রোমহীন, মসৃণ ত্বক পেতে প্রতি মাসে (কারও বা প্রতি সপ্তাহে) ঝক্কি পোহাতে হয়। কখনও বা পার্লারে গিয়ে ওয়্যাক্সিং, কখনও বা রেজ়ার দিয়ে নিজেই শেভিং, যে মাসে যেটি সুবিধা। নারীদের একাংশের কাছে হাত-পায়ের রোম তুলে ফেলা রূপচর্চারই অন্যতম অংশ। তবে সেই ত্বকের যত্নে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন, শেভিং ভাল না ওয়্যাক্সিং? ত্বকের জন্য কোনটি ভাল, কোনটিতে বেশি সুবিধা, সব মিলিয়ে কোনটি বেছে নেওয়া উচিত? পুজোর আগে শরীরে রোম তুলে ফেলতে কোন পদ্ধতি সেরা? দু’টি পদ্ধতি তুলনা করে নিলেই এই উত্তর মিলবে।
শেভিং
রেজ়ারের সাহায্যে ত্বকের উপরিভাগ থেকে রোম ছেঁটে ফেলাই হল শেভিং। সাধারণত হাত, পা, বাহুমূলের মতো শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত হয় রেজ়ার। নিজে নিজেই সহজে করে নেওয়া যায়।
শেভিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা। ছবি: সংগৃহীত।
সুবিধা: শেভিংয়ের উপাদান অর্থাৎ রেজ়ার সহজলভ্য। শেভিং করতে শুধুমাত্র একটি ভাল রেজ়ার, কিছুটা শেভিং ক্রিম বা জল হলেই চলে। বাড়িতে বসেই করা যায় মাত্র কয়েক মিনিটে। একটি ভাল মানের রেজ়ার কিনতে হলে ৫০০ টাকা খরচ করলেই হয়ে যায়। উপরন্তু একই রেজ়ার কয়েক বার ব্যবহার করা যায়।
অসুবিধা: রেজ়ার দিয়ে রোম চেঁছে তুললে অনেক সময়ে ত্বকে র্যাশ, আঘাত, ইনগ্রোন হেয়ার বা রেজ়ার বার্ন দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া শেভ করার ৪‑৭ দিনের মধ্যেই রোম আবার গজিয়ে ওঠে, ফলে ঘন ঘন শেভ করতে হয়। অনেক সময় মনে হয় রোমগুলি যেন আগের চেয়ে মোটা ও ঘন হয়ে উঠছে।
ওয়াক্সিং
ওয়াক্সিংয়ের মাধ্যমে রোমকে গোড়া থেকে তুলে ফেলা হয়, যা তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ত্বককে মসৃণ রাখে। নিজে বাড়িতে অথবা পার্লারে গিয়ে করতে হয়। গলা মোম লাগিয়ে স্ট্রিপ (বিশেষ কাপড়ের টুকরো) দিয়ে টেনে তোলা হয় রোম।
ওয়াক্সিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধা। ছবি: সংগৃহীত।
সুবিধা: ওয়াক্সিংয়ের পর সাধারণত ২‑৪ সপ্তাহের আগে রোম গজায় না। ওয়াক্সিং করার সময় ত্বকের মৃত কোষও উঠে যায়, ফলে ত্বক কোমল হয়। উজ্জ্বল দেখায়। নিয়মিত ওয়াক্সিং করলে রোমের গঠন বদলে যায়। ঘনত্ব কমে, রোম নরম হয়। ইনগ্রোন হেয়ারের সম্ভাবনাও কমে যায়।
অসুবিধা: রোম গোড়া থেকে টেনে তোলার কারণে হালকা থেকে মাঝারি মাত্রায় ব্যথা হতে পারে, বিশেষ করে সংবেদনশীল জায়গাগুলোয় (বাহুমূল বা মুখ) বেশি ব্যথা হয়। অথবা প্রথম বার করলেও যন্ত্রণা বেশি হতে পারে। ধীরে ধীরে সহনশীলতা বাড়ে। তবে সালোঁয় ওয়্যাক্সিং করলে খরচ অনেকখানি বেশি। আবার যদি বাড়িতে নিজে করেন, তাতে সময় লাগে বেশি। পুরো শরীর ওয়্যাক্স করতে ১‑২ ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ওয়াক্সিংয়ের পর ত্বকে সাময়িকভাবে লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। তবে অ্যালোভেরা জেল বা ঠান্ডা জল প্রয়োগে তা দ্রুত সেরে যায়।
আরও পড়ুন:
নিজের জন্য কোনটি বেছে নেবেন?
শেভিং এবং ওয়াক্সিং, দু’টিরই নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। যদি আপনি সময় বাঁচাতে চান, অল্প খরচে নিয়মিত রোম ছেঁটে ফেলতে চান, তবে শেভিং উপযুক্ত। কিন্তু যদি আপনি দীর্ঘস্থায়ী কোমল ত্বক এবং পাতলা রোম চান, তবে ওয়্যাক্সিংই ভাল। আপনার ত্বকের ধরন, হাতের সময় এবং ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বিচার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।