আদিবাসীদের তেল নিয়ে ইদানীং কালে বেশ চর্চা হচ্ছে। সমাজমাধ্যমে আদিবাসী ভেষজ তেলের সুফল নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। কিছু দিন আগে বলিউড অভিনেত্রী বিপাশা বসুও জানিয়েছিলেন, তিনি এক উপজাতি গোষ্ঠীর তৈরি বিশেষ ভেষজ তেল মাথায় মাখেন। তেমন তেল এখন অনলাইনে খুঁজলেও পাওয়া যাচ্ছে। এখন আবার কর্নাটকের এক উপজাতি হাক্কিপিক্কি সম্প্রদায়ের তৈরি মাথায় মাখার তেল নিয়ে নানা বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে সমাজমাধ্যমে। দাবি করা হয়েছে, হাক্কিপিক্কিদের চুল খুব ঘন ও লম্বা। তাঁরা পুরোপুরি ভেষজ উপাদান দিয়ে তেল তৈরি করে মাথায় মাখেন। সে তেল এমন যে, মাখলে না কি টাকেও চুল গজাবে।
কর্নাটকের শিবমোগা, দাওনগেরে ও মায়সুরু এলাকায় হাক্কিপিক্কিদের বসতি রয়েছে। এঁরা মূলত উপজাতি গোষ্ঠী। কন্নড় ভাষায় ‘হাক্কি’ শব্দের অর্থ হল পাখি ও ‘পিক্কি’ হল শিকার ধরা। একটা সময়ে পাখি ও পশু শিকার করে জীবনধারণ করতেন তাঁরা। তবে এখন শিকার আইনত নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় ভেষজ নানা দ্রব্য তৈরি করে বিক্রি করেন তাঁরা। তার মধ্যে একটি হল মাথায় মাখার তেল। যদিও কর্নাটকের বাইরেও হাক্কিপিক্কিরা ছড়িয়ে পড়েছেন এখন। তাঁদের তৈরি বিশেষ একরকম মাথায় মাখার তেল এখন না কি খুব জনপ্রিয় হয়েছে। বেশ দাম দিয়েই কিনতে হয় সে তেল। এক একটি তেলের শিশির দাম হাজার বা দু’হাজারও ছাড়িয়ে যায়। সেই তেলই যদি ঘরে তৈরি করে নেওয়া যায় তা হলে কেমন হয়?
হাক্কিপিক্কিরা ঠিক যে ভাবে ভেষজ তেল তৈরি করেন, সে ফর্মুলা জেনে রাখলে এমন তেল বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া যাবে।
আরও পড়ুন:
উপকরণ (এক শিশির জন্য)
২৫০ মিলিলিটার নারকেল তেল
১০টি লবঙ্গ
১ চামচ কালোজিরে
১ চামচ মেথিদানা
দেড় চা-চামচ আমলকির গুঁড়ো
একমুঠো কারিপাতা
কয়েকটি জবাফুল
কয়েকটি ব্রাহ্মীপাতা
একমুঠো নিমপাতা
প্রণালী
একটি পরিষ্কার পাত্র নিয়ে তাতে কম আঁচে নারকেল তেল গরম করতে হবে। এ বার তাতে একে একে যোগ করতে হবে লবঙ্গ, মেথিদানা, আমলকির গুঁড়ো, কালোজিরে, জবাফুল, নিমপাতা, কারিপাতা ও ব্রাহ্মীর পাতা। ৩০ মিনিট কম আঁচে ঢেকে রেখে ফোটাতে হবে। সমস্ত উপকরণ মিশে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিতে হবে। তার পর ছেঁকে নিয়ে সেই তেল ভরে রাখতে হবে শিশিতে। এই শিশি এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে বেশি রোদ আসে না এবং অতিরিক্ত স্যাঁতসেঁতেও নয়।
এই তেল মাখলে চুল পড়া বন্ধ হবে বলে দাবি করা হয়েছে। যেহেতু নিমপাতা, ব্রাহ্মী, জবাফুলের নির্যাস মিশছে তেলে, তাই এটি মাথার ত্বকের পুষ্টি জোগাবে এবং যে কোনও সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারবে। কালোজিরের নির্যাস পাকা চুল কালো করতে সাহায্য করবে। রুক্ষ চুল নরম ও মসৃণ করতে সাহায্য করবে নারকেল তেল। এই তেল মাখলে চুলের ডগা ফাটার সমস্যাও দূর হবে।