মুখে মাখলে দাগছোপ উঠে যায়। ত্বক নরম রাখতে গোলাপজলের কোনও বিকল্প নেই। সামান্য গোলাপজল হাতে নিয়ে সারা মুখে মাখলে ত্বকের জ্বালা ভাব দূর হয় নিমেষে। অনেক তরতাজা লাগে। এত দিন জানা ছিল, গোলাপজল ত্বকের জন্য ভাল, তবে এর আরও গুণ রয়েছে। চোখের ক্লান্তি কাটাতেও নাকি গোলাপজলের মতো ভাল ওষুধ আর হয় না। চোখে জ্বালা, চুলকানি, শুষ্ক চোখের সমস্যা দূর করতে গোলাপজলের উপকারিতা বলে বোঝানোর নয়।
‘জার্নাল অফ ইন্টারকালচারাল এথনোফার্মাকোলজি’-তে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় ২০২৫ সালে। সেখানে গবেষকেরা জানান, গোলাপজলে আছে ফ্ল্যাভনয়েড ও টার্পিন, যা প্রদাহনাশ করতে পারে। চোখের জ্বালা ভাব, ক্লান্তি দূর করতে খুবই উপযোগী এই দু’টি উপাদান।
দীর্ঘ সময় কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে ক্লান্তি ভাব আসে। চোখের মণিতে অস্বস্তি হয়। চোখ শুকিয়েও যায় অনেক সময়ে। একে বলে ‘ড্রাই আই’। এর থেকে মাথাব্যথা, চোখ দিয়ে জল পড়া, চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠার সমস্যা দেখা দেয়। এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘আই স্ট্রেন’ বা ‘অ্যাস্থেনোপিয়া’। তা ছাড়া যাঁদের ঘুম কম হয় বা যাঁরা বিছানায় শুয়ে অন্ধকারে দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইলে চোখ রাখেন, তাঁদের চোখ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন চোখের চারপাশ জুড়ে বলিরেখা দেখা দেয়, চোখের নীচে পুরু কালির ছোপ পড়ে। চোখে ধুলোবালি ঢুকলেও তার থেকে শুষ্ক চোখের সমস্যা হয়। তখন কেবল চোখের ড্রপ দিয়ে আরাম পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে গোলাপজল দিয়ে চোখ ধুলে, জ্বালাযন্ত্রণা কমবে বলেই জানাচ্ছেন গবেষকেরা।
আরও পড়ুন:
কনজাঙ্কটিভাইটিসের সমস্যা হলে চোখের অস্বস্তি বাড়ে। চোখ ফুলে উঠে জল পড়তে থাকে। সেই সময়েও গোলাপজল কাজে আসতে পারে। এর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ চোখের সংক্রমণ দূর করতে পারে।
‘ফার্মাকোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী, ছানি পড়ার ঝুঁকিও কমাতে পারে গোলাপজল। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট চোখের প্রদাহ কমায়, রেটিনার স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
তবে গোলাপজল চোখে দেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে। যদি অ্যালার্জির ধাত বেশি হয়, তা হলে আগে এক চোখে সামান্য গোলাপ জল দিয়ে দেখে নিতে হবে, কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। যদি চোখ জ্বালা করতে শুরু করে, তা হলে ব্যবহার না করাই ভাল। যাঁদের ছানি কাটানো হয়েছে, চোখে লেন্স বসেছে, তাঁরা চোখে কিছু ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।