এ বছরের মতো শীতের দিন ফুরিয়েছে। প্রকৃতিও জানান দিচ্ছে, এসে গিয়েছে বসন্ত। এ এমন এক মরসুম, যখন ঠান্ডা এবং গরম কোনওটিরই দাপট থাকে না। ফলে শীতের দিনের মতো ত্বক অতটাও রুক্ষ হয়ে পড়ে না।
এমন মরসুমে কি ত্বকের যত্নে শীতের জন্য কেনা ক্রিম, সিরাম বা ফেসওয়াশই মাখা যায়? রূপচর্চা শিল্পীরা বলছেন, মরসুম বদলের সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু প্রসাধনী বদলে ফেলাও জরুরি। পরিবেশের তাপমাত্রা, আর্দ্রতার প্রভাব পড়ে ত্বকেও। ঠিক সে কারণেই বদলে ফেলার দরকার হয় কিছু জিনিসও।
বসন্তে কী ভাবে করবেন রূপচর্চা?
১. বসন্তের মরসুমে ত্বক কিন্তু শীতের মতো রুক্ষ থাকে না। বরং রোদে বেরোলে ঘাম হয়ে মুখ খানিক তেলতেলে হয়ে যায়। এমন সময়ে যেমন কম্বল গায়ে দিলে গরম লাগে, ঠিক তেমনই মুখে শীতের ক্রিম মাখলে ত্বক তা সহ্য করতে পারে না। এমন মরসুমে ক্রিমের বদলে বেছে নিতে পারেন হালকা ধরনের ময়েশ্চারাইজ়ার। তৈলাক্ত ত্বক হলে বা ঘাম বেশি হলে জেল বেসড ময়েশ্চারাইজ়ার ভাল হবে।
২. শীতের মরসুমে বাতাসে স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমে যাওয়ায়, ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। ফলে শীতের জন্য দরকার হয় ময়েশ্চারাইজ়ার সমৃদ্ধ ফেসওয়াশ। তবে বসন্তে একই ফেসওয়াশ ব্যবহার করলে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে পড়তে পারে। যাঁদের ত্বকের ধরন শুষ্ক, তাঁরা একই ফেসওয়াশ ব্যবহার করলেও, তৈলাক্ত ত্বক হলে বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড যুক্ত বা স্যালিসিলিক অ্যাসিড রয়েছে, এমন ফেসওয়াশ বেছে নিতে পারেন। এই ধরনের ফেসওয়াশ ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করতে, ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। রোদের কারণে ত্বকে কালচে ছোপ দেখা দিলে বেছে নিতে পারেন গ্লাইকোলিক, ল্যাক্টিক অ্যাসিডযুক্ত ফেসওয়াশ বা স্ক্রাবার।
৩. বসন্তের পর থেকে বাতাসেও আর্দ্রতার পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। তবে তার অর্থ এই নয় যে, ত্বকের বাড়তি আর্দ্রতার প্রয়োজন হবে না। তা ছাড়া অনেকেই দিনভর অফিসে এসিতে থাকেন। এতেও ত্বক রুক্ষ হয়ে পড়ে। ত্বকের লাবণ্য বজায় রাখার জন্য সঠিক আর্দ্রতার প্রয়োজন। ফলে ময়েশ্চারাইজ়ার, এবং সিরামের ব্যবহার প্রয়োজন বছরভর। তবে শীত এবং বসন্তের প্রসাধনীর উপকরণে বদল প্রয়োজন পড়তে পারে। তুলনামূলক হালকা কোনও কিছু বেছে নিতে পারেন এই সময়।
৪. বসন্তে ফোটা ফুলের রেণু থেকে কারও কারও অ্যালার্জি হয়। অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থাকলে বা ত্বকের ধরন স্পর্শকাতর হলে, কড়া রাসায়নিকযুক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলা ভাল। অ্যালো ভেরা সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজ়ার, লোশন বসন্তের পাশাপাশি বছরভরই ব্যবহার করা চলে। এটি প্রদাহ, চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। তবে ত্বকের কোনও সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৫. গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা কিংবা বসন্ত— বছরভরই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে বলেন ত্বকের চিকিৎসকেরা। তবে শীতকালে ময়েশ্চারাইজ়ার বেসড জিনিস ব্যবহার করলেও অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা হলে জেল বেসড সানস্ক্রিন বেছে নিতে পারেন। বসন্ত পেরিয়ে গরমের মরসুমের জন্য আবার সানস্ক্রিন পাউডার ভাল হয়।