ঘড়ি ধরে, ক্যালোরি মেপে, গুণাগুণ দেখে খাওয়াদাওয়া করার প্রবণতা বেড়েছে ইদানীং। ডায়েটের নানা ধরনের রীতিনীতি আবিষ্কৃত হচ্ছে। তাতেই নয়া সংযোজন হল পুষ্টিবিদ রিচা গঙ্গানির সুপারিশ করা যাপন-রীতি। সম্প্রতি অভিনেত্রী নেহা ধুপিয়া শরীরের প্রদাহ কমানোর জন্য ২১ দিনের যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন, তা রিচারই পরামর্শে। তার পর থেকে আরও বেশি করে আলোচনায় আসছে পুষ্টিবিদের সুপারিশ করা নিয়মকানুন। তেমনই এক নতুন অভ্যাসের কথা জানিয়েছেন রিচা। ‘১৮-১০-৮-৪-১’ নিয়ম। এই প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে কথাবার্তা চলছে নতুন করে। কী এই ডায়েট-রীতি? আচমকা জনপ্রিয়ই বা হল কেন?
১৮-১০-৮-৪-১ নিয়মে যে হঠাৎ করে ৫-১০ কিলোগ্রাম ওজন কমে যাবে, তেমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে না। ওজন কমবে, ফ্যাট ঝরবে, সবই হবে, কিন্তু সুষ্ঠু ভাবে। ২১ দিনের মধ্যে এমন লক্ষ্যভেদ করার কৌশল জানিয়েছেন রিচা। তাঁর এই পন্থায় আসলে গোটা যাপনে বদল আসার সুযোগ রয়েছে। সমস্যার দ্রুত সমাধানের কথা বলা হচ্ছে না, বরং সামগ্রিক ভাবে শরীর-স্বাস্থ্যে বদল আসতে পারে। সারা দিন শরীরে শক্তি ধরে রাখার জন্য, হজমক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য এবং ওজন কমানোর জন্য এটি কার্যকরী বলে জানাচ্ছেন রিচা। এ ক্ষেত্রে মেদ ঝরবে অথচ শরীর ভাঙবে না। তবে এই সংখ্যাগুলির অর্থ কী? এই ডায়েট মেনে চলতে হলে কী করতে হবে?
কখন খাবেন, কখন খাবেন না? ছবি: সংগৃহীত।
· ১৮-অর্থ হল, ১৮ ঘণ্টার ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং। ১৮ ঘণ্টা উপবাসে থাকতে হবে। বাকি ৬ ঘণ্টায় খাওয়াদাওয়া করতে হবে। ফলে হজমতন্ত্র যথেষ্ট বিশ্রামের সময় পাবে। জমে থাকা ফ্যাট পোড়ানোর জন্যও এই উপবাসের সময়টা গুরুত্বপূর্ণ।
· ১০-এর অর্থ হল, রোজ ১০ হাজার পা হাঁটা। এর লক্ষ্য, দ্রুত ক্যালোরি পোড়ানো, রক্তপ্রবাহ উন্নত করা, হার্ট সুস্থ রাখা।
· ৮-এর অর্থ, ৮ ঘণ্টার ঘুম। যা প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়। কিন্তু হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং চর্বি পোড়াতে সুনিদ্রা অপরিহার্য।
· ৪-এর মানে, ৪ লিটার জলপান। কেবল জল নয়, ভেষজ চা-ও দরকার। এই ধাপে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে গিয়ে পেট ফাঁপা কমবে।
· ১-এর অর্থ, শরীরের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ১ গ্রাম প্রোটিন, যা পেশি মজবুত করে এবং শরীরের গঠন সুনিশ্চিত করে।
অর্থাৎ কৃচ্ছ্রসাধন নয়, বরং সময় মতো ঘড়ি ধরে খাওয়াদাওয়া, জলপান, ঘুম, ব্যায়ামের একটি দিনলিপিই সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি বলে মনে করেন পুষ্টিবিদ রিচা।