সমান্থা রুথ প্রভুর নতুন জীবন শুরুর আনন্দ তো রয়েছেই। তার পাশাপাশি, ভক্তেরা আরও খুশি নায়িকার বিয়ের আংটি নিয়ে। দেড় কোটি টাকার ওই আংটি শৈল্পিক দিক থেকে যে খানিক উঁচুদরের কাজ, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। কিন্তু সমান্থার ভক্তদের হাবেভাবে স্পষ্ট, ওই আংটি নায়িকার ভেঙে যাওয়া পুরনো সম্পর্ক আর তাঁর উপর হওয়া যাবতীয় অন্যায়েরও মুখের মতো জবাব! আংটির বিরল নকশা এবং মূল্য— উভয়ই নায়িকার ভাল থাকার প্রমাণ, যা সমান্থার প্রাপ্য ছিল বলে মনে করেন তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা। কিন্তু ওই বিরল নকশার আংটি বানিয়েছেন কে? জানা গিয়েছে, তিনি এক অতি মুখচোরা অলঙ্কার শিল্পী। যিনি নিজের মুখে নিজের কাজের কথা বলা পছন্দ করেন না।
শিল্পীর নাম থিয়োডোরোস স্যাভোপোলোস। গ্রিসের এথেন্সের মানুষ। তবে তাঁকে তাঁর নামের চেয়ে কাজেি বেশি চেনে অলঙ্কারের ফ্যাশন জগৎ। সেখানে তাঁর কাজ শুধু জনপ্রিয়ই নয়, সে কাজের আলাদা কদর আছে। ফ্যাশন দুনিয়ার বাকিদের মতো থিয়োডোরোস তাঁর শিল্প জাহির করেন না। সমাজমাধ্যমে ছবিও দেন না। থিয়োডোরোসের কাজ দেখা যায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রদর্শনীতে। কারণ, সেই সব কাজ সংগ্রহে রেখে প্রদর্শন করার মতোই। তাঁর তৈরি গয়নার নকশার নৈপুণ্যের কথা জানা গিয়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তরফ থেকেই।
সমান্থার বিয়ের এই ছবি থেকেই তাঁর আংটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
থিয়োডোরোসের নকশাকে ‘একমেবাদ্বিতীয়ম’ বলে প্রশংসা করেছেন লন্ডনের অলঙ্কারের ব্র্যান্ড মুসাইফ জুয়েলারের সিইও ডেভিড ওয়ারেন। গ্রিসের একটি নামী জুয়েলারি ব্র্যান্ড ‘এটুজ়েড’ আবার তাদের সমাজমাধ্যমে থিয়োডোরোসের কাজের বর্ণনা দিয়ে বলেছে, ‘‘থিয়োডোরোস মানুষটি বড্ড প্রচারবিমুখ। নিজেকে সব সময় আড়াল করে রাখেন। তবে অলঙ্কার বানানোর কাজটা সমস্ত আবেগ দিয়ে করেন। বছরে অল্প কয়েকটি অলঙ্কার তৈরি করেন। কিন্তু যেগুলো বানান, তার জবাব নেই। দুনিয়ায় খুঁজলেও অমন দু’টি পাওয়া যাবে না। ফলে ওঁর বানানো গহনা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অলঙ্কার সংগ্রাহকদের কাছে চলে যায়। সবাই তা পরতে পারেন না।’’ এখন অবশ্য সেই বিরল নকশার একটির অধিকারী অভিনেত্রী সমান্থা।
শিল্পী থিওডোরোস স্যাভোপোলোসের নকশা করা কিছু আংটি।
কেন বিরল? তার কারণ, আংটিতে খাকা হিরেগুলি প্রত্যেকটিই বিরল বৈশিষ্ট্যের। মাঝের হিরেটি লজেঞ্জ কাট হিরে। রম্বস আকৃতির ওই হিরের মাঝের অংশটি স্বচ্ছ। তবে চারপাশে ঝলমলে সূক্ষ্ম নকশার কাট। ওই হিরেটিকে ঘিরে রেখে আটটি পোর্ট্রেট কাট হিরের পাপড়ি। যার প্রত্যেকটিই অত্যন্ত পাতলা আর স্বচ্ছ। তবে নরম হিরের দ্যুতি ঠিকরে পড়ে আলো ছুঁলেই।
সমান্থা এবং রাজকে শুভেচ্ছে জানিয়ে থিওডোরোসের পোস্ট।
দেশের তারকা অলঙ্কার শিল্পী প্রিয়াংশী গোয়েল এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ওই আংটির দাম কোনও মতেই দেড় কোটি টাকার কম হবে না। তবে সমান্থার ভক্তদের কাছে তা অমূল্য। সমান্থাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ‘মুখচোরা’ অলঙ্কার শিল্পী থিয়োডোরোস যে পোস্ট করেছেন, তাতে তিনি লিখছেন, "সমন্থা এবং রাজ (নিদিমোরু)-এর নতুন জীবনের শুরুটা হিরে দিয়ে উদ্যাপন করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। এই হিরে ওঁদের সম্পর্কের মতোই স্বচ্ছ আর এর দ্যুতি ওঁদের দাম্পত্যকেও আলোকিত করবে।"