Advertisement
E-Paper

শীতকালে খান নিয়ম মেনে

বাজার এখন উপচে পড়ছে রংবাহারি টাটকা ফল আর আনাজে। এটাই শীতের অতিপরিচিত ছবি। আনাজের প্রাবল্যে এবং দাম কিছুটা সস্তা হওয়ায় শীতে খাদ্যতালিকাতেও আসে বিপুল বদল। কিন্তু পুষ্টিকর আনাজই খেতে বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। পরামর্শ দিচ্ছেন নিয়ম মেনে খাওয়ারও। লিখছেন অভিজিৎ সাহাবাজার এখন উপচে পড়ছে রংবাহারি টাটকা ফল আর আনাজে। এটাই শীতের অতিপরিচিত ছবি। আনাজের প্রাবল্যে এবং দাম কিছুটা সস্তা হওয়ায় শীতে খাদ্যতালিকাতেও আসে বিপুল বদল। কিন্তু পুষ্টিকর আনাজই খেতে বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। পরামর্শ দিচ্ছেন নিয়ম মেনে খাওয়ারও

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৪
বিপণি: দার্জিলিং বাজারে শীতের অানাজের দোকান। ফাইল ছবি

বিপণি: দার্জিলিং বাজারে শীতের অানাজের দোকান। ফাইল ছবি

আলু কিংবা রসুনের চপ। পেঁয়াজ আর বেসন দিয়ে তৈরি পেঁয়াজিই হোক বা বেগুনি। তেলেভাজার দোকানগুলিতে সারাবছরই মেলে এমনই সুস্বাদু খাবার। তবে, শীতকালে তেলেভাজার দোকানগুলির মেনুতে যোগ হয় বাড়তি কিছু পদ। ধনেপাতা থেকে শুরু ক্যাপসিকামের চপ। ফুলকপির পকোড়াও বিকোচ্ছে উত্তরবঙ্গের অলিগলিতে থাকা তেলেভাজার দোকানে দোকানে।

তেলেভাজার দোকানগুলিতেইই নয় শুধু, গৃহস্থের হেঁসেল থেকে শুরু করে নামী রেঁস্তোরাতেও একই পদ। শীতকালে খাদ্যতালিকায় যোগ হচ্ছে বাড়তি পদ। কারণ, শীতকালে হরেক রকমের আনাজে ছেয়ে যায় বাজার। তাই শীতকালে পকোড়া যেমন পাতে পড়ে, তেমনই রোজই পাতে পড়ে বিভিন্ন ধরনের শাকও। তবে, শীতকালীন আনাজ নির্ভয়ে খেতে বললেও নিয়ম মেনেই খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডায়েটিশিয়ানেরা। তাঁদের বক্তব্য, নিয়ম না মেনে খেলে হতে পারে সমস্যা। আর নিয়ম মেনে চললে সমস্ত আনাজই খেতে পারেন খাদ্যরসিকেরা। মালদহের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান অদ্বিতীয়া দাশগুপ্ত বিশ্বাস বলেন, “আমাদের অনেকের ধারণা, ফুলকপি বা মুলোর মতো আনাজ খেলে গ্যাস হয়। অনেকে বিভিন্ন রোগের ভয়ে বহু আনাজ খান না। আসলে, অনেকে নিয়ম মেনে খান না বলেই সমস্যা হয়। টমেটো, পেঁয়াজকলি, কালো শিমের মতো আনাজ দৈনিক খেলে গ্যাসের সমস্যা, কোলেস্টেরলের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে, খেতে হবে অল্প পরিমাণে।” এ ছাড়া রান্না করার আগে আনাজ ভাল করে ধুয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

শীতকালে ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেঁয়াজকলি, শিম, মুলো, গাজর, বরবটি, বিন, মটরশুঁটি-সহ প্রভূতি আনাজ বাজারে আসে। একই সঙ্গে পালং, ছোলা, মটর, সর্ষে শাকও বাজারে বিক্রি হয়। আর শীতকালে শাক-আনাজের জোগান অত্যন্ত বেশি থাকে। ইংরেজবাজার শহরের গৃহবধূ মীরা সাহা বলেন, ‘‘অন্য মরসুমে ভাতের সঙ্গে ডাল কিংবা মাছের ঝোল করলেই হয়ে যায়। তবে, শীতকালে মেনু বেড়ে যায়। বাড়তি রান্না করতে হয় আমাদের। যেমন, দৈনিক মেনুতে শাক থাকবেই। এ ছাড়া শিম, আলু, পেঁয়াজকলি, পালংশাক, গাজর দিয়ে মেশানো তরকারি করতে হয়। তাই শীতকালে হেঁসেলে অন্যান্য মরসুমের তুলনায় বেশি সময় থাকতে হয়।’’ শীতকালে হরেক রকমের আনাজ থাকায় তৃপ্তি করে খাওয়াদাওয়া করা যায় বলে জানিয়েছেন দুলাল সরকার। তিনি বলেন, “শ’খানেক টাকা খরচ করলেই শীতে বাজারের থলি ভরে যায়। আর বাড়িতেও একাধিক পদ দিয়ে খাওয়ার সুযোগ মেলে। তবে, এখনকার আনাজ গুলিতে দ্রুত ফলনের জন্য মেশানো হচ্ছে বাড়তি রাসায়নিক। সেই রাসায়নিকগুলি মেশানোর ফলে যত সমস্যা তৈরি হচ্ছে।” একই সঙ্গে আনাজে রং মেশানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

রাসায়নিক মেশানো খাওয়ার বেশি পরিমাণে খেলে পেটের সমস্যা থেকে একাধিক রোগ হতে পারে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, “রাসায়নিক মিশ্রিত আনাজপাতি খেলে পেটের সমস্যা হয়, বুক জ্বালা করে ঘুমও কম হবে। হতে পারে আরও অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যাও। তাই রাসায়নিক সার যুক্ত আনাজ বর্জন করাই ভাল।”

চাষবাসে রাসায়ানিক সার যথাসম্ভব প্রয়োগ না করার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন উদ্যান পালন দফতরের সহ-অধিকর্তা রাহুল চক্রবতী। তিনি বলেন, “চাষাবাদে জৈব সার ব্যবহার করার জন্য সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। জমিতে জমিতে গিয়ে কৃষকদের এই মর্মে সচেতনও করা হচ্ছে।”

খাদ্যরসিকেরা শীতে মজে থাকেন আনাজেই। তেলেভাজার দোকানে তাই চপ, পেঁয়াজি, বেগুনির চাহিদা এখন তুঙ্গে। মালদহের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সরলা চৌধুরী বলেন, “শীতে ধনেপাতা, ক্যাপসিকাম, ফুলকপির মতো আনাজ সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। আর তা দিয়েই আমরা পকোড়া তৈরি করি। বাজারে যার চাহিদা খুবই বেশি।” রেঁস্তোরাতেও শীতের মরসুমে যুক্ত হয়েছে আনাজ দিয়ে তৈরি চিকেন, মটনের পদ।

তবে, সকলেরই বক্তব্য একটিই— শীতের আনাজ নিয়ম মেনে, নির্দিষ্ট ভাবে রান্না করেই খাওয়া উচিত।

Health Vegetables Winter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy