চুলে তেল মাখা, সপ্তাহে দু’দিন শ্যাম্পু— এইটুকুতে আর কেশচর্চা সীমাবদ্ধ থাকে না এখন। তার কারণও আছে। দিনে দিনে বাড়ছে দূষণ। তার উপর ভাজাভুজি খাওয়ার প্রবণতা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের প্রভাব পড়ছে চুলেও।
চুল ঝরার সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। তা ছাড়া শুধু চুল পড়া আটকানোই যথেষ্ট নয়। বরং সাজপোশাকের বাহার যদি বাড়াতে হয় তা হলে দরকার ঘন, মসৃণ চুল। আর সে কাজেই সাহায্য করতে পারে চুল ধোয়া।
আরও পড়ুন:
চুল ধোয়া বিষয়টি কী, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। কারণ, প্রতি দিন স্নানের সময় জলেই চুলের ধুলো-ময়লা ধুয়ে যায়। তা ছাড়া শ্যাম্পু করলে বা কন্ডিশনার মাখার পরেও ভাল করে চুল ধুয়ে নিতেই হয়। ফলে, চুল ধুলে কী এমন ঘটবে? ফল যে হাতেনাতে মিলবে, তা বলছেন কেশচর্চা শিল্পীরা। তবে, চুল ধুতে হবে প্রতি বার শ্যাম্পু করার পরে, তবে জল নয়, চুলের জন্য ভাল এমন উপাদানে।
জবা এবং গ্রিন টি: জবাফুলের মধ্যে অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। এটি চুলে কেরাটিন প্রোটিনের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে। ফলে চুলের ঘনত্ব বাড়ে, চুলের গোড়া মজবুত হয়। এই ফুলে রয়েছে ভিটামিন ই, ভিটামিন সি। এগুলি চুলের প্রাকৃতিক জেল্লা ধরে রাখে। ফলিকলগুলিও পুষ্টি পায়। নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। গ্রিন টি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর। দূষণ বা রোদের তাপে চুলের যে ক্ষতি হয়, তা প্রতিরোধে সাহায্য করে এই উপাদান। ৩-৪ কাপ জলে শুকনো কয়েকটি জবাফুল আঁচ কমিয়ে ফুটিয়ে নিন। বেশ কিছু ক্ষণ পরে আঁচ বন্ধ করে দিন। তার মধ্যে ২-৩টি গ্রিন টি-র ব্যাগ ডুবিয়ে রাখুন ৫-৭ মিনিট।
শ্যাম্পু করার পরে চুল ধুয়ে মুছে নিন। তার পরে এই মিশ্রণটি দিয়ে চুল ধুতে হবে। চুল ধোয়ার পরে তা মাথায় ৫-৭ মিনিট বসতে দিন। তার পর পরিষ্কার জলে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন করলেই ধীরে ধীরে চুল সুন্দর হবে।
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এবং পুদিনা: অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারে রয়েছে ভিটামিন বি, ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি। প্রাণহীন চুলে জেল্লা ফেরাতে পারে তা। মাথার ত্বকে জমে থাকা ধুলোময়লা, মৃত কোষ পরিষ্কারে সাহায্য করে। পুদিনাও মাথার ত্বকে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
২-৩ কাপ গরম জলে ২ টেবিল চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে নিন। যোগ করুন ১ টেবিল চামচ শুকনো পুদিনাপাতা এবং পুদিনাপাতার একটি টি-ব্যাগ (মিন্ট টি)। ৫-৭ মিনিট সমস্ত উপকরণ ভিজিয়ে রাখার পরে সেই জল দিয়ে শ্যাম্পুর পরে মাথা ধুয়ে নিন। ১০ মিনিট মাথায় বসতে দিন জল। তার পর ধুয়ে নিন।
আমলকি এবং ভৃঙ্গরাজ: চুলের যত্নে আমলকির এবং ভৃঙ্গরাজের ব্যবহার চলে আসছে বহু দিন ধরেই। আমলকিতে ভিটামিন ই, সি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। ভৃঙ্গরাজও চুলের গোড়া মজবুত করে। ৩-৪ কাপ জলে ২ টেবিল চামচ আমলকি এবং ভৃঙ্গরাজ গুঁড়ো মিশিয়ে ৩০ মিনিট ধরে নাড়তে থাকুন। জল একটু ঠান্ডা হলে কাপড় দিয়ে তা ছেঁকে নিন। সেই জল শ্যাম্পু করার পরে মাথার ত্বক থেকে চুলে ভাল করে দিয়ে ১০মিনিট রেখে দিন। হালকা মাসাজ করুন। তার পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।