল বেঁধে রাখার নিয়মে কখনও সখনও বদল আনুন। আলগা করে বেঁধে রাখলে টাক পড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। উপরন্তু, চুল বাঁধার সময়ে এক জায়গায় বার বার চাপ না দেওয়াই উচিত।