চুল নিয়ে হাজারো সমস্যা থাকে যে কোনও বয়সেই। তবে বয়স্কদের সমস্যা কিছুটা আলাদা। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যেমন কোলাজেনের অভাবে ত্বক কিছুটা কুঁচকে যায়, বলিরেখা পড়ে, তেমনই চুলও রুক্ষ হয়। চুলের সমস্যা নিয়ে কাজ করেন যাঁরা, তাঁরাই বলছেন, চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য স্বাভাবিক ভাবে যে তেল নিঃসরণ হয়, বয়স হলে তার পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে চুল রুক্ষ হয়ে পড়ে। তা ছাড়া উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়া, সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মি, দীর্ঘ ক্ষণ বাতানুকূল যন্ত্রচালিত ঘরে থাকার প্রভাব পড়ে চুলে। ফলে, স্বাভাবিক ভাবেই হারাতে শুরু করে জেল্লা।
আর এ জন্যই প্রয়োজন চুলের বিশেষ যত্ন। তবে সে কারণে যে ঘন ঘন সালোঁয় ছুটতেই হবে, তা নয়। বরং এ বিষয়ে কেশ নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁদের কারও কারও মত, মাত্র ২০ মিনিটের স্পা-তেই হবে কাজ। সালোঁতে গিয়ে মাসে এক বার স্পা করানোর চেয়ে ভাল, ঘরেই সপ্তাহে ২০ মিনিট বরাদ্দ করা। পন্থা খুব সহজ। স্পা-এর আবহ তৈরি করতে হবে ঘরেই।
আরও পড়ুন:
স্নানঘর হোক বা ঘর, সুগন্ধী মোমবাতির মৃদু সৌরভ, নরম আলো আর সুরেলা আবহ মুহূর্তে বদলে দিতে পারে পরিবেশ। আর দরকার হবে আরামদায়ক ভাবে বসা যায় এবং ঘাড় রাখা যায় এমন চেয়ার। পরিষ্কার তোয়ালে।
পদ্ধতি খুব সাধারণ। প্রথমে ড্রাই শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিতে হবে। হাতের কাছে তা না থাকলে আগের রাতেই শ্যাম্পু করে চুল শুকিয়ে নিতে পারেন।
দ্বিতীয় ধাপে দরকার চুলের উপযোগী তেল। হোহোবা অয়েল বা পছন্দের কোনও তেল আঙুলের সাহায্যে মাথার ত্বকে লাগিয়ে নিন। আলতো হাতে মাসাজ় করুন। তেল যেন চুলের গোড়া থেকে আগা, সর্বত্রই লাগে।
গরমের দিনে চুলের যত্নে ইয়োগার্ট এবং মধু দিয়ে বানিয়ে ফেলুন মাস্ক। বয়স হলে দুর্বল হয়ে চুল ঝরতে থাকে। চুলের ডগা ফেটে যায়। এই সব সমস্যার সমাধান হতে পারে ঘরোয়া মাস্কে। ইয়োগার্টের ল্যাক্টিক অ্যাসিড মাথার ত্বকের মৃত কোষ সরাতে, অর্থাৎ এক্সফোলিয়েশনে সাহায্য করে। অন্য দিকে, মধু চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখে।
মাস্ক ব্যবহারই যথেষ্ট নয়। সেটি হালকা মাসাজ করে মাথায় বসিয়ে দেওয়া জরুরি। তার পর দরকার গরম ভাপ। গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে সেটি নিংড়ে মাথায় জড়িয়ে নিতে হবে। এতে চুলের কিউটিকলের মুখ উন্মুক্ত হয়। মাস্কের উপাদানগুলি ত্বকের গভীরে যেতে পারে। ১০ মিনিট এ ভাবে রাখার পর ঠান্ডা জলে মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
বাজারচলতি পণ্য ব্যবহার করলে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত শ্যাম্পু মাখতে পারেন। কারণ, এই উপাদানটি চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
সপ্তাহে এক বার মিনিট ২০ এ ভাবে চুলের যত্ন নিলে ফল মিলবে হাতেনাতে। কয়েক মাসেই চোখে পড়বে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল।