ত্বকচর্চা, স্পা রুটিনে কোরিয়ার জয়জয়কার চারদিকে। ইদানীং কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন পার্লার এবং সালোঁয় কোরিয়ান প্রথা মেনে ফেসিয়াল হয়। ধীরে ধীরে স্পা রুটিন ব্যবসায় শুরু হয়েছে নানা দিকে। খরচের কথা মাথায় রেখে অনেকেই সে দিকে পা বাড়ান না। কিন্তু মনে প্রশ্ন তো জাগেই। ঠিক কী ভাবে কোরিয়ান স্পা করানো হয়? কেতাদুরস্ত, বিলাসবহুল কাচের ঘরে কী ভাবে ত্বকচর্চা, কেশচর্চা ও মাসাজ হয়? চুলের যত্নে কোরিয়ান হেয়ার স্পা নিয়েও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কোন কোন উপকরণ ও সামগ্রীর ব্যবহার হয় সেখানে?
তবে কোরিয়ান হেয়ার স্পা মানে শুধুই বিলাসিতা নয়। একে শরীর, ত্বক আর মানসিক প্রশান্তির অনন্য মেলবন্ধন বললে অত্যুক্তি হবে না। অন্তত এমনই দাবি তাঁদের অনেকের, যাঁরা ওই কাচের ঘরের চৌকাঠ পেরিয়েছেন। তা ছাড়া সমাজমাধ্যমে একাধিক ভিডিয়োয় তেমনই টের পাওয়া গিয়েছে। প্রতিটি ধাপেই থাকে বিজ্ঞানভিত্তিক সূক্ষ্ম পরিচর্যা। এতে রাসায়নিকের ব্যবহারও তুলনামূলক ভাবে কম। এর ফলে সারা শরীরে রক্তসঞ্চালন ভাল হয়। তা ছাড়া চুল পরিষ্কার, মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগানোর জন্য বেশ কার্যকর। কোরিয়ার সাবেক এবং সাম্প্রতিক প্রথার যুগলবন্দি লক্ষ করা যায় স্পা-এ। কোরিয়ান হেয়ার স্পা-এর রুটিনে মূলত ১০-১৫ ধাপ থাকে, সময় লাগে ২-৩ ঘণ্টা।
কোরিয়ান হেয়ার স্পা। ছবি: সংগৃহীত।
কোরিয়ান হেয়ার স্পা রুটিনের মূল ধাপগুলি কী?
মাথার ত্বকের পরীক্ষা
প্রথমে পরীক্ষা করে দেখা হয়, মাথর ত্বকের ধরন ঠিক কী রকম। খুশকি, প্রদাহ, তেলচিটে ভাব, শুষ্কতা— এই ধরনের কী কী সমস্যা রয়েছে, সেগুলি শনাক্ত করা হয়।
মাথার ত্বকে পরিষ্কার
তার পর মাথার ত্বক থেকে মৃত কোষ অপসারণ করানো হয়। চুলের ফলিকল সক্রিয় করতে আগে ব্যবহৃত উপকরণের অবশিষ্টাংশ, অতিরিক্ত তেল ইত্যাদি সরানো হয় ক্লিনজ়ার ও এক্সফোলিয়েটর দিয়ে।
মাথার মাসাজ
এর পরই আরামদায়ক মাসাজের সেশন। এতে রক্তপ্রবাহ বাড়ে, ফলিকলগুলি উদ্দীপিত হয়।
পণ্যের ব্যবহার
পুষ্টিকর হেয়ার মাস্ক মাখানো হয় সারা মাথায়। মাস্ক ছাড়াও সিরাম, তেল ব্যবহৃত হয়। তাতে মিশিয়ে দেওয়া হয় ভেষজ উপাদান।
চুল ধোয়ানো
শেষে হালকা গরম জলে চুল ধোয়ানো হয়। এই গরম জলের বাষ্প রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, মাথার ত্বকের রন্ধ্র খুলে দেয় এবং ক্লান্তি ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়।
স্পা-এর পর অন্তত ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত শ্যাম্পু করা উচিত নয়। যাতে সমস্ত উপকরণ চুলে এবং মাথার ত্বকে ভাল ভাবে শোষিত হওয়ার সময় পায়। তা ছাড়া হেয়ার স্ট্রেটনার, কার্লার, ব্লো ড্রায়ার ইত্যাদিও এই সময়ের মধ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়। চুল ও মাথার ত্বককে খানিক স্বস্তি দেওয়া দরকার এই সময়ে।